চট্টগ্রামের আনোয়ারায় জামাতার লাঠির আঘাতে রশিদা বেগম (৪৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের ওষখাইন পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রশিদা উপজেলার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন প্রকাশ মানিক একই এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মানিকের সঙ্গে তার স্ত্রীর ঝগড়া হয়। পরে তার স্ত্রী কর্মস্থল কেইপিজেডে যান। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয় মেয়ের জামাই মানিকের। ঝগড়ার একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে শাশুড়ির মাথায় আঘাত করেন জামাত। এতেই ঘটনাস্থলেই শাশুড়ি রশিদার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর মানিক পলাতক। 

নিহতের মেয়ে আফসা আকতার নারগিস বলেন, তিন বছর আগে হেলালের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। সে আমার সৎ মামার ছেলে। আমি কেইপিজেড চাকরি করি। মাস শেষে বেতনের সব টাকা সে নিয়ে নেয়। তারপরও বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিনিয়ত আমাকে মারধর করে সে। তিনদিন আগে একটি এনজিও থেকে আমাকে এক লাখ টাকা তুলে দিতে বললে আমি রাজি হয়নি। এতে সে আমাকে মারধর করে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে আমি বাবার বাড়ি চলে আসি। আজ সকালে কাজে যাওয়ার পথে সে আমাকে ধরে মারধর করে। পরে আমার মা বাড়ির পাশে গেলে সেখানে গিয়ে আমার স্বামী তার মাথায় আঘাত করে। এ সময় ঘটনাস্থলে আমার মায়ের মৃত্যু হয়।

আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তৈয়বুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্ত মানিককে আটকের জন্য পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ‘শিশু ধর্ষণে’ মীমাংসার সালিস থেকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

কুমিল্লা লালমাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে। 

জানা যায়, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।

শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবরেরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সালিস বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে এলে সালিস বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়, পরে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। 

সালিসে উপস্থিত ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিস বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা রায় করেছিল সালিসের বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে মাতবরের কাছে ২ হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।

স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। 

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ