শব্দার্থ—বাংলা, এই দেশ এই মানুষ | পঞ্চম শ্রেণি
Published: 9th, March 2025 GMT
১. শব্দগুলোর পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ পড়ি।
সৌভাগ্য, প্রকৃতি, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, স্বজন, সার্থক, সাংরাই, বিজু।
শব্দ শব্দের অর্থ
সৌভাগ্য — ভালো ভাগ্য।
প্রকৃতি — নিসর্গ।
বৈচিত্র্য — বিভিন্নতা।
বেলাভূমি — সমুদ্রের তীরে বালুময় স্থান।
প্রান্তর — মাঠ, জনবসতি নেই এমন বিস্তীর্ণ স্থান।
স্বজন — আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, নিজের লোক।
সার্থক — সফল।
সাংরাই — রাখাইনদের নববর্ষ উত্সব।
বিজু — চাকমাদের নববর্ষ উত্সব।
শ্রদ্ধা—বিশেষ সম্মান, ভক্তি।
ধাঁচ—প্রকৃতি, ধরন, রকম।
পরস্পর—একের সঙ্গে অন্য।
জাতিসত্তা—জাতি গোষ্ঠি।
তঞ্চঙ্গা—পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী একটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ।
মারমা— বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ।
২.
প্রকৃতি, সৌভাগ্য, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, সার্থক
ক. আমাদের — যে আমরা এ দেশে জন্মেছি।
খ. আমাদের দেশে রয়েছে সুন্দর — ।
গ. কোথায় পাহাড়, কোথায় নদী, কোথায়-বা এর
সমুদ্রের —।
ঘ. একই দেশ, অথচ কত —।
ঙ. দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, —, পাহাড়, সমুদ্র —এইসব।
চ. দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই — হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
আরও পড়ুনসাধারণ জ্ঞান: ফেব্রুয়ারি–২০২৫।। বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক বিশ্ব০৪ মার্চ ২০২৫উত্তর:
ক. আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা এ দেশে জন্মেছি।
খ. আমাদের দেশে রয়েছে সুন্দর প্রকৃতি।
গ. কোথায় পাহাড়, কোথায় নদী, কোথায়-বা এর সমুদ্রের বেলাভূমি।
ঘ. একই দেশ, অথচ কত বৈচিত্র্য।
ঙ. দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র এই সব।
চ. দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই সার্থক হয়ে উঠবে আমাদের জীবন
*লেখক: খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকে বর্ষবরণ
পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতিতে অমলিন এক উৎসবের নাম। নানা উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি নববর্ষের প্রথম দিনে নতুন পোশাক পরার রীতি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। উৎসবের এসব পোশাকে থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ।
যে কোনো উৎসব-পার্বণে বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাক শাড়ি। বৈশাখ হলে তা আরও বেড়ে যায়। প্রতি বৈশাখেই তাই বাহারি শাড়ির পসরা সাজায় ফ্যাশন হাউসগুলো। শাড়ির সুতায় বা জামদানিতে ফুটে ওঠে একটি শাশ্বত রীতি, যা অতীতের গাঁথুনি আর বর্তমানের চেতনা একত্র করে। বাহারি রঙের শাড়ির উজ্জ্বলতা, কোমলতা– সবকিছু যেন নতুন কিছু শুরুর আহ্বান জানায়।
অন্যদিকে পহেলা বৈশাখে ছেলেরা নিজেদের সাজায় পাঞ্জাবির সাজে। আজকাল শুধু লাল-সাদা নয়, অন্যান্য উজ্জ্বল রংও প্রাধান্য পায় পাঞ্জাবিতে। বেলবুট, কুর্তা এবং ধুতি-চাদর পরিধানে পহেলা বৈশাখে পুরুষদের চেহারায় ফুটে ওঠে এক চিরন্তন সৌন্দর্য।
যদিও বৈশাখের পোশাকের মধ্যে ঐতিহ্যিক শাড়ি এবং পাঞ্জাবির জনপ্রিয়তা অটুট, তবে আধুনিক সময়ের স্পর্শেও বৈশাখের পোশাকে নতুনত্ব এসেছে। ফিউশন স্টাইলের পোশাক এখন অনেকের কাছে প্রিয়। নারীরা এখন শাড়ির সঙ্গে পরছেন আধুনিক ব্লাউজ অথবা ফতুয়া, কুর্তার সঙ্গে লেহেঙ্গা। আবার ছেলেরা পাঞ্জাবি, কুর্তা এবং চমৎকার কটন বা সিল্কের শার্টের সমন্বয়ে এক নতুন সাজে নিজেদের রাঙাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নিত্যনতুন ডিজাইন, প্রিন্ট এবং বৈশাখী পোশাকের রঙের মিশেল পোশাকশিল্পে এক ভিন্ন মাধুর্য নিয়ে এসেছে।
বৈশাখের পোশাকে রঙের প্রতি সবার আলাদা আকর্ষণ থাকে। বৈশাখ মানেই অনেকের কাছে লাল-সাদা পোশাকের বাহার। তবে ফ্যাশনবোদ্ধাদের অনেকে এখন এ ট্রেন্ড থেকে বেরিয়ে এসেছেন। কেউ একরঙা আবার কেউ নানা রঙের বর্ণিল পোশাক রেখেছেন পছন্দের তালিকায়। লাল-সাদার পাশাপাশি হলুদ, বেগুনি, কমলা, মেরুন, নীল, সবুজ, গোলাপি, বাদামিসহ প্রায় সব রংই প্রাধান্য পাচ্ছে বৈশাখী পোশাক তৈরিতে।
ফ্যাশনবোদ্ধাদের মতে, গত কয়েক বছর পহেলা বৈশাখ রোজার সময়ে হওয়ায় উৎসবের আমেজে ভাটা ছিল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় নববর্ষকে ভিন্ন আঙ্গিকে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করবে বলে ফ্যাশনপ্রেমী বাঙালিরা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পরপরই শুরু হয়ে গেছে বৈশাখের বর্ণিল আয়োজন। যেখানে ফ্যাশন ডিজাইনাররা পোশাকে ফুটিয়ে তুলেছেন ভিন্নমাত্রার শৈল্পিক ছোঁয়া। পোশাকে রঙের পাশাপাশি উঠে এসেছে বাঙালি ঐতিহ্যের মোটিফ আর কারুকার্য।
এখন যেহেতু রোদের তীব্রতা বেশি তাই গরমের কথা চিন্তা করে ফ্যাশন ডিজাইনাররা সুতি কাপড়কে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন।
এবার গরমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুতি কাপড়ের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ আর পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি থাকছে। হ্যান্ড প্রিন্ট, ব্লক, বাটিক, অ্যাপ্লিকের কাজ, নকশি কাজের বাহারি ডিজাইন ফুটে উঠেছে বৈশাখের পোশাকে। পাশাপাশি রঙের বাহারি মেলা তো থাকছে। লাল-সাদা রংকে প্রাধান্য দিয়ে এর ওপর করা হয়েছে বাহারি সব নকশা।
বৈশাখের পোশাক নিয়ে ফ্যাশন হাউস ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর কর্ণধার সৌমিক দাস বলেন, “আমরা বৈশাখের ডিজাইনে দুটি বিশেষ থিম নিয়ে কাজ করেছি। তার মধ্যে একটি হলো ‘কাঠের পুতুল’। কাঠের পুতুল বাঙালির লোকশিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অনন্য নিদর্শন হিসেবে সমাদৃত। সাধারণত হাতে তৈরি করা পুতুলের দেহজুড়ে থাকে নিখুঁতভাবে খোদাই করা দারুণ ডিজাইন ও তার সঙ্গে নানা রকম উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার। সেসব অতুলনীয় নকশার ছাপই আমরা ফুটিয়ে তুলেছি এবারের নববর্ষের পোশাকে। এ ছাড়া একটু বৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে ‘কাঠের পুতুল’-এর নকশার পাশাপাশি ‘মুখোশ’-এর থিমও ডিজাইনে রয়েছে।”
পোশাকের রঙের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বৈশাখী উৎসবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে লাল, মেরুন ও সাদার সঙ্গে বিভিন্ন হালকা অথচ উজ্জ্বল রঙের নানারকম শেড। গরমের কথা বিবেচনায় রেখে কাপড়ে আরামের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে।’
বিশ্বরঙের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে এবারের বৈশাখে মোটিফের উৎস হচ্ছে চিরচেনা ‘প্রকৃতি’। পোশাক অলংকরণের অনুষঙ্গ হিসেবে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান প্রাধান্য পেয়েছে। পোশাকের প্যাটার্নেও এসেছে ভিন্নতা। গরমের কথা মাথায় রেখে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি ও খাদি কাপড়। পোশাকগুলোয় উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে উজ্জ্বল রংয়ের ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে– টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিন প্রিন্ট এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রিন্ট।
কে ক্র্যাফটের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার খালিদ মাহমুদ খান জানান, এবারের বর্ষবরণের উৎসবে দেশীয় ঐতিহ্যকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে নানা রকম পোশাকে। তিনি আরও জানান, পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক বিষয়টি মাথায় রেখে ফেব্রিক হিসেবে নেওয়া হয়েছে কটন, জ্যাকার্ড কটন, সুইস কটন, হ্যান্ডলুম কটন, লিনেন, জর্জেট, সিল্ক, জয়শ্রী সিল্ক, হাফ সিল্ক ও অরগাঞ্জা।
ফ্যাশন হাউস হরিতকীর সহপ্রতিষ্ঠাতা বলরাম পাল বলেন, বৈশাখে বরাবরই সাদা শাড়ি লাল পাড় মেয়েদের প্রথম পছন্দ। একঘেয়েমি কাটাতে আমরা সাদা শাড়ি লালচে খয়েরি রঙের মধ্যে ছোটবেলার লোকজ ছড়া কবিতা ও শিশুতোষ বইয়ের লোকজ ইলাস্টেশন নিয়ে শাড়ির ডিজাইন করেছি। এবার বৈশাখে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ঘিয়ে বা ক্রিম কালারের শাড়ি।
আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনন্দের রং– সবকিছু মিশে একাকার হয়ে এই বিশেষ দিনটিকে বাঁচিয়ে রাখে। নববর্ষের এ সাজপোশাক শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মনের ভেতরেও নতুন আশার জাগরণ ঘটাবে– এটাই প্রত্যাশা।