জামাতার কাঠের চেলার আঘাতে শাশুড়ির মৃত্যু
Published: 9th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কাঠের চেলা দিয়ে আঘাত করে শাশুড়িকে খুনের অভিযোগ উঠেছে জামাতার বিরুদ্ধে। আজ রোববার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওষখাইন পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম রশিদা বেগম (৪৫)। তিনি ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। অভিযুক্তের নাম হেলাল উদ্দিন (২৪)। তিনিও একই গ্রামের মো.
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, হেলালের সঙ্গে দুই বছর আগে রশিদা বেগমের মেয়ে হাফসা আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। আগে হেলাল মুদিদোকান করলেও বছরখানেক ধরে বেকার রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী হাফসা আক্তার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সংসারের খরচ চালানো নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকত হেলালের। এরই জেরে কিছুদিন আগে রশিদা বাবার বাড়ি চলে আসেন। গতকাল শনিবার রাতে কিছু টাকা চেয়ে হেলাল সেখানে যান। এ সময় স্ত্রীর সঙ্গে আবারও তাঁর ঝগড়াঝাঁটি হয়।
বাসিন্দারা জানান, ঝগড়ার জেরে ভোরে ঘরের অদূরে হাফসা আক্তার ও তাঁর ছোট ভাইকে দেখতে পেয়ে মারধরের উদ্দেশ্যে দৌড়ানি দেন হেলাল। এরপর শাশুড়িকে দেখতে পেয়ে তাঁকে কাঠের চেলা দিয়ে অতর্কিত আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই রশিদা বেগমের মৃত্যু হয়।
হাফসা আক্তার বলেন, বিয়ের আগে থেকেই তাঁর স্বামীর অনেক কর্জ। প্রতি মাসে এসব কর্জ শোধ করা নিয়ে দুজনের ঝগড়া হতো। গতকাল রাতে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় ঝগড়ার জেরে ভোরে তাঁকে দৌড়ানি দেন স্বামী হেলাল। তাঁকে ধরতে না পেরে তাঁর মাকে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন পলাতক। তাঁর ঘরও তালাবদ্ধ দেখা যায়। তাই অভিযুক্ত হেলালের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে নিহত রশিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, জামাতার আঘাতে শাশুড়ির মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ‘শিশু ধর্ষণে’ মীমাংসার সালিস থেকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
কুমিল্লা লালমাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবরেরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সালিস বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে এলে সালিস বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়, পরে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
সালিসে উপস্থিত ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিস বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা রায় করেছিল সালিসের বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে মাতবরের কাছে ২ হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।
স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।