১৯৯৩ সালের ১২ নভেম্বর মুক্তি পায় আলোচিত হিন্দি সিনেমা ‘বাজিগর’। সিনেমাটির প্রধান তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেন— শাহরুখ খান, শিল্পা শেঠি ও কাজল। সিনেমাটির একটি দৃশ্যে, বাড়ির ওপর থেকে শিল্পাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন শাহরুখ। এই দৃশ্যটিও এখন অন্তর্জালে ভাইরাল। কারণ এ দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা একটি চলচ্চিত্র উৎসবে শেয়ার করেছেন শিল্পা।

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের শুরুর ঘটনা বর্ণনা করে শিল্পা শেঠি বলেন, “সেই সময়ে চলচ্চিত্র সম্পর্কে কোনো জ্ঞান ছিল না। জানতাম না কীভাবে অভিনয় করতে হয়। আমি শুটিং সেটে একজন ছাত্রীর মতো ছিলাম। প্রথমদিকে তো খুব নার্ভাস থাকতাম। আমি দক্ষিণ ভারতের, তাই সেটে কখনো হিন্দিতে কথা পর্যন্ত বলতে পারিনি।”

হিন্দি ভাষা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সেই স্মৃতিচারণ করে শিল্পা শেঠি বলেন, “আমি যখন ‘আগ’ সিনেমা করি, তখন কাদের ভাইকে উর্দু শিখিয়ে দিতে বলতাম। আমি শুরু থেকেই শিখছিলাম। সংলাপ বলার সময়ে আমি খুবই নার্ভাস অনুভব করতাম। তারপরও সবকিছু ঠিক ছিল কারণ আমি প্রকাশ করতে পারি। আমি কী বলতে চাইছি, মানুষ তা বুঝতে পারতেন।”     

আরো পড়ুন:

নায়ক শাহরুখ, তবু অভিনয়ের প্রস্তাব ফেরান কাজল

আমি একজন ব্লাডি স্টার: শাহরুখ

‘বাজিগর’ সিনেমার সেই দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শিল্পা শেঠি বলেন, “আকবর ভাই সিনেমাটির অ্যাকশন ডিরেক্টর ছিলেন। আমরা সেই দৃশ্যটি প্রায় পাঁচবার শুট করেছি। আমার কোমরে প্রায় ৮-১০ বছর ওই দাগটা ছিল। কারণ আমাকে এমন একটা বেল্ট পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার দাগ শরীর থেকে যায়নি।”

দৃশ্যটির শুটিং করতে গিয়ে পনেরোবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন শিল্পা। তার ভাষায়, “সেই সময় ভিএফএক্সের তেমন অপশন ছিল না। তাই নিজেকেই সবকিছু করতে হয়েছিল। আমি পড়ে যাচ্ছি এবং বাড়িটি কাঁপছে এটা দেখানোর জন্য এ ধরনের শুট করা হয়। কিন্তু নির্মাতারা ভেবেছিলেন দৃশ্যটি আরো ভালোভাবে শুট করা যেতে পারে। তাই দৃশ্যটির জন্য আমি প্রায় ১৫ বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছি।”

শিল্পা মনে করেন, নব্বই দশকে কেবল ভালোবাসা দিয়ে সিনেমা নির্মিত হতো। তার মতে— “শুটিং শেষ করে প্রযোজনাটি দেখে মনে হয়, শটটি হিন্দি সিনেমার একটি আইকনিক মুহূর্ত। কারণ আপনি কোনো নায়ককে একজন নিষ্পাপ নায়িকাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলতে দেখেননি। শাহরুখ খান ছিলেন অসাধারণ। নব্বইয়ের দশকে সিনেমাগুলো নির্মিত হতো নিছক ভালোবাসা দিয়ে, অর্থ দিয়ে নয়।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ইয়াছিন আরাফাত ওরফে শাকিল (২৮) নামের এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার রাত আনুমানিক পৌনে আটটার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা এক তরুণকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিয়েছিলেন ইয়াছিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ইয়াছিনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনও (২৫) আহত হয়েছেন। তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর এলাকাবাসী ধাওয়া করে হামলাকারীদের মধ্যে তিনজনকে ধরে ফেলেন। পরে তাদের পিটুনি দিয়ে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ তাদের আহত অবস্থায় আটক করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াছিনের চাচাতো ভাই আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, রাত আনুমানিক আটটার দিকে তিনি, ইয়াছিনসহ কয়েকজন গঙ্গাবর বাজারের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় একদল সন্ত্রাসী সেখানে আসে। তারা মো. লাবিব নামের এক তরুণকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইয়াছিন এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীদের একজন ইয়াছিনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। একই সময় কাছে থাকা ইয়াছিনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক এগিয়ে গেলে তাঁর ওপরও হামলা চলায় দুর্বৃত্তরা।

আবদুল হাকিম জানান, ঘটনার পরপরই তাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়াছিনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া একই ঘটনায় আহত মোজাম্মেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, দুর্বৃত্তরা কাছে থেকে ইয়াছিনের বুকে ও পেটে গুলি করেছে।

হাসপাতালে উপস্থিত গঙ্গাবর এলাকার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী খালিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ইয়াছিন যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি আরেকজনকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত ইয়াছিন পেশায় থাই অ্যালুমিনিয়ামের মিস্ত্রি ছিলেন বলে জানান খালিদ।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজীব আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে গুলিতে নিহত ইয়াছিন আরাফাত নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন কয়েকজন লোক। তাঁর বুকে গুলির দাগ দেখা গেছে। লাশ মর্গে আছে। একই ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লা আল ফারুক দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, একটি ছেলেকে তুলে নিতে এলে বাধা দেওয়ায় ওই যুবককে গুলি করা হয়। ওই ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন দুর্বৃত্তদের তিনজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আহত ব্যক্তিদের একজনের অবস্থা গুরুতর।

পুলিশ সুপার জানান, গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি দুর্বৃত্তরা ঘটনার পর পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পুকুর সেচ দিয়ে সেটি উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে। তা ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী থানায় আটক আছে’
  • ঈদগাঁওয়ে বজ্রপাতে লবণ শ্রমিকের মৃত্যু
  • এনসিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হলেন আবদুস সালাম
  • ৩৬ বছর পর মায়ের খুনি বাবার মুখোমুখি ছেলে
  • রাষ্ট্র ও পুলিশ নয়, আমাকে হয়রানি করিয়েছে কাছের বন্ধুরা: জয়
  • পদ্মায় মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, একজন গ্রেপ্তার
  • গাজীপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো ১ জনের মৃত্যু
  • নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও
  • বজ্রপাতে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু
  • সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী