বান্দরবানে পাঁচ বছর আগে এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে আসামিদের। আজ রোববার সকালে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জজ বেগম জেবুন নাহার আয়েশা এ রায় প্রদান করেছেন।

কারাদণ্ড পাওয়া চার আসামি হলেন নুরুল আলমের ছেলে রাশেদুল নবী (৩৭), আবদুস সালামের ছেলে মো.

কায়সার উদ্দিন (২৭), হাসান আলীর ছেলে মো. ওমর ফারুক (২০) ও আহমদ সৈয়দের ছেলে মো. হানিফ (২২)। চারজনের মধ্যে কায়সার উদ্দিন কারাগারে রয়েছেন। প্রধান আসামি রাশেদুল নবীসহ তিনজন পলাতক রয়েছেন বলে সরকারি কৌঁসুলি মো. ইসমাইল জানিয়েছেন।

আদালতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার এক আসামিসহ বাদী ও উভয় পক্ষের আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম জেবুন নাহার আয়েশা বলেছেন, মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতার সাক্ষ্য-প্রমাণে এই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. ইসমাইল জানিয়েছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের একজন কারাগারে রয়েছেন, অন্যরা পলাতক। মামলার বিচার চলাকালে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লিখিত ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া  হয়েছে।

মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার ২১ বছরের ওই তরুণীকে নুরুল আলমের ছেলে রাশেদুল নবী (৩৭) বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলেন। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি বিয়ের কথা বলে রাশেদুল নবী তাঁর তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তরুণীকে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালকের পাহাড়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। পরে সুয়ালকের স্থানীয় লোকজন তরুণীকে উদ্ধার করেন। প্রধান আসামি রাশেদুল নবীসহ পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারত ছাড়লেন ২৭২ পাকিস্তানি, আজ শেষ দিনে ছাড়বেন আরও কয়েক শ

গত দুই দিনে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ২৭২ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছেন। পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার সময়সীমার শেষ দিনে আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) আরও কয়েক শ পাকিস্তানি ভারত ছাড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১২ ধরনের স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী পাকিস্তানের নাগরিকদের আজকের মধ্যেই ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

একই সময়ে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বা আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ৬২৯ জন ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তান থেকে নিজ দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তা।

আরও পড়ুনভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারও গোলাগুলি৬ ঘণ্টা আগে

২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারতের অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত। পাকিস্তান সরকার ভারতের এই দাবি অস্বীকার করেছে। এরপর পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নোটিশ জারি করে নয়াদিল্লি, যা ‘লিভ ইন্ডিয়া’ নামে পরিচিত।

লিভ ইন্ডিয়া নোটিশে কয়েকটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে সার্ক ভিসাধারী পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার সময়সীমা ছিল ২৬ এপ্রিল। চিকিৎসা ভিসাধারীদের ভারত ছাড়তে হবে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে।

আজকের মধ্যে ১২ ধরনের ভিসাধারীকে ভারত ছাড়তে হবে। তাঁরা সবাই স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী। এ ধরনগুলো হলো আগমনী ভিসা বা কোনো দেশে আসার পর যে ভিসা দেওয়া হয়, ব্যবসা, চলচ্চিত্র, সাংবাদিক, ট্রানজিট, সম্মেলন, পর্বতারোহণ, শিক্ষার্থী, ভিজিটর, দলবদ্ধ পর্যটক, তীর্থযাত্রী ও দলবদ্ধ তীর্থযাত্রী ভিসা।

দীর্ঘমেয়াদি ভিসা এবং কূটনৈতিক বা সরকারি ভিসাধারীরা ‘লিভ ইন্ডিয়া’ নির্দেশের আওতার বাইরে থাকবেন।

আরও পড়ুনযেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা৯ ঘণ্টা আগে

সরকারি তথ্যমতে, ২৫ এপ্রিল আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ১৯১ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ত্যাগ করেছেন। পরের দিন ২৬ এপ্রিল আরও ৮১ জন পাকিস্তানি একই পথে ভারত ছাড়েন।

ওই দিন পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরেছেন ২৮৭ জন ভারতীয়। পরদিন ফিরেছেন ৩৪২ জন, যার মধ্যে ১৩ জন কূটনীতিক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছু পাকিস্তানি বিমানবন্দর দিয়েও ভারত ছেড়েছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় তৃতীয় দেশের মাধ্যমে তাঁরা গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারত সরকারের তথ্যমতে, স্বল্পমেয়াদি ভিসাধারী পাকিস্তানি সবচেয়ে বেশি ছিলেন মহারাষ্ট্রে। তাঁদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। রাজ্যের মন্ত্রী যোগেশ কাদম বলেছেন, এই এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিককে দ্রুত ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আগমনী ভিসা, ব্যবসা, চলচ্চিত্র, সাংবাদিক, ট্রানজিট, সম্মেলন, পর্বতারোহণ, শিক্ষার্থী, ভিজিটর, দলবদ্ধ পর্যটক, তীর্থযাত্রী এবং দলবদ্ধ তীর্থযাত্রী ভিসাধারী পাকিস্তানের নাগরিকদের আজকের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।

মহারাষ্ট্রে বর্তমানে আরও প্রায় ৫ হাজার ৫০ জন পাকিস্তানি নাগরিক বাস করছেন, যাঁদের অধিকাংশের দীর্ঘমেয়াদি ভিসা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে নাগপুরে ২ হাজার ৪৫০ জন, থানে ১ হাজার ১০০ জন, জলগাঁওয়ে ৩৯০ জন, নবি মুম্বাইয়ে ২৯০ জন, পিম্পরি-চিনচওয়াডে ২৯০ জন, অমরাবতীতে ১২০ জন এবং মুম্বাই শহরে থাকেন ১৫ জন।

এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে আবারও গোলাগুলি হয়েছে। এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় রাতের মতো গোলাগুলি হলো। ভারতীয় সেনাবাহিনী আজ এ কথা জানিয়েছে।

আরও পড়ুনসিন্ধু নদের পানি সরবরাহ আটকে দেওয়ার ভারতের হুমকিতে পাকিস্তানে আতঙ্ক৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী
  • ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার মামলায় শুনানিতে আদালত বিব্রত
  • নাসির-তামিমার মামলায় বিব্রত আদালত, অন্য আদালতে বদলি
  • নাসির-তামিমার মামলার শুনানি বিব্রত আদালত, বদলির আদেশ 
  • পটুয়াখালীতে শহীদ বাবার কবরের পাশে শা‌য়িত কলেজছাত্রী, কান্না থামছে না মায়ের
  • তালতলীতে কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘দলবদ্ধ ধর্ষণ’, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ
  • ‘নাতনি তো শ্যাষই হইয়্যাই গ্যাছে, অগোর ফাঁসি চাই’
  • নারী ও কন্যাশিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়
  • ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারত ছাড়লেন ২৭২ পাকিস্তানি, আজ শেষ দিনে ছাড়বেন আরও কয়েক শ