ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত ট্রেনের বগি ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার
Published: 9th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত হওয়া মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ঝ’ বগি ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা পৌনে ২টার দিকে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বাইরে পূর্ব দিকে রেললাইনের পাশে রাখা হয়।
এ ঘটনায় আপ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ডাউন লাইন দিয়ে সব ট্রেনকে ১০ কিলোমিটার গতিতে স্টেশন প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আবদুস সাকির বলেন, আজ বেলা ১টা ৪৮ মিনিটে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে লাইনচ্যুত হওয়া বগিসহ দুটি বগি রেখে বাকি বগিগুলো নিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন গতকাল শনিবার রাত ১১টা ৩৭ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের আউটারের মেইন লাইন থেকে লুব লাইনে ঢোকার সময় একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। এতে চারটি চাকা রেললাইনের স্লিপারের ওপর ঘেঁষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছায়। চারটি চাকা ট্রলি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেঙে যায়। স্টেশনে থামার পর ট্রেনের যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে নেমে পড়েন।
আরও পড়ুনলাইনচ্যুত হওয়ার ৯ ঘণ্টা পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়েছে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন, ডাউনলাইনে চলাচল বন্ধ৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড ল ইনচ য ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।