শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সিলেট শাখা, দরগাহ গেট শাখা এবং সুবিদবাজার শাখার যৌথ উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীর সুবিদ বাজারে একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত এই মাহফিলে ব্যাংকের সম্মানিত গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী এবং বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। 

ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ ইউ.

আহমেদ।

তিনি তার বক্তব্যে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের সেবা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মোহাম্মদ মাসুদ, নাজমুল ইসলাম নুরু, তাজ ট্টি এন্ড ট্রেডিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসলেহ উদ্দিন খান এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আকিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। 

মাহফিলের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিলেট বেতারের নিয়মিত আলোচক ক্বারি মোহাম্মদ ইসহাক।পবিত্র রমজানের তাৎপর্য ও ইসলামের মূল্যবোধ নিয়ে বিশেষ আলোচনা করেন ব্যাংকের মুরাকিব এবং শরীয়াহ্ ইন্সপেকশন ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান মাওলানা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

বিভিন্ন শাখার গ্রাহকদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন শিপার এয়ার সার্ভিস এর স্বত্বাধিকারী খন্দকার শিপার আহমেদ, ওয়েস্টার পোল্ট্রি এন্ড ফিশারিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসাইন, বারাকা পাওয়ার গ্রুপের পরিচালক মিজানুর রহমান, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহসান চৌধুরী প্রমুখ।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট লেখক ও ব্যাংকার জাবেদ আহমেদ, ব্যবসায়ী হিসকিল গুলজার। মাহ্ফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেটের জোনাল হেড ও সিলেট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ তোফায়েল ইয়াকুব এবং সমাপনী বক্তব্য দেন ব্যাংকের দরগাহ গেট শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সিলেট শাখার কর্মকর্তা মো. শাহাদত বখত ও দরগাহ গেট শাখার কর্মকর্তা মো. সুহেল আহমেদ।

ইফতারের আগে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে বিশেষ দোয়া করা হয়।

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ ম হ ম মদ ল ইসল ম অন ষ ঠ আহম দ ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

ছড়া লেখায় কড়া শাস্তি

ছড়া লিখে কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন ঢাকা ওয়াসার কমন সার্ভিস বিভাগের উপসচিব শহিদুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে এবং উপব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার (প্রশাসন) দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম নিজের লেখা একটি ছড়া তাঁর ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। ছড়ার বিষয় ছিল রাজধানীর আলোচিত সেই ঈদ শোভাযাত্রার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, যিনি গাধার পিঠে উল্টো দিকে ফিরে বসেছিলেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই শোভাযাত্রা আয়োজন করে। হোজ্জারূপী ওই চরিত্রটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা হয়।

শহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘লেখালেখি পুরোনো অভ্যাস। এর দু-একটি ফেসবুকে শেয়ারও করি। ঈদের পর একটি ছড়া লিখে ফেসবুকে দিয়েছিলাম। হঠাৎ মঙ্গলবার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমাকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। সেখানে গেলে জিজ্ঞেস করেন, ছড়াটি আমার লেখা কিনা? হ্যাঁ-সূচক জবাব দিলে, কেন লিখেছি জানতে চান তিনি। আমি স্যারকে বলি, অভ্যাস থেকে মাঝেমধ্যে একটু-আধটু লেখালেখি করি। ছড়াটি বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে লিখিনি।’

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এর পর এমডি স্যার বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে কী লেখা যাবে, আর যাবে না– তা উল্লেখ রয়েছে। আমি বলি, স্যার, আমি তো কাউকে উদ্দেশ করে লিখিনি। ছড়াতে অপরাধ কী হয়েছে, তাও বুঝতে পারছি না।’

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে অফিস ছাড়ার সময় একটি অফিস আদেশ আমাকে দেওয়া হয়। সেখানে দেখি, আমাকে ওএসডি করা হয়েছে।’

ছড়া লেখায় কর্মকর্তাকে ওএসডি করার খবরে ঢাকা ওয়াসায় নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে তা গণমাধ্যমের নজরে আসে। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি চাকরি করে অনেকেই সাহিত্যচর্চা করছেন। অতীতে অনেক কবি-সাহিত্যিক সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে কবিতা, গল্প ও গান লিখেছেন। কিন্তু শহিদুল ইসলামের নিছক রসাত্মক ছড়াকে পুঁজি করে এমন শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি।

জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবী কী লিখতে পারবেন, কী পারবেন না, সে নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। তাঁর লেখা ছড়ায় সে নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। ওয়াসা সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। দেখা যাক, কমিটি কী প্রতিবেদন দেয়।

ছড়ায় যা আছে
নাসিরুদ্দিন হোজ্জা 
পেয়ো নাকো লজ্জা
ঘোড়ায় চড়িয়া তুমি হাঁটিয়া চলো
রসিকতায় শত কথা সত্যি বলো
গাঁধা নাকি ঘোড়া সে
কি করে কে বলে যে
গাঁধা হাঁটে চার পায়ে টগবগ
তোমার মত নয় সে অযথাই বকবক
কেউ বলে তুর্কি কেউ বলে ইরানী
কখনও কি স্বাদ পেলে সুলতানী বিরানী
ঈদ এলে হেঁটেছ কি মুঘলের ঢাকাতে
কাণ্ড কি ঘটিয়েছ অযথাই হাসাতে
বহুকাল বাদে আজ তুমি দেখা দিলে
ঢাক ঢোলের তালে তালে
গাঁধার পশ্চাতে মুখ করে চলিলে উল্টো 
আজব এক ঈদ গেলো ঘটনাটি ভুল তো?
যাই হোক জানি কম নাসিরুদ্দিন হোজ্জা
এতে তুমি পেয়ো না গো এতটুকু লজ্জা।

শহিদুলের ছড়াটি পড়ার পর কবি মোহন রায়হান সমকালকে বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে লেখালেখি করার জন্য। বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, সমালোচনা সহ্য করতে পারেনি। ছড়াটিতে সরকারের সমালোচনা আছে বলে মনে হয়নি। বরং গাধার পিঠে নাসিরুদ্দিন হোজ্জাকে যে অবয়বে তুলে ধরা হয়েছে, তা জামায়াতের এক নেতার প্রতিকৃতি মনে হতে পারে।’

একসময় আবু করিম নামে এক কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখেছিলেন। পরে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের পিএস হয়েছিলেন। যদিও শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হলে আবু করিমকে চাকরিচ্যুত করেন। 

মোহন রায়হান বলেন, ‘আমি মনে করি না শহিদুলের এ ছড়ার মধ্যে এমন কিছু আছে, যার জন্য তাঁর পেশাগত জীবনে কোনো শাস্তি আরোপ হতে পারে। বরং শাস্তি দিলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ