ঝালকাঠিতে ‘বোমা ফাটিয়ে’ ডাকাতির চেষ্টা, আহত ৩
Published: 9th, March 2025 GMT
ঝালকাঠি শহরে ইফতারির সময় বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় তিনজন আহত হন। রবিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার পর ঝালকাঠি শহরের ডাক্তারপট্টি সড়ক এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, “ইফতারের পরপরই ককটেল জাতীয় বস্তু ফাটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা চালায় কিছু ব্যক্তি। পরে তারা পালিয়ে যায়। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
আহতরা হলেন- ডাক্তারপট্টি এলাকার মাহামুদুল হাসান আদিল (৩৭), প্রণব কুমার নাথ ভানু (৬০), মানিক মালো (৩৫)। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
যশোরের প্রথম নারী এসপি রওনক জাহান
নিখোঁজ যুবকের মরদেহ ৭ দিন পর মিলল পাহাড়ে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাক্তারপট্টি সড়কটি ঝালকাঠি শহরের স্বর্ণকার পট্টি হিসেবে পরিচিত। আজ ইফতারের সময় এই এলাকায় একটি পিকআপ গাড়িতে এসে বোমা ফাটিয়ে দোকান লুটের চেষ্টা চালায় ডাকাতরা। এসময় দোকান মালিকরা চিৎকার দিলে জনতা ডাকাত দলকে ধাওয়া দেয়। ডাকাত দল পিকআপ থেকে বোমা ফাটিয়ে ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে বরিশালের দিকে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী রিপন ভূইয়া বলেন, “আমরা বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেম। এসময় একটি নীল রঙের পিকআপ জনতার ধাওয়া খেয়ে পূর্ব দিকে আসছিল। আমরা পিকআপটি আটকানোর চেষ্টা করি। পিকআপ থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় আমরা সরে আসলে পিকআপটি শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে বরিশালের দিকে চলে যায়।”
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই ডাক্তারপট্টির সব স্বর্ণের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন।
অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বলেন, “পতিত সরকারের মদতে দুর্বৃত্তরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর জন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি।”
ঢাকা/অলোক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ প কআপ
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহ
বিনা নোটিশে ছাঁটাই, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন চার ঘণ্টা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গেলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। শ্রমিক ছাঁটাই ও সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জের আউখাবো এলাকায় রবিনটেক্স পোশাক কারখানার সামনে ঘটনাটি ঘটে। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
আরো পড়ুন:
ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪
ক্যারাম খেলা নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিনটেক্স নামে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানাটি বন্ধ ছিল। বন্ধ দেওয়ার আগে গত ২৮ মার্চ বিনা নোটিশে ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ শতাংশ মালিকপক্ষ প্রদান করেন। শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার কারখানা খোলার দিন শ্রমিকরা মালিকপক্ষকে ছাঁটাইয়ের কারণ, বেতন ও বোনাস দেওয়ার কথা জানান। মালিকপক্ষ টালবাহানা শুরু করেন। আজ সকালে শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলেন। এসময় তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন। পরে শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছের গুঁড়ি ফেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করে।
এসময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদী ও শ্রমিকদের মধ্যে শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা, রুপুসহ শতাধিক আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আন্দোলনরত শ্রমিক জানান, তারা কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিলেন। তাদের ওপর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করে। এতে নারীসহ ৬৫ জন শ্রমিক আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে আজ অসন্তোষ দেখা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলে। শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
ঢাকা/অনিক/মাসুদ