‘মব জাস্টিস’ পরিস্থিতি হলে এখন থেকে কঠোর হব: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
Published: 9th, March 2025 GMT
এখন থেকে যেকোনো ধরনের ‘মব জাস্টিসের’ বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। যিনিই ‘মব জাস্টিস’ করেন না কেন, তাঁকে আইনের আওতায় আনতে আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সচিবালয়ের আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘জনগণকে জানাতে চাই, যেখানেই মব জাস্টিস পরিস্থিতি হবে, সে যে–ই হোন না কেন, যে ধর্মের, লিঙ্গের, বর্ণের, জাতের হোন না কেন, আমরা এখন থেকে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হব।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, আজ আলোচনা হয়েছে যে আইন অন্ধ, যে–ই অপরাধী হোক না কেন, জাত, ধর্ম, বর্ণ দেখা হবে না, নারী বা পুরুষ দেখা হবে না। যিনিই অপরাধ করেন না কেন, যিনিই মব জাস্টিস করেন না কেন, তিনি ধর্মীয় হোন, নিধার্মিক হোক, ধার্মিক হোন, যে–ই হোন কেন, তাঁকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মব জ স ট স উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।