পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার, শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 9th, March 2025 GMT
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম মোজাম্মেল হক ওরফে মানিক (৫০)। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল পবিত্র রমজান মাসের ছুটিতে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীকে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। গতকাল ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে যায়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে মোজাম্মেল তাদের ছুটি দেন। কিন্তু বাড়িতে আসার সময় মোজাম্মেল ভুক্তভোগী ওই শিশুশিক্ষার্থীকে আবার বিদ্যালয়ে ডেকে নেন। পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি দেখান। বাড়িতে গিয়ে শিশুটি তার মাকে সব বলে দেয়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্ত মোজাম্মেল হককে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ভূল্লি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার সকালে মোজাম্মেলকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতে তোলার সময় মোজাম্মেলকে দেখেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার আজ বেলা ১১টায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়।
ভূল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, আজ সকালে ধর্ষণ মামলার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ‘শিশু ধর্ষণে’ মীমাংসার সালিস থেকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
কুমিল্লা লালমাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবরেরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সালিস বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে এলে সালিস বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়, পরে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
সালিসে উপস্থিত ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিস বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা রায় করেছিল সালিসের বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে মাতবরের কাছে ২ হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।
স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।