বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচলের নতুন সময়সূচি কাল সোমবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। নতুন সময়সূচিতে সুবর্ণ এক্সপ্রেসসহ পাঁচটি আন্তনগর ট্রেনের চট্টগ্রাম থেকে যাত্রার সময় এগিয়ে আনা হয়েছে। আর যাত্রার সময় পিছিয়েছে সোনার বাংলাসহ পাঁচ আন্তনগর ট্রেনের। তবে সুবর্ণ ও সোনার বাংলার ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় অপরিবর্তিত থাকবে।

ট্রেন চলাচলের সময়সূচিকে রেলের ভাষায় ওয়ার্কিং টাইম টেবিল (ডব্লিউটিটি) বলা হয়। সোমবার থেকে কার্যকর হবে ডব্লিউটিটি-৫৪। এর আগের ডব্লিউটিটি-৫৩ কার্যকর হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর।

ট্রেন পরিচালনার সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। একটি অঞ্চল যমুনা নদীর পূর্ব পাশে, যা পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে (ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-ময়মনসিংহ বিভাগ) হিসেবে পরিচিত। আর যমুনা নদীর পশ্চিম পাশ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে গঠিত (রাজশাহী-রংপুর-খুলনা বিভাগ)। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটে বর্তমানে ২৯ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে।

ট্রেন চলাচলের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়বে সকাল ৭টায়। আগে সাড়ে ৭টায় ছেড়ে যেত। ৪৫ মিনিট এগিয়ে আনা হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের যাত্রার সময়। আগে সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে গেলেও এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া ৫টায়।

তারাকান্দি থেকে ঢাকাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ছাড়বে বিকেল সাড়ে ৫টায়, আগে ছেড়ে যেত সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। জামালপুর থেকে বিজয় এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের উদ্দেশে এখন থেকে ১০ মিনিট আগে রাত ৮টায় ছাড়বে।

কক্সবাজার এক্সপ্রেস এখন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের পরিবর্তে দুপুর সাড়ে ১২টায় কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।

এদিকে যাত্রার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পাঁচটি ট্রেনের। এর মধ্যে সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস এখন থেকে ছাড়বে বিকেল ৪টায়। আগে ছেড়ে যেত বেলা সাড়ে ৩টায়।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ১৫ মিনিট পিছিয়ে বিকেল ৫টা করা হয়েছে। আগে পৌনে ৫টায় ছেড়ে যেত।ঢাকা থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া ৫টায়। ভূঞাপুরগামী এই ট্রেন আগের সময়সূচি অনুযায়ী ছাড়ত বিকেল সাড়ে ৪টায়।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ৩০ মিনিট। এখন রাত সাড়ে ১০টার পরিবর্তে রাত ১১টায় ঢাকা ছাড়বে এই ট্রেন।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সোমবার থেকে ট্রেন চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচলন কর্মকর্তা (সিওপিএস) মো.

শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, রেলের নতুন টাইম টেবিলে কিছু ট্রেনের যাত্রার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র য ত র র সময় র সময় প স বর ণ

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের আগে নির্বাচনে জোর দেওয়া ছিল ১/১১ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল

১৯৯০ সালে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। আর গণতন্ত্রের উল্টোপথে যাত্রা ঠেকাতে প্রয়োজন ছিল কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্কার। সে সময় সংস্কারে জোর না দিয়ে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমায় গুরুত্ব দেওয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ভুল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ–রাষ্ট্রদূত জন এফ ড্যানিলোভিচ।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) বিআইআইএসএস’এ ‘নতুন ভোরের পথে ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন গতিপথ’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করে। সিজিএস আয়োজিত সংলাপে অংশ নেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ রাষ্ট্রদূত জন এফ ড্যানিলোভিচ। সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থার চেয়ারম্যান মুনিরা খান। এরপর সঞ্চালকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কূটনীতিক। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অতিথিদের প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।

সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কূটনীতিক বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতি তাদের দেশের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভূমিকা এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক, উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সমাজের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।  

কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, অবশ্যই ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষে ছিল। তবে এরপর থেকে একটি ধারাবাহিক নীতি নিয়ে চলেছে। 

২০০৭–০৮ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা জটিল ভূমিকা পালন করেছিল, সে সময়ে কূটনীতিকরা কিভাবে কাজ করে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭–০৮ সালে বড় ভুল করেছিল। আমি সে সময়ে বাংলাদেশে দায়িত্বে ছিলাম না। তবে আমি এটি বলতে পারি তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বা অন্য কোনো মার্কিন কূটনীতিক ১/১১ এর পেছনে দায়ী নয়। আর কোনো গোপন কফি গ্রুপে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ বাংলাদেশিদের নির্দেশনা দেয়নি কি করতে হবে।

জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, তবে সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গতিপথ নিয়ে অনেক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল, যে প্রত্যাশা তৎকালীন সরকার, সামরিক বাহিনী এবং সুশীল সমাজের ছিল। 

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি ছিল, তা লাইন বিচ্যুত হয়েছিল। আর বাংলাদেশকে সঠিক পথে আনতে কিছু মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। আমরা সংস্কারকে সহযোগিতা করেছিলাম। আমরা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সমর্থন করেছিলাম। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলাম।

১/১১-এর বিশ্লেষণে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, পরিস্থিতির কারণে আমাদের বোঝাপড়ার ঘাটতি ছিল। আমাদের অনেকের কথা শোনার দরকার ছিল। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনিনি। বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকে আর্মির জেনারেল ও ব্রিগেডিয়ারদের কথায় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ কি চেয়েছিল, তাতে গুরুত্ব দেয়নি। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বললেও আর্মিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এ কারণেই হয়তো যুক্তরাষ্ট্র যে রকম প্রত্যাশা করেছিল বাংলাদেশ সে ধারায় যেতে পারেনি।

তিনি বলেন, আরও একটি ভুল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমাতে বেশি জোর দিয়েছিল। নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যে সরকার নির্বাচিত নয়, এমন সরকার দীর্ঘ সময় শাসন করতে পারে না। তবে সে সময়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অগ্রাধিকার সংস্কারের চেষ্টা করেছিল। তবে যখন এটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সে সরকারের এডেন্ডা হচ্ছে নির্বাচন এবং ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে প্রভাব হাড়িয়েছে।

জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সে সরকারের চুক্তি হয়েছিল গোপনে। ফলে আমরা জানি না সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কি দরকষাকষি হয়েছিল। তখন আমরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমাদের ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা তাদের শিক্ষা পেয়েছেন এবং সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজগুলোকে এগিয়ে নেবে। তবে আমাদের ধারণা ভুল ছিল এবং যা বলেছিল তা বিশ্বাস করেছিলাম। আর বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অবনতি হতে দেখেছি, যার ফলে ২০২৪ এর জুলাই–আগস্ট হয়েছে। এ সময়ে অতীতের ভুল থেকে ভবিষ্যতের শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামের ৯ আন্তঃনগর ট্রেনের নতুন সূচি 
  • ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ, স্টেশন-টার্মিনালে থাকবে সিসিটিভি
  • সোমবার থেকে চট্টগ্রামের ৯ আন্তঃনগর ট্রেনের নতুন সূচি
  • পিলখানা হত্যাকাণ্ড: সাক্ষ্য দিতে শেখ হাসিনাকে ডেকেছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন
  • সংস্কারের আগে নির্বাচনে জোর দেওয়া ছিল ১/১১ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল
  • শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে সাক্ষ্য দিতে ডেকেছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন
  • নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে তনুশ্রীর অভিযোগ ৮ বছর পর খারিজ
  • বাউবি ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ