বিষ খাইয়ে সৎ মেয়েকে হত্যা মামলায় মা গ্রেপ্তার
Published: 9th, March 2025 GMT
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বিষ খাইয়ে মাহমুদা খাতুন নামে এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শিশুটির সৎ মা হুমাইরা খাতুন বন্যাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার গভীর রাতে মহেশপুর উপজেলার চাদপুর গ্রামের শিশুতলা এলাকা থেকে হুমায়রাকে গ্রেপ্তারের পর তাকে কোটচাঁদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর নাঈম আহমেদ।
হুমাইরা কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহিন আলম এর দ্বিতীয় স্ত্রী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় বোতলে তরল পানীয়ের সঙ্গে ঘাস মারার ওষুধ মিশিয়ে শিশু মাহমুদা খাতুনকে খাইয়ে দেয় সৎ মা হুমাইরা খাতুন বন্যা। এরপর কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় গত ৭ মার্চ শিশু মাহমুদা খাতুনের বাবা শাহিন আলম বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় স্ত্রী হুমাইরা খাতুনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
কোটচাঁদপুর থানার ওসি কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, শনিবার রাতে র্যাব শিশু মাহমুদা হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে কোটচাঁদপুর থানায় হস্তান্তর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।