গরিব ও পথচারীদের ইফতার করান ফরিদপুরের বেলায়েত
Published: 9th, March 2025 GMT
নেই কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য; নন কোনো বেসরকারি সংস্থার প্রধান। তবু নিজের উদ্যোগে গরিব মানুষকে রমজানজুড়ে ইফতারি খাওয়ান ফরিদপুরের বেলায়েত হোসেন। প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন বয়সের দুই শতাধিক মানুষ তার মেহমানখানায় ইফতারি খেয়ে থাকেন।
ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন পশ্চিম গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন মোল্লা। মাঝবয়সী এ ব্যক্তি পেশায় ঠিকাদার। রয়েছে ছোটখাটো এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের ব্যবসা। গত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পথচারী ও স্থানীয় গরিব মানুষকে ইফতারি খাওয়ান তিনি।
সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ও তার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী সবাই মিলে করছেন ব্যতিক্রমী এ আয়োজন। ধর্মীয় ও সামাজিক দুটি দিক বিবেচনা করে তাদের এই শুভ উদ্যোগ। স্থানীয় মাদ্রাসার এতিম, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বাসস্ট্যান্ডে আসা পথচারী ও যাত্রীসাধারণ এবং এলাকার নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষ যারা হাত পেতে কিছু চাইতে পারেন না, তাদের জন্যই এ ইফতার।
ইফতার করতে আসা সাধারণ মানুষ ও আয়োজনের সহযোগী যারা তাদের সঙ্গে কথা হয়। বেলায়েত হোসেন মোল্লার বড় ভাই এনায়েত মোল্লা, ভাতিজা ইকবাল হোসেন, ব্যবসায়ী হারেজ মোল্লা, স্বেচ্ছাসেবী সজীব মণ্ডল, আক্কাস শেখ, শান্ত সিকদার ও ইমন শেখ জানান, প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষকে তৃপ্তির সঙ্গে ইফতার করিয়ে আনন্দ পান তারা। এ জন্য দুপুরের পর থেকে তাদের কাজে নেমে পড়তে হয়। পেশাদার বাবুর্চি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হয়, যাতে মান ঠিক থাকে। এর সঙ্গে দেশি ফল ও সরবত দেওয়া হয় ইফতারিতে।
বেলায়েত হোসেন মোল্লা বলেন, প্রতিষ্ঠিতরা যার যার মহল্লায় এ ধরনের উদ্যোগ নিলে অসহায় দরিদ্র মানুষ ইফতারে ভালো কিছু খেতে পারেন। একই সঙ্গে পেতে পারেন মনের অনাবিল আনন্দ ও মানুষের জন্য কিছু করতে পারার তৃপ্তি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ, ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে নালিশি
এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগে বরিশালের গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইউনুছ মিঞা ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি দায়ের করেছেন এক নারী।
গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) বরিশাল সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে নালিশি দায়ের করেন গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আজাদ সরদারের স্ত্রী সুমা বেগম। বিচারক নালিশি অভিযোগটি শুনানি শেষে আদেশের জন্য রেখেছেন।
আদালতে দাখিল করা নথি সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল সুমা বেগমের শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ভাঙচুর করে জমি দখলের চেষ্টা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান সুমা। খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তিনি বিরোধীপক্ষের অবস্থান নেন এবং অভিযোগকারী সুমা বেগমসহ তিন জনকে থানায় নিয়ে যান। পরে সুমা বেগমের পক্ষে কাজ করার জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন থানার ওসি ইউনুছ মিঞা ও এসআই নজরুল ইসলাম। তাদের দাবিকৃত ঘুষের টাকা দিকে অপারগতা প্রকাশ করলে মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে ওসি এবং এসআই রাত ৯টা পর্যন্ত আটককৃতদের বেআইনিভাবে থানা হেফাজতে রাখেন। দীর্ঘ সময় থানা হেফাজতে রাখায় প্রতিপক্ষের লোকজন বাধাহীনভাবে কবরস্থান ভাঙচুর করে জমি দখল করেন। এ ঘটনায় গত ১৩ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন, বরিশাল কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুমা বেগম। সেখান থেকে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী আদালতে নালিশি দায়ের করেছেন।
আরো পড়ুন:
হত্যাচেষ্টা মামলা: আসামি সুবর্ণা-অপুসহ ১৭ অভিনয়শিল্পী
ধামরাইয়ে চালক-হেলপারকে মারধর করে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই
এ বিষয়ে সুমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ওসি মো. ইউনুছ মিঞা ও এসআই নজরুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ কারণে ভুক্তভোগী আদালতে নালিশি দাখিল করেছেন। আদালত নালিশকারীর অভিযোগ শুনেছেন এবং আদেশের জন্য রেখেছেন।’’
তবে, অভিযোগের বিষয়ে নাকচ করেছেন গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইউনুছ মিঞা।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। রাস্তা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় কাউকে থানায় এনে আটক করে রাখা বা টাকা দাবি করা হয়নি।’’
ওসি ইউনুছ মিঞা বলেন, ‘‘ওই নারী সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’
ঢাকা/পলাশ/রাজীব