নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি
Published: 9th, March 2025 GMT
নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ, মৌন মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে যোগ দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, “দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি যাদের ধর্ষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তারাই ধর্ষণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। কেননা, তারা যথাযথভাবে কাজ করলে এ দেশে ধর্ষণ আজ এত বৃদ্ধি পেত না।”
আরো পড়ুন:
সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ
মাগুরার সেই শিশুকে সিএমএইচে স্থানান্তর
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নারীদের ওপর ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, দর্শন বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ, সংগীত বিভাগ, যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, টেলিভিশন ও ফিল্ম, বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগসহ অন্তত ২০টি বিভাগ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না তারা।
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় মৌন মিছিল করেন শিক্ষার্থী।
বেলা ১১টার দিকে লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে প্রথম মৌন মিছিল শুরু হয়। পরে স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় পাঠাগারের সামনে সমবেত হতে দেখা যায়।
ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশেও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/সৌরভ/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে হাত-পা বেঁধে মাথায় গরম পানি ঢালার অভিযোগ সন্তানদের বিরুদ্ধে
লাকসামে বাবার সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে না দেওয়ার জন্য বাবাকে হাত-পা বেঁধে গরম পানি মাথায় ঢেলে দিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাকসাম পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার এ ঘটনার ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোপালপুর গ্রামের বাড়ির উঠানে বৃদ্ধ বাবার হাত ধরে করছে টানাহেঁচড়া করছেন তার সন্তানরা। এসময় তারা বাবার গায়ের গেঞ্জিটাও টানতে টানতে ছিঁড়ে ফেলেন। বাবাকে টেনেহিঁচড়ে জবরদস্তি করে তাকে হাত পা বাঁধা হয়, এরপর গরম পানি বাবার মাথা ও মুখে ঢালেন তারই সন্তানেরা। এসময় ওই বৃদ্ধ বাবার আত্নচিৎকার করে বলেন ‘ও আল্লাহ রে, ও আল্লাহ, ও মা গো মা, ও ভাইরে ভাই, ও জসিমের মারে..., জসিমের মা আমারে বাঁচান, কে কোথায় আছেন- আমাকে বাঁচান, আমাকে মাইরা ফেলছে তারা...’। ওই নির্যাতন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই বাবার নাম আবদুল জলিল (৬০)। আর নির্যাতনকারীরা তার ছেলে, মেয়ে ও তার স্ত্রী। তারা হলেন- ছেলে শান্ত (২৮), নোমান (২০), রকি (১৬), মেয়ে নাজমিন (২৬), নুপুর (১৩) ও জলিলের স্ত্রী রিনা আক্তার (৪৫)।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী আবদুল জলিল বাদী হয়ে সন্তান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গোপালপুর গ্রামের মৃত হাজী ওয়ালীউল্লার ছেলে আবদুল জলিলের নামে বসতবাড়ি ও মাঠে ১২০ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। জলিলের স্ত্রীসহ তিন ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে শান্ত প্রবাসে থাকেন, সে প্রবাস থেকে ওই সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আবদুল জলিলকে হুমকি দেয় এবং বাড়িতে থাকা জলিলের অন্য সন্তানরা তাকে মারধর করেন। এছাড়া বাবাকে ভরণপোষণও দিচ্ছিলেন না তারা। এ নিয়েই সন্তান ও স্ত্রী সঙ্গে জলিলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় অনেক বার সামজিকভাবে শালিসও হয়েছে।
প্রতিবেশিরা বলছেন, বৃহস্পতিবার জলিলের সঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা-কাটাকাটি হয়। এসময় জলিল ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের চেষ্টা চালাতে গেলে তার ছেলে মেয়েরা বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাণ্ড চালায়।
নির্যাতনের শিকার আবদুল জলিল জানান, অনেক দিন ধরে আমার সন্তানরা সম্পত্তি নেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিচ্ছে। আমার স্ত্রী রিনা আক্তার এর প্রতিবাদও করে না। আমাকে তারা ভরণপোষণও দেয় না। ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে ঝামেলা করে। ওই দিন আমার সন্তানরা বাড়ির উঠানের মধ্যে আমাকে হাত-পা বেঁধে অনেক মেরেছে। হাত-পায়ে শরীরে এখনও দাগ আছে।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা শুক্রবার রাতে সমকালকে বলেন, নির্যাতনের ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা। এ ঘটনায় নির্যাতিত আবদুল জলিল থানায় স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তবে পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে অভিযোগটি আবার প্রত্যাহার করেছেন।
ওসি বলেন, এলাকায় বিষয়টি সামাজিকভাবে বিরোধ নিরসন ছাড়াও পরিবার নিয়ে থানায় এসেছেন। স্ত্রী ও সন্তানরাও বিষয়টি নিয়ে অনুতপ্ত।