বান্দরবানে পাঁচ বছর আগের ধর্ষণের মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন
Published: 9th, March 2025 GMT
বান্দরবানে পাঁচ বছর আগে এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে আসামিদের। আজ রোববার সকালে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জজ বেগম জেবুন নাহার আয়েশা এ রায় প্রদান করেছেন।
কারাদণ্ড পাওয়া চার আসামি হলেন নুরুল আলমের ছেলে রাশেদুল নবী (৩৭), আবদুস সালামের ছেলে মো.
আদালতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার এক আসামিসহ বাদী ও উভয় পক্ষের আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম জেবুন নাহার আয়েশা বলেছেন, মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতার সাক্ষ্য-প্রমাণে এই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. ইসমাইল জানিয়েছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের একজন কারাগারে রয়েছেন, অন্যরা পলাতক। মামলার বিচার চলাকালে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লিখিত ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার ২১ বছরের ওই তরুণীকে নুরুল আলমের ছেলে রাশেদুল নবী (৩৭) বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলেন। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি বিয়ের কথা বলে রাশেদুল নবী তাঁর তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তরুণীকে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালকের পাহাড়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। পরে সুয়ালকের স্থানীয় লোকজন তরুণীকে উদ্ধার করেন। প্রধান আসামি রাশেদুল নবীসহ পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে
ভাসানচরকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রেসক্লাবের সামনে ‘হাতিয়ার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ’–এর ব্যানারে একটি মানববন্ধন হয়।
আয়োজকদের দাবি, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে ২০১৬-১৭ সালের দিয়ারা জরিপে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতি জাহেদুল আলম বলেন, ২০১৬-১৭ সালেই নবসৃষ্ট ভাসানচর অংশটির (ভাসানচর, শালিকচর, চর বাতায়ন, চর মোহনা, চর কাজলা এবং কেউয়ারচর) দিয়ারা জরিপ শেষ করে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর। এর ফলাফল ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি গেজেটে ভাসানচর অংশের ছয়টি মৌজা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাহেদুল আলম আরও বলেন, ২০১৮ সালে সন্দ্বীপের জনৈক অধিবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পরবর্তী সময়ে সব কার্যক্রম শেষ করে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ভাসানচরকে হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট নোটিশ জারি করা হয়েছে। ভাসানচর অংশের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বর্ণিত ছয়টি মৌজা নিয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের অধীন ভাসানচর থানা গঠিত হয়। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতির দাবি, ‘দীর্ঘদিন পর দূরভিসন্দিমূলকভাবে চলতি বছরের ২৩ মার্চ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস চট্টগ্রাম, নোয়াখালী (হাতিয়া) ও চট্টগ্রাম (সন্দ্বীপ) অংশের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। একই দিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (রাজস্ব শাখা) আন্তজেলা সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গঠিত কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা হয়। এটা সুস্পষ্ট প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করছি।’
জাহেদুল আলম বলেন, ‘জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ের প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ত্রুটিপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট। একটি কুচক্রী মহল ওই অঞ্চলের শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপপ্রয়াসে ভাসানচরকে একটি ইস্যু হিসেবে সামনে এনেছে, যা অনভিপ্রেত। এ বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক কারিমুল হাই নাঈম, হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সাবেক সভাপতি হেদায়েত হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, নোয়াখালী জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি শাহ মিজানুল হক মামুন, অ্যাডভোকেট শাহ মো. মাহফুজুল হক প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।