কুমিল্লার ধর্মসাগরে ধরা পড়ছে ৫-৮ কেজির কোড়াল
Published: 9th, March 2025 GMT
কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ধর্মসাগর দিঘিতে ধরা পড়ছে সাগরের কোড়াল মাছ। গত কয়েকবছর যাবত সাগরের কোরালের চাষ হচ্ছে এই দিঘিতে ।
সম্প্রতি এই দিঘিতে মাছ শিকার শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই জেলেদের জালে কোড়াল মাছ ধরা পরছে। স্থানীয়রা অনেকেই দিঘির পাড়ে এসে ভিড় জমাচ্ছেন এবং জালে আটক হওয়া এসব কোরাল মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মাছ শিকারের জন্য বগুড়া সোনাতলা এলাকা থেকে এসেছে সাত জনের একটি দল। এই দলে থাকা জেলে লিটন চন্দ্র দাস জানান, গত কয়েকদিনে অন্তত ১৫ টি কোড়াল মাছ পাওয়া গেছে। এগুলোর গড় ওজন ৫-৮ কেজি। প্রতিকেজি কোড়াল বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে।
আরেক জেলে দুলাল মুন্সি জানান, শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল ৩ টায় ধর্মসাগর দিঘিতে জাল ফেলেছেন। তাদের জালে ৩ টা কোড়াল ধরা পড়ে। যার মধ্য ২টা কোরাল বিক্রি করেছেন ১৭ হাজার টাকায়। একটার ওজন ৬ কেজি, আরেকটির ওজন হয়েছে ৫ কেজি ৪শ গ্রাম। আরেকটি মাছ বিক্রির জন্য রয়ে গেছে।
দিঘিতে সাগরের কোড়াল চাষে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। দীঘির পশ্চিমপাড়ের বাসিন্দা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুবুল হক ছোটন বলেন, “কোড়াল সাগরের মাছ। সুস্বাদু মাছ। এখন দিঘিতে চাষ হচ্ছে জেনে কিছুটা অবাক হলাম।”
ধর্মসাগর দিঘিটি জেলা প্রশাসন ইজারা দেয়। বর্তমানে ইজারায় রয়েছেন ৪২ জন। তাদের একজন মো.
ইজারাদার তারেক আরো জানান, মূলত যেসব দিঘিতে পর্যাপ্ত ছোট মাছ আছে সেখানে কোড়াল চাষ করা সম্ভব। ছোট মাছ খেয়েই বড় হয় কোড়াল।
ঢাকা/রুবেল/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ
মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’
আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।
আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।
বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।