নোয়াখালীর কবিরহাটে কলেজ ছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামের রায় বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় (২৫) ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক। 

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে চাঁদা না পেয়ে গৃহবধূকে মারধর, মামলা

নড়াইলে বিএনপি অফিসে ‘বোমা’ হামলা, আহত ৩

আহত বাবার নাম মিজানুর রহমান মিজান (৫৫)। তার মাথায় অপারেশন করা হয়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। মিজান পেশায় ব্যবসায়ী। 

রোববার (৯ মার্চ) আহত মিজানের ছোট ভাই ফরিদ অভিযোগ করে বলেন, ‍“উপজেলার কবিরহাট বাজারে তার বড় ভাইয়ের একটি ইলেকট্রিক দোকান রয়েছে। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি ইলেকট্রনিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মেয়ে মাইনুর আক্তার মিম (২২) নোয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত ১৫-২০ দিন আগে বিকেলে মিম আমাদের পুরান বাড়ি থেকে নতুন বাড়ি যাচ্ছিল। পথে সঞ্জয় তার গতিরোধ করে এবং টানাটানি শুরু করে। মিম তখন ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। ওইদিন থেকে সঞ্জয় নানাভাবে মিমকে উত্যক্ত করতে থাকে।”

তিনি বলেন, “মিমের কাছে পাত্তা না পেয়ে সঞ্জয় মিমের চাচাতো বোনকে উত্যক্ত শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার ৬ মার্চ রাতে মেয়েটির শয়ন কক্ষের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলে জানালায় ধাক্কা দেয় সঞ্জয়। এসময় মেয়েটির দাদি ঘরের বাইরে আসলে সঞ্জয় দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।” 

তিনি আরো বলেন, “মেয়েদের ইভটিজিংয়ের করায় গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আমার বড় ভাই মিজান সঞ্জয় রায়ের ঘরের সামনে যান এবং অপকর্মের বিষয়গুলো তার বাবাকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে কুড়াল এনে সঞ্জয় আমার বড় ভাইকে কোপাতে শুরু করে। কুড়ালের কোপে ভাই মাথায় গুরত্বর আঘাত পান। ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমার ওপরও হামলা চালানো হয়। চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবও হামলার শিকার হন। বর্তমানে আমার ভাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।” 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত সঞ্চয় ও তার বাবাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।  

কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

মঞ্জুর আহমদ বলেন, “এ রকম একটা ঘটনার খবর আমরা পেয়েছি। কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”    

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ঢোকার অনুমতি পায়নি চার ট্রাক তৈরি পোশাক, গন্তব্য ছিল স্পেন

ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করায় পেট্রাপোল কাস্টমস তৈরি পোশাকবোঝাই চারটি ট্রাককে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি (কারপাস) দেয়নি। এতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে গতকাল বুধবার ট্রাকগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯ জুন আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গত মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক তিনটি প্রতিষ্ঠান চারটি ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে বেনাপোল বন্দরে নিয়ে আসে। ট্রানজিট নিয়ে ওই পণ্য কলকাতার দমদম বিমানবন্দর হয়ে স্পেনে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে ট্রাকগুলো প্রবেশের অনুমতি পায়নি। এতে পণ্যগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়েছে।

বেনাপোলে এই পণ্যের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট ছিল পদ্মা ট্রেডিং। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক অনিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এর আগেই ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে চলে আসে। পণ্য ঢুকতে না দেওয়ায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’ তিনি জানান, এই সুবিধা বাতিলের এক দিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত তৈরি পোশাকের রপ্তানি গ্রীষ্মে বাড়ে। এখন রপ্তানির ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে ভারতের এই সিদ্ধান্তে তাঁরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, ‘যে রপ্তানিকারকের পণ্য ফিরে গেছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কিছু জানাননি। তবে আমরা জেনেছি, ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে কারপাস দেওয়া হয়নি। যে কারণে পণ্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

২০২০ সালের ২৯ জুন এক আদেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।

বিবৃতিতে ভারত দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপে ভারতের সীমান্ত দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে না।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, তার বেশির ভাগ যায় ইউরোপের দেশগুলোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। এই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি কম হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ