রাঙামাটি জেলার প্রত্যেক উপজেলা থেকে সদস্য না নিয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন দেশের সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক নয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তী পরিষদ পুনর্গঠনের প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না— এই মর্মে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। 

একইসঙ্গে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবি তঞ্চঙ্গ্যাকে তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। আজ রবিবার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

অ্যাডভোকেট রাজীব চাকমা, জসিম উদ্দিন, পুলিন বিহারী চাকমা ও উথান মারমা হাইকোর্টে একটি রিট করলে রবিবার হাইকোর্ট থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়। রিটকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মো.

সুলতাল উদ্দিন, নিবোলাস চাকমা, রতন কুমার।

রিটকারীদের আইনজীবী সুলতান উদ্দীন জানিয়েছেন, আদালত রিট আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি উপজেলা থেকে সদস্য নিয়োগ না করে জেলা পরিষদ পুনর্গঠন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় তা জানতে এবং প্রজ্ঞাপনটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। পরিষদের দুই সদস্য রাঙাবি তঞ্চঙ্গ্যা ও প্রণতি রঞ্জন খীসাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। 

কেন দুই সদস্যকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে এই আইনজীবী জানান, তাদের মধ্যে রাঙাবি তঞ্চঙ্গ্যা বৈবাহিকসূত্রে নিজের পরিচয় পরিবর্তন করায় নিজ জনগোষ্ঠীর কোটায় বিবেচিত হতে পারেন না এবং প্রণতি রঞ্জন খীসার বিরদ্ধে হত্যা মামলা আছে, যা থেকে তিনি দায়মুক্ত নন।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার জানিয়েছেন, আদালতের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিস্তারিত এখনো জানেন না। কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর সবার সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। 

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত হয় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। কিন্তু জেলার ১০ উপজেলা থেকে প্রতিনিধি না নেওয়া, এক সম্প্রদায় থেকে নিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের পরিচয় দেওয়া, হত্যা মামলার আসামিকে সদস্য করা এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে নিয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠিত হওয়ায় অভিযোগ উঠলে ব্যাপকভাবে সমালোচনা শুরু হয়। এরই প্রতিবাদে রাঙামাটির জুরাছড়ি, বরকল, কাউখালী ও রাজস্থলী উপজেলার জনসাধারণ মিছিল, মিটিং, স্মারকলিপি পেশ করে। পরবর্তীতে বঞ্ছিত চার উপজেলাবাসির পক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করেন রাজীব চাকমা, জসিম উদ্দিন, পুলিন বিহারী চাকমা ও উথান মারমা।
 
১৯৮৯ সালের ২৫ জুন অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি পৃথক স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠিত হয়, যা ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর পার্বত্য জেলা পরিষদ নামে তিন জেলাতে পুনর্গঠিত হয়। কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে বিরোধের জেরে শুরুর প্রথমবারের পর আজ অবধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারেনি পরিষদগুলোর। ফলে রাজনৈতিক সরকার প্রথমে চারজন সদস্য ও একজন চেয়ারম্যানের অন্তর্বর্তী পরিষদ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চালাত। আওয়ামী লীগের আমলে দুইবার ১৪ জন সদস্য ও একজন চেয়ারম্যান নিয়ে একইভাবে পুনর্গঠিত হতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারও একইভাবে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করে ১৫ সদস্যের পৃথক তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ।
 

ঢাকা/শংকর/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র প উপজ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী’ আখ্যা দিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান ও এক সদস্যের অপসারণ চাইল ছাত্রদল

এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী ও সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক রিয়াদ চৌধুরীকে অপসারণের দাবি তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তারা অভিযোগ করেছে, এই দুজন ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী’ এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও সদ্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

ছাত্রদল বলেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্তাব্যক্তিরা এখনো ফ্যাসিবাদকে লালন করছেন।

আজ রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘এনসিটিবি থেকে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করতে না পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো সম্ভব হবে না।’

ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী সব জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব মনে-প্রাণে ধারণ করলেও এনসিটিবি তা ধারণ করছে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জুলাই–আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে পাঠদানের জন্য বস্তুনিষ্ঠ পাঠ্যক্রম তৈরি করতে তাদের উদাসীনতা লক্ষণীয়। পাঠ্যক্রমে বীর শহীদদের আত্মত্যাগের বিষয়গুলো উল্লেখ করতে এনসিটিবির অনীহা দৃশ্যমান। ছাত্রদল মনে করে, ‘এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী ও সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) রিয়াদ চৌধুরী ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী, দীপু মনি ও নওফেলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে এনসিটিবিতে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা তৎপর। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই দুজন কর্মকর্তাকে অবিলম্বে এনসিটিবি থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এনসিটিবি থেকে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করতে না পারলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো সম্ভব হবে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • নতুন পোপ নির্বাচনের সমাবেশ শুরু ৭ মে
  • আগামী নির্বাচনে ইসি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চায়: সিইসি
  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • ‘বেগম’ রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ধারণ করেছে
  • পরবর্তী পোপ নির্বাচন কীভাবে
  • সিলেটে ১৭ পাথর কোয়ারির ইজারা প্রদান স্থগিত করল সরকার
  • মাগুরায় সেই শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ
  • ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী’ আখ্যা দিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান ও এক সদস্যের অপসারণ চাইল ছাত্রদল