গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী ১১নং ওয়ার্ড জায়েরটেক এলাকায় কালভার্টের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছের খামার করতেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন। ওই কালভার্ট উন্মুক্ত করে পানি চলাচল ও পুনরায় কৃষিকাজ করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। 

রবিবার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই কালভার্টের ওপর দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। তারা দ্রুত চাষাবাদে ফিরতে চায় বলে জানান। 

এলাকাবাসী বলেন, বিলের মতো এই এলাকায় এক সময় ধান চাষ করতেন। বর্ষায় পলিমাটি জমা হওয়ায় ধানে প্রচুর ফলন হতো। পরে জমির মালিকদের ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে মাছের খামার করার পরিকল্পনা করে এলাকার কয়েকজন। তারা তুরাগ নদ হতে পানি প্রবাহিত হওয়া কালভার্টটির মুখে বাঁধ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছের চাষ শুরু করে। জমির মালিকদের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা আর দেয়নি। বর্তমানে মামুন খান নামে এক ব্যবসায়ী মাছের খামার করতে বাঁধা দিতে গেলে তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

জয়েরটেক এলাকার তাহাজ উদ্দিন বলেন, আমরা বিলের জমিতে উন্মুক্ত পানি চলাচল চাই। আমাগো খামার ভাড়া চাই না। খামার করা লাগবে না, আমরা ক্ষেতখোলা করতে চাই। আমরা ফসল ফলাতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মালেক, শিরা, মোজাম্মেলসহ কয়েকজন অত্যাচার ও জুলুম করতো। একপ্রকার জোরপূর্বক আমাদের জমিতে খামার করে মাছ চাষ করতো।  

প্রতাবপুর এলাকার হাসেম উদ্দিন বলেন, ভাড়াও দেয় না, এক বছরের কথা বলে কয়েকবছর ভোগ করছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন। আমার ৩৫ শতাংশ জমি দলিল নিয়ে ঘুরছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। আমার মতো ২৫-৩০ জনের জমি দখল করে ভাড়া না দিয়েই মাছ চাষ করছে।

জয়েরটেক এলাকার ইজ্জত মিয়া বলেন, এখানে আমি ধান চাষ করতাম। প্রায় দুইশ মণ ধান পাইতাম। কিছু লোক প্রলোভন দেখিয়ে এবং কালভার্ট বন্ধ করে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এই কালভার্ট বন্ধ করে চাষাবাদ বাধাগ্রস্ত করে। আমরা এলাকাবাসী চাই এই কালভার্ট উন্মুক্ত করা হোক। এতে পানি চলাচল স্বাভাবিক হবে এবং আমরা পুরোদমে ফসল উৎপাদন করতে পারবো।

ঢাকা/রেজাউল/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক ব স খ ম র কর এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট

সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।

রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক। 

জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন। 

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ