টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নানিবাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদরাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটলে সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে অভিযুক্তকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। 

অভিযুক্ত ফিরোজ (৪৫) মির্জাপুরের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই শিশু এবং  তার পরিবার ভয়ে মুখ না খুললেও সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হয়। ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ৯২ হাজার টাকা ভুক্তভোগী পরিবার পেয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে  পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। 

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফিরোজ শিশুটির নানিবাড়ির পাশের জমিতে সার দিচ্ছিল। এ সময় শিশুটি বড়ই কুড়াচ্ছিল। তখন অভিযুক্ত ফিরোজ কৌশলে  শিশুটিকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনার কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ শিশুটিকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। ঘটনার পর বাড়ি ফিরে শিশুটি চুপচাপ থাকায় পরিবারের সন্দেহ হয়। কারণ জানতে চাইলে এক পর্যায়ে শিশুটি পরিবারকে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় আব্দুল মালেক, ইউনূস, বাবলু, নূরুল ইসলামসহ কয়েকজন মাতব্বর দ্রুত গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মাতব্বরদের চাপের মুখে সালিশ মেনে নেয় অসহায় পরিবার। তবে জরিমানার পুরো টাকা এখনও তারা পায়নি। এদিকে ঘটনার পর থেকেই ফিরোজ আত্মগোপনে রয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি প্রবাসী। তিনি পোশাক শ্রমিক। শুরুতে ঘটনার কথা কাউকে ভয়ে প্রকাশ করতে পারেননি। লোকলজ্জার কারণে মাতব্বরদের করা বিচার তিনি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ালে তিনি সাহস পেয়ে মামলা করেছেন। এখন তিনি অপরাধীদের উপযুক্ত বিচার চান। 

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফিরোজকে প্রধান করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’

কাওছার//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ মিনারে এপোলো জামালীর মরদেহে শ্রদ্ধা

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণসংগীত শিল্পী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এপোলো জামালীর (আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামালী) প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হয়।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা এপোলো জামালীর মরদেহে সর্বপ্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার প্রতি সম্মান জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ বাসদ-মাহবুব, স্বাধীনতা পার্টি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদসহ রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

এছাড়া গণসংস্কৃতি ফ্রন্ট, সংহতি সংস্কৃতি সংসদ, উদীচী, বিবর্তন, ভাসানী পরিষদ, বিপ্লবী কৃষক সংহতি, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী যুব সংহতি, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, আখচাষি ইউনিয়ন, বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী রিকশা শ্রমিক সংহতি, এসএসপিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠনও শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর, শিল্পাঞ্চল কমিটি, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নাটোর, বরিশাল, দোহারসহ বিভিন্ন জেলা/উপজেলার পক্ষ থেকে এপোলো জামালীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এপোলো জামালীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এপোলো জামালীর অকাল প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো। বহুমাত্রিক সাম্যবাদী চেতনার এই শিল্পী গণমানুষের অধিকার আর মুক্তির ব্রত নিয়েই নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। গণবিপ্লবের মাঝেই এপোলো জামালী বেঁচে থাকবেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রয়াত গুণী শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে এই মহান গণসংগীত শিল্পীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক।

সম্মিলিত কণ্ঠে আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। রায়ের বাজারে এই শিল্পীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রায়ের বাজার কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের পর তার কবরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে আবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • হিযবুত তাহরীরের ৫ জন কারাগারে
  • দুই শ হলো না নাঈমের
  • চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভ্রমণ: নিউ জিল‌্যান্ড ৭,১৫০ কিলোমিটার, ভারত ০
  • শ্রীপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, অভিযুক্ত তরুণ আটক
  • চারুতা সংগীত একাডেমির সুরেলা সন্ধ্যা
  • চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে আরেফিন সিদ্দিককে
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে মারধর, দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
  • শহীদ মিনারে এপোলো জামালীর মরদেহে শ্রদ্ধা