নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’-এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে নারী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে শাসকদের দায়িত্বহীন আচরণ। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে এমন বিচারহীনতা ও নিরাপত্তাহীনতা কখনোই কাম্য নয়। সকলকে নিপীড়ন-সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বিপ্লব পরবর্তী সময়ে কখনোই এমন আচরণ কাম্য নয় বলে মন্তব্য করে ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ভেবেছিলাম নতুন বাংলাদেশ দেখতে পারব। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে তা আমরা দেখতে পারছি না। যে দেশে নিপীড়ককে যখন ফুল-পাগড়ি দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়, সে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা ঠিক আছে তা আমাদের বুঝতে বাকি নেই। তাই আপনাদের সকলকে কথা বলতে হবে। এই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। সেইসঙ্গে শাসকদের বলতে চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

সুস্মিতা চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাস এতদিন নিরব ছিল, কোনো আওয়াজ পাচ্ছিলাম না। কিন্তু গতকাল রাত থেকে ক্যাম্পাসে যেভাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে, ছাত্রীরা যেভাবে হল থেকে বেরিয়ে এসেছে, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমাদের দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা দীর্ঘদিনের, এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়।’

নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেন নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী শুসমিন আফসানা। তিনি বলেন, ‘আট বছর বয়সী মাগুরার শিশুটি পরিবারের আশ্রয়ে ঘরের মধ্যেই ধর্ষিত হয়েছে। তাহলে নারী কোথায় নিরাপদ? রাস্তায় না, দোকানে না, ঘরে না, কোথাও নিরাপদ নন। এখন আসলে নারীর অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি পড়ে গেছে। প্রতিটা ঘটনা এই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে নারীকে অস্তিত্বহীন করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা নারীরা ঘর-রাস্তা কোনো জায়গা ছাড়ব না। আমরা কথা বলব ও প্রতিবাদ গড়ে তুলব।’

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা বক্তব্য দেন। প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন ও সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক, নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শ্রুভ্রা রানী চন্দসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই আউট নিয়ে সন্দেহ বিসিবিরও, তদন্তে এসিইউ

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুই অপ্রীতিকর ও অদ্ভুতুড়ে আউট নিয়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ‌্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ওপেনার ব‌্যাটসম‌্যান মিনহাজুল আবেদীন ও আলিফ হাসানের আউট নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি)। এজন‌্য তদন্তে নামছে বিসিবির অ‌্যান্টি-করাপশন ইউনিট (এসিইউ)।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের আয়োজক সিসিডিএমের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল রাইজিংবিডিকে এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ম‌্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিসিবির দুই ক্রিকেটারের আপ্রোচ ও আউটের ধরন নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় এসিইউ নিজেরাই তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে জয় তুলে নিয়ে ১৩ পয়েন্টে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে গুলশানের। কিন্তু শাইনপুকুরের দুই ব্যাটসম্যানের চরম হতশ্রী আউটে উঠেছে প্রশ্ন।

ইনিংসের ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বলে ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে আসেন রহিম আহমেদ। বল ছিল অফস্টাম্পের বাইরে। ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাঝ বরাবর। টার্ন মিস করলেও বল খেলার কোনো চেষ্টা ছিল না তার। বরং ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে পেছনে না ফিরে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা দেন।

ইনিংসের শেষ দিকে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। হাতে কেবল ১ উইকেট। নাঈম ইসলামের করা প্রথম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির। বল তখন ওয়াইড হয়েছে। শট খেলার কোনো চেষ্টাই করেননি মিনহাজুল। হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়েন। পরবর্তীতে ক্রিজে ব্যাট রাখার যথেষ্ট সময় পেলেও করেননি।

উইকেটকিপার ইমন প্রথম দফায় চেষ্টা করেছিলেন স্ট্যাম্প ভাঙার। কিন্তু পারেননি। ওই সময়ে ব্যাট ক্রিজের বাইরে রেখে পুরোটা সময় তাকিয়ে ছিলেন ব্যাটসম্যান মিনহাজুল। পরবর্তীতে স্ট্যাম্প ভাঙলে আম্পায়ার আউট দেন। ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ ব্যাটসম্যানের এমন আউটে রীতিমত তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন।

ক্রিকেটার শামসুর রহমান মিনহাজুলে আউটের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সিরিয়াসলি শেইম…!’। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম‌্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস লিখেছেন, ‘ছি!!!।’

সাব্বির আহমেদ বলেছেন, ‘‘শুনেছি বিসিবি এসিইউকে জানিয়েছে দুইটি আউট নিয়ে তদন্ত করতে। আমরা প্রত‌্যেকেই দেখেছি মাঠে কি হয়েছে। এগুলো ম‌্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতে কাজ হয়ে থাকে। তারা নিশ্চয়ই ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হবেন। এছাড়া সিসিডিএম থেকেও বিসিবির অ‌্যান্টি করাপশন ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এসিইউ এটা নিয়ে কাজ করবে।’’

সুপার লিগ নিশ্চিত করতে গুলশানের জন‌্য এই ম‌্যাচটি জেতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে তারা ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চলে গেছে সুপার লিগে। এছাড়া শাইনপুকুরের পাওয়ার ছিল। তারা জিতলে রেলিগেশন বাঁচাতে কিছুটা এগিয়ে যেতে পারত।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের মাতাল বিমানযাত্রী সহযাত্রীর সঙ্গে যে আচরণ করলেন
  • ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা
  • গরম কমার পূর্বাভাস আবহাওয়া অফিসের
  • সন্তানকে ব্যবহার করে ‘ভিউ ব্যবসা’ : ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা
  • দুই আউট নিয়ে সন্দেহ বিসিবিরও, তদন্তে এসিইউ
  • বেপরোয়া নিরীক্ষা, ট্রাম্প বৈশ্বিক বিভাজনকারী
  • ফিফার কাছে বর্ণবাদ ও অশালীনতার অভিযোগ ব্রাজিলের, বিপাকে আর্জেন্টিনা
  • আমি আর্জেন্টাইন, চারটা ট্রফি আছে: ফ্রান্সে গিয়ে মনে করিয়ে দিলেন মার্তিনেজ
  • রেজাল্ট খারাপ করলে সন্তানকে কতটা শাসন করবেন?
  • ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে: ট্রাম্প