আগামী ১৫ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশজুড়ে চলবে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। একদিনের এই ক্যাম্পেইনে রাজশাহীর পৌনে চার লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে ক্যাম্পেইন উপলক্ষে রাজশাহীর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে অবহিতকরণ সভায় সাংবাদিকদের এতথ্য জানানো হয়।

সভার তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীর মোট ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। ছয় থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। রাজশাহী জেলার ৯ উপজেলায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু ৩৩ হাজার, ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা ২ লাখ ৭২ হাজার। জেলায় মোট ২ হাজার ২০১টি কেন্দ্রে এই ক্যাম্পেইন চলবে।

আরো পড়ুন:

মাগুরার সেই শিশুকে সিএমএইচে স্থানান্তর

মাগুরায় বোনের বাড়িতে এসে ‘ধর্ষণের’ শিকার শিশু

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৫০০ ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৬১ হাজার শিশুকে ৪৮৩ কেন্দ্রে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দুইজন করে স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবেন। নির্ধারিত দিনেই সবাইকে ক্যাপসুল খাওয়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সভায় ক্যাম্পেইন নিয়ে সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা.

বায়েজীদ-উল ইসলাম। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবা খাতুন ও মেডিকেল অফিসার ডা. তামান্না কবির।

সভায় সিভিল সার্জন জন্মের পরই মায়ের দুধ খাওয়ানোর ওপর জোর দেন। শিশুর শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণে মায়ের বুকের একটি দুধ কমপক্ষে পাঁচ মিনিট খাওয়ানোর পর অন্যটি খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া মায়েদের গাজর, লালশাক, মিষ্টি কুমড়া, মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের মতো ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের পরামর্শও দেন সিভিল সার্জন।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ভ ল স র জন ক য ম প ইন ম স বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ