বান্দরবানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চার যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৯ মার্চ) সকালে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মো.

রাশেদ (২৩), মো. কায়ছার (২২), ওমর ফারুক (১৮) ও মো. হানিফ (২৪)। তারা চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড জঙ্গল পদুয়া এলাকার বাসিন্দা। কায়ছার বাদে অন্য তিন আসামি পালাতক।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে চাঁদা না পেয়ে গৃহবধূকে মারধর, মামলা

নরসিংদীতে জুয়ার টাকা সংগ্রহে সহকর্মীকে হত্যা, ২ বন্ধু গ্রেপ্তার

মামলা সূত্রে জানা যায়, মো. রাশেদের সঙ্গে টেলিফোনে রঙ নম্বরে পরিচয় হয় কিশোরীর। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে রাশেদ ফোনে কিশোরীকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে পদুয়া এলাকায় আসতে বলেন। রাশেদের কথা বিশ্বাস করে পরদিন ওই কিশোরী আমিরাবাদ এলাকায় পৌঁছালে রাশেদ ফোনে বলেন, তার দেরি হবে এবং তার বন্ধু ওমর ফারুকের সঙ্গে যেন পদুয়ায় আসে।

পদুয়া পৌঁছালে সেখান থেকে কাজীর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে পাহাড়ি পথে জঙ্গল পথে বান্দরবানের ভাগ্যকুল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। সেখানে তারা কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। 

এসময় কিশোরীর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। তারা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেন এবং মো. রাশেদ, মো. কায়ছার ও ওমর ফারুককে আটক করে থানায় হস্থান্তর করেন। পরে কিশোরী বাদী হয়ে বান্দরবান থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আজ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আজ অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মো. কায়ছারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক।”

ঢাকা/চাইমং/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ