মুসলিমদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা আঁটছেন ট্রাম্প
Published: 9th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর পদক্ষেপ অগণিত মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় চালানো হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার ও নির্বাসিত করা হয়েছে। আরও বহু মানুষের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে আশ্রয়ের পথ।
ট্রাম্পের কাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। এই লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আইন পরিবর্তন আনতে পারে। সেটি হলো ‘ন্যাশনাল অরিজিন-বেইজড অ্যান্টিডিস্ক্রিমিনেশন ফর নন–ইমিগ্র্যান্টস অ্যাক্ট’। আইনটি পাস করার জন্য গত ৬ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসে উপস্থাপন করেছেন প্রতিনিধি জুডি চু এবং সিনেটর ক্রিস কুনস। এই বিল পাস হলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের ধর্ম, জাতীয়তা বা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষকে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা কমে যাবে এবং তাঁর জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।
আজ এই আইন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে কেন? কারণ, আশঙ্কা বাড়ছে যে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের মুসলিম ও আফ্রিকান নিষেধাজ্ঞা আবার চালু করার পরিকল্পনা করছেন।
৮ বছর আগে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। আদেশটি ছিল এই যে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। আদেশ জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেশজুড়ে বিমানবন্দরগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। প্রধানত মুসলিম দেশগুলোর অসংখ্য যাত্রীকে আটকে রাখা হয়। কর্মকর্তারা বুঝতে পারছিলেন না, কে ঢুকতে পারবেন আর কে পারবেন না।
শত শত পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞার পরিধি আরও বাড়িয়ে তানজানিয়া, সুদান, মিয়ানমার, ইরিত্রিয়া, কিরগিজস্তান ও নাইজেরিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করেন। পরে এই আদেশ ‘আফ্রিকান নিষেধাজ্ঞা’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এর ফলে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ আর মানবিক বিপর্যয় থেকে পালিয়ে আসা মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ হারান।
সিয়াটলে বিক্ষোভ, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ‘শিশু ধর্ষণে’ মীমাংসার সালিস থেকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
কুমিল্লা লালমাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবরেরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সালিস বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে এলে সালিস বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়, পরে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
সালিসে উপস্থিত ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিস বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা রায় করেছিল সালিসের বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে মাতবরের কাছে ২ হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।
স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।