বাংলাদেশের বাজারে নতুন দুই বৈদ্যুতিক বাইক এনেছে রিভো। ‘এ১০’ ও ‘এ১২’ মডেলের বাইক দুটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় যথাক্রমে ৩৫ ও ৪৭ কিলোমিটার। শুধু তাই নয়, একবার পূর্ণ চার্জে বাইক দুটি যথাক্রমে ৭৫ থেকে ৮৫ এবং ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার পথ চলতে পারে। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইভি লাইফ বিডির প্রদর্শনী কেন্দ্রে বৈদ্যুতিক বাইক দুটি বাজারে আনার ঘোষণা দেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ভেন নেইল। এ সময় ইভি লাইফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সোহেল বিন আজাদসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ভেন নেইল বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের মানুষ টেকসই ও সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহার করুক। ‘এ১০’ ও ‘এ১২’ মডেলের বৈদ্যুতিক বাইক দুটি আমাদের ক্রমাগত উদ্ভাবন ও উন্নতির প্রতিফলন। ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধার কথা মাথায় রেখেই বৈদ্যুতিক বাইকগুলো তৈরি করা হয়েছে। গ্রাফিন ব্যাটারি থাকায় বাইকগুলো দীর্ঘদিন স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা যাবে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ১২ মডেলের বাইকে রয়েছে ৬০ ভোল্টের ২৬ অ্যাম্পিয়ার আওয়ারের ব্যাটারি এবং ১ হাজার ওয়াটের মোটর। এর ফলে বাইকটি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৭ কিলোমিটার গতিতে স্বচ্ছন্দে পথ চলতে পারে। আসনের নিচে সুপরিসর জায়গা থাকায় হেলমেটসহ অন্যান্য বস্তু সহজেই রাখা যায়। মাটি থেকে বাইকটির উচ্চতা (গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স) ১৫৫ মিলিমিটার। বাইকটিতে আকারে বড় ডিজিটাল স্পিডোমিটার থাকায় সহজেই বাইকের যাবতীয় তথ্য জানার সুযোগ মিলে থাকে।

‘এ১০’ মডেলের বাইকটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার। ছয় থেকে সাত ঘণ্টায় পূর্ণ চার্জ হতে সক্ষম বাইকটিতে আসনের নিচে সুপরিসর জায়গা থাকায় হেলমেটসহ অন্যান্য বস্তু সহজেই রাখা যায়। মাটি থেকে বাইকটির উচ্চতা (গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স) ১২০ মিলিমিটার। বাইকটিতে এলইডি মিটারের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য হাইড্রোলিক ব্রেকও রয়েছে। ‘এ১০’ ও ‘এ১২’ মডেলের বাইক দুটির দাম ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা ও ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা। দুটি বাইকেই দুই বছরের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ ছয় মাস পর্যন্ত ডোরস্টেপ সার্ভিস পাওয়া যাবে।

সোহেল বিন আজাদ বলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে এক টাকায় বাইক জেতার সুযোগ দিচ্ছে রিভো। এই অফারের আওতায় ‘এ১০’ ও ‘এ১২’ মডেলের বৈদ্যুতিক বাইক কিনলেই তিনটি স্ক্র্যাচ কার্ড দেওয়া হবে। কার্ডগুলো ঘষে ১০ হাজার টাকা ক্যাশব্যাক, স্মার্ট ওয়াচ, এয়ারবার্ডস বা ‘এ১০’ বাইকসহ বিভিন্ন পুরস্কার জেতার সুযোগ পাবেন ক্রেতারা। ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই অফার চলবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ