শুরু আর শেষটা মেলাতে পারল না নিউজিল্যান্ড। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল কিউইরা। মোহাম্মদ শামি ও হার্দিক পান্ডিয়ার করা প্রথম ৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলেছিল ৩৭ রান। প্রথম ১০ ওভারে রান ছিল ১ উইকেটে ৬৯। কিন্তু ভালো এই শুরুটা ধরে রাখতে পারেনি মিচেল স্যান্টনারের দল। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে তুলেছে ৭ উইকেটে ২৫১ রান।

নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের শুরু আর শেষটা মেলাতে দেননি মূলত ভারতের স্পিনাররা। শামি ও পান্ডিয়ার করা ৫ ওভারে কোনো উইকেট পড়েনি বলে ষষ্ঠ ওভারেই রহস্য স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীকে বোলিংয়ে আনেন ভারত অধিনায়ক রোহিত। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট নেন বরুণ।

১১তম ওভার থেকে রোহিত দুই প্রান্ত থেকেই স্পিন আক্রমণ শুরু করেন।  বরুণ, কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেল—চতুর্মুখী এই স্পিন আক্রমণ চলে ৪৩ ওভার পর্যন্ত। যার মানে টানা ৩৩ ওভার ভারতের ঘূর্ণি সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের।

এই ৩৩ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারালেও নিউজিল্যান্ড তুলতে পেরেছে ১১৫ রান। যার মানে গড়ে ওভারে ৩.

৪৮ রান করে। অথচ এর আগে প্রথম ১০ ওভারে কিউইরা ৬.৯০ গড়ে ৬৯ রান তুলেছে।

৪৪তম ওভারে শামি ফিরে আসায় আবার পেসে ফেরে ভারত। নিজের পরের ওভারে একটি উইকেট পেলেও এই দুই ওভারে শামি দেন ২৩ রান। ভারতের চার স্পিনার বল করেছেন মোট ৩৮ ওভার। ৩.৭৯ ইকোনমিতে দিয়েছেন ১৪৪ রান। তিনজনে মিলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। দুই পেসার শামি ও পান্ডিয়া মিলে করেছেন ১২ ওভার, দিয়েছেন ১০৪ রান। শামি ৯ ওভার বোলিং করে ৭৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট, পান্ডিয়া ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।

মাঝখানে পথ হারিয়ে ফেলা নিউজিল্যান্ড শেষে গিয়ে একটু গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পেরেছে। শেষ ৫ ওভারে তুলেছে ঠিক ৫০ রান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ডিলারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ব্যবসা গুটিয়েছেন ৫১ বিক্রেতা

সাদুল্লাপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম এক বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ফলন আসার আগ পর্যন্ত জমিতে তিনবার ইউরিয়া সার দিতে হবে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার দ্বন্দ্বে সার পেতে বেগ পেতে হচ্ছে এ কৃষককে। 

জাহিদুল ইসলাম জানান, ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ডিলারের কাছ থেকে ইউরিয়া সার কিনতে হয়। এতে বাড়তি পরিবহন খরচ ও সময়ের অপচয় হয়। 
জাহিদুল ইসলামের মতো সার কিনতে অনেক কৃষককে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এলাকাভিত্তিক খুচরা বিক্রেতারা ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ায় এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থার জন্য তারা ডিলারদের অসহযোগিতার কথা বলছেন। 

খুচরা ইউরিয়া সার বিক্রেতা বড় জামালপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম মিঠু ও নলডাঙ্গার দশলিয়া বাজারের বিপুল হোসেন জানান, এ ব্যবসায় প্রাপ্য সম্মানটুকু নেই। তাদের প্রতিপক্ষ মনে করেন বিসিআইসি ডিলাররা। তারা কমিশন দিতে টালবাহানা করেন। নানা ছুতোয় সার দিতে দেরি করেন। নানা ঝক্কি পোহানোর পর সার নিয়ে নির্ধারিত পয়েন্টে পৌঁছাতে পরিবহন খরচ দিতে হয়। এতে লাভ থাকে না। 

অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভাতগ্রাম ইউনিয়নের নুরুজ্জামান মণ্ডলসহ কয়েকজন ডিলার। তাদের ভাষ্য, খুচরা বিক্রেতারা বাকিতে সার নেওয়ার আশায় থাকেন। বিনা পয়সায় সার নিয়ে মজুত করে রাখেন। সুযোগমতো দাম বাড়িয়ে কৃষকের কাছে বিক্রি করেন। তাদের এ সুযোগ না দেওয়ায় অনেকে ব্যবসায় টিকতে পারেননি। এসব কারণে আমরাও কৃষকের কাছে সরাসরি সার বিক্রি করতে আগ্রহী। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণ হয়েছে। এসব জমির জন্য চলতি মৌসুমে ইউরিয়া সার প্রয়োজন হবে ৪ হাজার ৫০০ টন। উপজেলায় বিসিআইসি অনুমোদিত ১৮ জন ডিলার আছে। তারা এগারো ইউনিয়নের নির্ধারিত স্থানে সার বিক্রি করেন। বরাদ্দ সারের ৭৫ ভাগ থাকবে ডিলারের কাছে। ২৫ ভাগ পাবেন খুচরা বিক্রেতারা। কৃষকদের সুবিধার জন্য এখানে ৯৯ জন খুচরা সার বিক্রেতা (সাব ডিলার) নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তারা কৃষি বিভাগের অনুমতি নিয়ে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ জামানত রেখে ডিলারদের কাছ থেকে কমিশনে ইউরিয়া নেন। সেই সার নির্ধারিত পয়েন্টে নিয়ে কৃষকের কাছে বিক্রি করেন। ডিলারদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে খুচরা বিক্রেতারা ব্যবসা ছেড়ে জামানত ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে উপজেলাজুড়ে মাত্র ৪৮ জন খুচরা বিক্রেতা আছেন। তারাও ব্যবসা ছেড়ে জামানতের টাকা ফেরত নিতে চাচ্ছেন। এসব কারণে কৃষকের ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। 

কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, কৃষকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে সার বিক্রির বিধান রাখা হয়েছে। এখানে ডিলারের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতার দ্বন্দ্ব প্রকট। তাদের ঝামেলায় কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সারের জন্য দূরে যেতে হচ্ছে কৃষকদের।

জামালপুর ইউনিয়নের বড় জামালপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ইউনিয়নটি বড় এলাকাজুড়ে। অথচ এখানে সার বিক্রির জন্য ডিলার মাত্র একজন। তিনি দোকান খুলে বসেন নির্ধারিত একটি বাজারে। দূরের গ্রামের অনেক কৃষক ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সার নিতে আসেন। এখানে সার বিক্রির জন্য খুচরা বিক্রেতা বাড়ানো প্রয়োজন।

কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া জানান, সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ইউরিয়া সারের সরবরাহ আছে। ডিলার আর খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে সমন্বয় থাকলে কৃষক পর্যায়ে সহজে সার পৌঁছানো যেত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ