কিশোরী মেয়ের নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণের চেষ্টা, হাতেনাতে সৎবাবা গ্রেপ্তার
Published: 9th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে কিশোরী মেয়েকে (১৪) ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নগ্ন ভিডিও ধারণ এবং পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে তার সৎবাবাকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার একটি আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল রাতে ধর্ষণচেষ্টার সময় ওই ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ মার্চ কিশোরীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন তার সৎবাবা। পরে তিনি সেই ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি কিশোরী তার মা ও কয়েকজন প্রতিবেশীকে জানায়। ওই ঘটনার পর গতকাল রাতে আবার ভিডিও দেখিয়ে কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সৎবাবা। তখন কিশোরীর ডাক ও চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে সৎবাবাকে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে সৎবাবাকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় লোকজন। ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় দুটি মামলা করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।