‘স্মার্টফোন ডায়েট’–এর আগে ও পরে

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে জার্মানির দুটি বিশ্ববিদ্যালয়—হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব কোন। গবেষণাটি চালানো হয়েছে ২৫ জন তরুণের ওপর, যাঁদের বয়স ১৮–৩০–এর মধ্যে। আর গবেষণাটি শুরু করার আগে এই ২৫ তরুণের মস্তিষ্কের এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) করা হয়েছিল। এ ছাড়া নেওয়া হয়েছিল একটা মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা।

তারপর ৩ দিন এই তরুণদের ‘স্মার্টফোন ডায়েট’–এ রাখা হয়। অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টা তাঁরা স্মার্টফোন ব্যবহার করেননি। স্বাভাবিকভাবে অন্যদের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছেন সরাসরি। এভাবেই চালিয়েছেন নিজেদের দৈনন্দিন ও পেশাগত কাজকর্ম। ৭২ ঘণ্টা পর আবার তাঁদের এমআরআই ও একই মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় এই তরুণদের চালু স্মার্টফোন, বন্ধ স্মার্টফোন, ফুল, প্রকৃতি প্রভৃতির ছবি দেখানো হয়। আর মস্তিষ্ক সেসব ছবি দেখে কীভাবে সাড়া দেয়, তা লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর এই দুই পরীক্ষার পার্থক্য থেকে গবেষকেরা নিয়েছেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুনশিশুর মুঠোফোন আসক্তি দূর করতে যা করবেন০৬ আগস্ট ২০২২গবেষণায় যে আশ্চর্য ফলাফল পাওয়া গেছে

পরীক্ষায় দেখা যায়, অন্য যেকোনো ধরনের আসক্তি মস্তিষ্কে যেভাবে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে, দিনে ব্যক্তি ভেদে ৩–৪ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোনের ব্যবহারও একইভাবে ব্যক্তির মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে।

মাত্র ৩ দিন স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করার ফলে এমআরআই পরীক্ষায় মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষণ, চিন্তা ও সৃজনশীলতার অংশ ভালোভাবে সাড়া দেয়। এর কারণ হলো মানুষ সামাজিক জীবনযাপন করবে, চিন্তা করবে, সমস্যা সমাধান করবে—মানব মস্তিষ্ক এভাবেই কাজ করার জন্যই উপযোগী। তাই মস্তিষ্ককে যখন কোনো অস্বাস্থ্যকর, চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ থেকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেওয়া হয়, মস্তিষ্ক তখন সেটির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয় ও ইতিবাচকভাবে সাড়া দেয়।

আরও পড়ুনসকালে উঠেই মুঠোফোন দেখেন? জেনে নিন আপনার ব্যক্তিত্বের ধরন২৫ নভেম্বর ২০২৪

স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় মানুষ সৃজনশীল চিন্তা করার অবকাশ পায় না। ফলে উদ্ভাবনী ক্ষমতা, যুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্ক দ্রুত বৃদ্ধ হতে থাকে। ফলে কম বয়সেই স্ট্রোক, আলঝেইমারস ডিজিজ, পারকিনসনের মতো সেরিব্রোভাস্কুলার ও নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি বাড়ে আশঙ্কাজনক হারে।

এই গবেষণার ভিত্তিতে গবেষকেরা বলছেন, স্মার্টফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আপনি সৃজনশীল কাজে আরও ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে পারেন। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য স্মার্টফোনের ব্যবহারে লাগাম টানার কোনো বিকল্প নেই।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

আরও পড়ুনটয়লেটে মোবাইলফোন ব্যবহার করে নিজের স্বাস্থ্যের যে ৬টি ক্ষতি করছেন২২ জানুয়ারি ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব যবহ র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ