মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম
Published: 9th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর কবিরহাটে কলেজ ছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামের রায় বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় (২৫) ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে চাঁদা না পেয়ে গৃহবধূকে মারধর, মামলা
নড়াইলে বিএনপি অফিসে ‘বোমা’ হামলা, আহত ৩
আহত বাবার নাম মিজানুর রহমান মিজান (৫৫)। তার মাথায় অপারেশন করা হয়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। মিজান পেশায় ব্যবসায়ী।
রোববার (৯ মার্চ) আহত মিজানের ছোট ভাই ফরিদ অভিযোগ করে বলেন, “উপজেলার কবিরহাট বাজারে তার বড় ভাইয়ের একটি ইলেকট্রিক দোকান রয়েছে। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি ইলেকট্রনিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মেয়ে মাইনুর আক্তার মিম (২২) নোয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত ১৫-২০ দিন আগে বিকেলে মিম আমাদের পুরান বাড়ি থেকে নতুন বাড়ি যাচ্ছিল। পথে সঞ্জয় তার গতিরোধ করে এবং টানাটানি শুরু করে। মিম তখন ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। ওইদিন থেকে সঞ্জয় নানাভাবে মিমকে উত্যক্ত করতে থাকে।”
তিনি বলেন, “মিমের কাছে পাত্তা না পেয়ে সঞ্জয় মিমের চাচাতো বোনকে উত্যক্ত শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার ৬ মার্চ রাতে মেয়েটির শয়ন কক্ষের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলে জানালায় ধাক্কা দেয় সঞ্জয়। এসময় মেয়েটির দাদি ঘরের বাইরে আসলে সঞ্জয় দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “মেয়েদের ইভটিজিংয়ের করায় গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আমার বড় ভাই মিজান সঞ্জয় রায়ের ঘরের সামনে যান এবং অপকর্মের বিষয়গুলো তার বাবাকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে কুড়াল এনে সঞ্জয় আমার বড় ভাইকে কোপাতে শুরু করে। কুড়ালের কোপে ভাই মাথায় গুরত্বর আঘাত পান। ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমার ওপরও হামলা চালানো হয়। চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবও হামলার শিকার হন। বর্তমানে আমার ভাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত সঞ্চয় ও তার বাবাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত অভ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।