সারাদেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এ মানববন্ধন করেন তারা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ ও আরাফ ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সংহতি প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন:

হিযবুত তাহরিরে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

কুবিতে স্নাতকে ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে গণস্বাক্ষর

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.

কামরুন নাহার শীলা, সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আবু সাঈদের বাংলায় ধষর্কের ঠাই নাই’, ‘চব্বিশের বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুলফা আক্তার বলেন, “আমরা সবাই আছিয়ার ধর্ষণের কাহিনি জানি। এমন অনেক ধর্ষণ হয়, যার খবর আমরা জানি না। আমাদের সামনে আসে না, অনেকে ভয়ে প্রকাশ করে না। এভাবে ধর্ষণ বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ধর্ষকদের উপযুক্ত সাজা না হওয়া। ১০- ২০ হাজার টাকা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে তারা আবার মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের দাবি, আমরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রকাশ্যে এনে যেন ফাঁসি দেওয়া হয়, যাতে কেউ ধর্ষণের কথা চিন্তাও না করতে পারে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলে ধর্ষকদের প্রতিহত করতে হবে।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জোহরা মীম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায়ও এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের মন-মানসিকতা অনেক নীচু। তারা নারীদের বিভিন্নভাবে বুলিং করে। আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের ভিতরে এক ও বাহিরে আরেক। এ ধরনের মানুষকে প্রশাসন চিহ্নিত করুক। যেন তারা ভবিষ্যতে পটেনশিয়াল রেপিস্ট হিসেবে না গড়ে ওঠে। প্রশাসন এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুক, যেন নারীদের নিয়ে কটুক্তি করার আগে তাদের কলিজা কেঁপে ওঠে।”

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা বলেন, “গভীর শোক ও প্রতিবাদের ভাষাকে একত্র করার জন্য আজকে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। গত কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির করাল গ্রাসের শিকার হচ্ছে নারীরা। আজ একটা নারী-শিশুও ধর্ষকের হাত থেকে নিরাপদ না। ছোট শিশু আছিয়া জীবনকে বোঝার আগেই তার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ধর্ষকেরা।”

তিনি আরো বলেন, “ম্যোরাল পুলিশিংয়ের নামে যে নারী হেনস্থা হয়, তা কোনভাবেই কাম্য না। আমরা এ রহস্যের সমাপ্তি চাই। সুন্দর সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ চাই।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, “ধর্ষণই একমাত্র অপরাধ, যেখানে ভুক্তভোগীকে তার নির্দোষতা প্রমাণ করতে হয়। আমাদের নিকটজনদের মধ্যেই ধর্ষক লুকিয়ে থাকে। তাই ছোটবেলা থেকে নারীদেরকে ধর্ষকের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।”

তিনি বলেন, “নারীদের ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে কোনটা গুডটাচ্ আর কোনটা বেডটাচ্। এখন দেশে ধর্ষণের যে মহাযজ্ঞ চলছে, অনেকেই বলছে- নারীর বেপর্দার কারণে তা হচ্ছে। পর্দার কথা যদি বলতে হয়, তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দার বিধান রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকের বিচার নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে ধর্ষকমুক্ত করতে হবে।”

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান আসামির জামিন বাতিল করে শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

দাসেরহাট বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা বলেন, একাধিক মামলার আসামি বাবু জামিনে এসে আবারও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার দখলের পাঁয়তারা করছেন। সাধুরপাড়া ইউনিয়নে কোনো খুনি, সন্ত্রাসী থাকবে না। তাঁকে সাধুরপাড়ার জনগণ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে এলাকাবাসী তাঁকে প্রতিহত করবে। 
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ জুন রাত ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৭ জুন ২২ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু কয়েক মাস আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
গত বছরের ২৭ আগস্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযুক্তরা হলেন– প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু, রাকিবিল্লাহ রাকিব, রেজাউল করিম, শরিফ মিয়া, মনিরুজ্জামান মনির, বাদশা মিয়া, মো. শাহজালাল, শফিকুল ইসলাম ও তোফাজ্জল মিয়া। পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী মনিরা বেগম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় গণহত্যা বন্ধে ঢাবিতে সাদা দলের মানববন্ধন, প্রয়োজনে যুদ্ধে নাম লেখাতে রাজি
  • প্রধান আসামির জামিন বাতিল করে শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
  • টাকা আত্মসাৎকারীকে জামিন দেওয়ায় গ্রাহকদের ক্ষোভ
  • জামালপুরে সাংবাদিক রব্বানি হত্যা মামলার আসামিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • টাঙ্গাইলে ৭ দাবিতে এ আই টেকনিশিয়ানদের কর্মবিরতি
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সানির ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • এক ঘণ্টা দোকান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ, আরও দুজন গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানবন্ধন
  • শিশু তাবিবের হাতে প্ল্যাকার্ড ‘বাবা হত্যার বিচার চাই’
  • লবণের ন্যায্যমূল্য চায় এনসিপি