কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিএনপি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৯ টার দিকে উপজেলা শিলাইদহ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন থানা পুলিশ।

আজ রোববার দুপুরে মির্জাপুর বাজারে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমারখালী উপজেলা-শিলাইদহ বাজার সড়ক ঘেঁষে মির্জাপুর বাজারে দোতালা ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় অবস্থিত। কক্ষের দেয়ালে টাঙানো দলীয় ব্যানার ও ছবি। পাকা মেঝেতে পড়ে আছে ভাঙা প্লাস্টিকের চেয়ার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ছেড়া ছবি রাতেই নিয়ে গেছে পুলিশ। এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা।

এ সময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপির কর্মী আবুল কাশেম বলেন, ‘রাতে আমরা তিনজন বসেছিলাম। হঠাৎ আওয়ামী লীগ সমর্থক মামুন, মাসুদ, সুমন, আকুলসহ কয়েকজন দেশিয় অস্ত্রসহ কার্যালয়ে আসে। এসে তারা বলেন, এ এলাকা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। বিএনপির কোনো অফিস এখানে থাকবে না। এসব বলেই ভাঙচুর করে চলে যায় তারা।’

উপজেলা কৃষক দলের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সুমন হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজন বেশকিছু দিন ধরেই কার্যালয় বন্ধের জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। তাদের কথা মতো কার্যালয় বন্ধ না করায় ভাঙচুর করেছেন তারা। রাতেই পুলিশ এসেছিল। আমরা অপরাধীদের শাস্তি চেয়ে রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

তবে এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি মির্জাপুর বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।

আওয়ামী লীগের লোকজনের ভাষ্য, ৫ আগস্টের পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পলাতক রয়েছেন। মামুন, মাসুদ, সুমন, আকুলরাও পলাতক রয়েছেন। সেজন্য তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একজন। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ অফ স আওয় ম ল গ ব এনপ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ঢোকার অনুমতি পায়নি চার ট্রাক তৈরি পোশাক, গন্তব্য ছিল স্পেন

ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করায় পেট্রাপোল কাস্টমস তৈরি পোশাকবোঝাই চারটি ট্রাককে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি (কারপাস) দেয়নি। এতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে গতকাল বুধবার ট্রাকগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯ জুন আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গত মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক তিনটি প্রতিষ্ঠান চারটি ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে বেনাপোল বন্দরে নিয়ে আসে। ট্রানজিট নিয়ে ওই পণ্য কলকাতার দমদম বিমানবন্দর হয়ে স্পেনে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে ট্রাকগুলো প্রবেশের অনুমতি পায়নি। এতে পণ্যগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়েছে।

বেনাপোলে এই পণ্যের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট ছিল পদ্মা ট্রেডিং। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক অনিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এর আগেই ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে চলে আসে। পণ্য ঢুকতে না দেওয়ায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’ তিনি জানান, এই সুবিধা বাতিলের এক দিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত তৈরি পোশাকের রপ্তানি গ্রীষ্মে বাড়ে। এখন রপ্তানির ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে ভারতের এই সিদ্ধান্তে তাঁরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, ‘যে রপ্তানিকারকের পণ্য ফিরে গেছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কিছু জানাননি। তবে আমরা জেনেছি, ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে কারপাস দেওয়া হয়নি। যে কারণে পণ্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

২০২০ সালের ২৯ জুন এক আদেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।

বিবৃতিতে ভারত দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপে ভারতের সীমান্ত দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে না।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, তার বেশির ভাগ যায় ইউরোপের দেশগুলোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। এই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি কম হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ