কুষ্টিয়ার আদালতে হাস্যোজ্জ্বল ইনু, আইনজীবীদের বললেন ‘কোনো চিন্তা কইরেন না’
Published: 9th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়া মডেল থানার পৃথক দুটি হত্যাচেষ্টা মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলা দুটিতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার দুপুরে তাঁকে কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়া কারাগারে আনা হয়। রোববার বেলা ২টা ৩৪ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় তাঁকে আদালত ভবনে নেওয়া হয়। সকাল থেকেই আদালত চত্বরে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে দেখতে দলীয় শতাধিক নেতা–কর্মী ভিড় করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের প্রিজন ভ্যানে কড়া নিরাপত্তায় ইনুকে আদালতে নেওয়া হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে তাঁকে নামানোর পর দোতলায় আদালতের এজলাসে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর হাতে কোনো হাতকড়া ছিল না। তবে শরীরে পুলিশের ভেস্ট পরানো ছিল। এজলাসের কাঠগড়ায় তিনি ৪ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে তাঁর আইনজীবীর সঙ্গেও কয়েকবার কথা বলেন।
ওকালতনামায় স্বাক্ষরের সময় আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আজ রোববার কুষ্টিয়া আদালতে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিপন্থি আইনজীবীর সুদিন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কিশোরগঞ্জের আদালতের চিত্র পাল্টে গেছে। পিপি, জিপিসহ সব আইন কর্মকর্তার পদ এখন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হাত থেকে চলে গেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হাতে। নতুন নতুন মামলাও পাচ্ছেন বিএনপির আইনজীবীরা।
জানা গেছে, দেশে প্রতিবার সরকার পরিবর্তনের পর স্বাভাবিক নিয়মেই সরকারি আইন কর্মকর্তাদেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের ধারণা, বিএনপির আইনজীবীদের এখন ক্ষমতা বেশি। প্রতিটি আদালতে তাদের কিছু বাড়তি প্রভাব রয়েছে। যে কারণে বিএনপির আইনজীবীদের কাছে মামলা যাচ্ছে বেশি। এমনকি কিছু পুরোনো মামলাও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হাত থেকে মক্কেলরা নিয়ে গিয়ে বিএনপির আইনজীবীদের দিচ্ছেন। এমনকি বৈষম্যবিরোধী মিছিলে হামলা মামলায় আসামি হওয়া আওয়ামী পরিবারের ব্যক্তিরাও এখন সহজে জামিনের আশায় যাচ্ছেন বিএনপির আইনজীবীদের কাছে।
আওয়ামী ও বিএনপি বলয়ের বাইরে থাকা সাধারণ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আদালতপাড়ায় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের পাশাপাশি সাধারণ আইনজীবীদেরও দুর্দিন যাচ্ছে। তাদের ভাষ্য, ফৌজদারি মামলার মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর মামলা হচ্ছে হত্যা মামলা। হত্যা মামলায় সাধারণত আসামিপক্ষ মোটা টাকার বিনিময়ে সবসময় জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের রাখার চেষ্টা করেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের হাত থেকে বেশ কিছু পুরোনো হত্যা মামলা মক্কেলরা নিয়ে গেছেন। এসব মামলায় এখন শুনানি করছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। অনেক মামলার আসামিরা এখন আওয়ামী বলয়ের আইনজীবীদের কাছে যেতে ভরসা পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক নেতার ভাষ্য, আসামিপক্ষের লোকজনের ধারণা, আওয়ামী আইনজীবীরা এখন একটা বদনামের মধ্যে আছেন। আদালতে জোর গলায় শুনানি করতে পারেন না। অন্যদিকে বিএনপির আইনজীবীরা সাহস নিয়ে শুনানি করতে পারেন বলে তারা মনে করেন। সে কারণেও তারা বিএনপির আইনজীবীদের কাছে আসেন।
এদিকে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জালাল উদ্দিন জানান, সরকারি আইন কর্মকর্তাদের পদগুলো মূলত রাজনৈতিক পদ। ফলে সরকার বদলের পর এসব পদে স্বভাবতই বদল ঘটে থাকে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আসামিদের বিএনপির আইনজীবীরা মামলায় সহায়তা দিচ্ছেন বলে এক ধরনের অভিযোগ উঠেছে। আইন কর্মকর্তারা কখনও আসামিপক্ষে শুনানি করতে পারেন না। তারা সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। কিন্তু বিএনপির যারা আইন কর্মকর্তা হননি, তাদের কেউ কেউ পেশাগত কারণে এসব মামলা পরিচালনা করছেন। এটা আইনের দৃষ্টিতে কোনো অন্যায় নয়। কারণ আইনজীবীরা একটি পেশায় আছেন।