অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের প্রতারণার হাত থেকে সুরক্ষা দিতে গুগল মেসেজেস অ্যাপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির নতুন সুবিধা চালু করেছে গুগল। ‘স্ক্যাম ডিটেকশন’ নামের এই প্রযুক্তি সন্দেহজনক বার্তা শনাক্ত করে ব্যবহারকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্ক করবে। এর ফলে প্রতারকদের পাঠানো বার্তা থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা।

গুগলের তথ্যমতে, প্রতারকেরা প্রথমে সাধারণ বার্তা পাঠিয়ে আস্থা অর্জন করলেও পরে ধাপে ধাপে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। আর তাই ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে স্মার্টফোনে কোনো বার্তা এলেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সন্দেহজনক বার্তা চিহ্নিত করবে স্ক্যাম ডিটেকশন। এরপর সন্দেহজনক বার্তার বিষয়ে ব্যবহারকারীকে তাৎক্ষণিক সতর্ক করবে। ব্যবহারকারী চাইলে বার্তাটি উপেক্ষা করতে বা প্রেরককে রিপোর্ট ও ব্লক করতে পারবেন।

প্রতারণা শনাক্তকরণের নতুন এ প্রযুক্তির বিষয়ে গুগল মেসেজেসের জ্যেষ্ঠ পণ্য ব্যবস্থাপক আলবার্তো পাস্তোর নিয়েতো বলেন, ‘প্রথাগত স্প্যাম সুরক্ষা প্রযুক্তি মূলত বার্তা পাঠানোর আগেই কাজ করে। কিন্তু নতুন ধরনের প্রতারণা কথোপকথনের মাঝখানে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে এবং ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলতে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল ব্যবহার করে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরি করেছি, যা কথোপকথনের ধরন বিশ্লেষণ করে সন্দেহজনক বার্তাগুলো শনাক্ত করতে পারবে এবং তাৎক্ষণিক সতর্ক করবে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবহারকারীর গোপনীয়তাও অক্ষুণ্ন থাকবে।’

স্ক্যাম ডিটেকশনের সুবিধাটি মূলত স্মার্টফোনের কন্ট্যাক্ট তালিকার বাইরে থাকা নম্বর থেকে পাঠানো সন্দেহজনক বার্তা শনাক্ত করে ব্যবহারকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্ক করবে। সুবিধাটি ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা গেলেও ব্যবহারকারীরা চাইলে স্প্যাম সুরক্ষা সেটিংস থেকে বন্ধ করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ইংরেজি ভাষায় বার্তা আদান–প্রদান করা ব্যবহারকারীরা এ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।

সূত্র: দ্য ভার্জ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সতর ক করব ব যবহ র প রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

চালু হলো চ্যাটজিপিটির নতুন সংস্করণ

প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ওপেনএআই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল জিপিটি ৫.২ উন্মুক্ত করেছে। আগের জিপিটি ৫.১ সংস্করণের পর তুলনামূলক দ্রুত এল এই সংস্করণ। এবারের হালনাগাদে কথোপকথনের ভঙ্গির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যুক্তির ধারাবাহিকতা, দীর্ঘ কাজ সামলানোর ক্ষমতা ও সামগ্রিক নির্ভরযোগ্যতার ওপর। ওপেনএআই জানিয়েছে, জিপিটি ৫.২ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন সে নিজের সিদ্ধান্ত ও বিশ্লেষণ আরও পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে জটিল কাজ বা আলোচনায় স্থিরভাবে যুক্ত থাকতে পারে।

ওপেনএআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ ব্যবহারকারীর কাছে প্রযুক্তিগত সাফল্যের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দৈনন্দিন সব কাজে এআই কতটা কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য হয়। সেই লক্ষ্যে নতুন মডেলের উন্নয়ন করা হয়েছে। চ্যাটজিপিটি ৫.২ আগের মতোই তিনটি সংস্করণে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ইনস্ট্যান্ট, থিংকিং ও প্রো সংস্করণ ব্যবহার করা যাবে। সক্ষমতা ও প্রক্রিয়াকরণ শক্তির দিক থেকে সংস্করণগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পড়াশোনা, পেশাগত কাজ, গবেষণাসহ নানা প্রয়োজনে নিয়মিত ব্যবহারের কথা মাথায় রেখেই নতুন মডেল তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওপেনএআই।

ওপেনএআইয়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিপুল তথ্য বিশ্লেষণ ও পেশাগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো কাজে জিপিটি ৫.২ আগের সংস্করণের তুলনায় ভালো ফল করেছে। জিডিপিভ্যাল নামের একটি মূল্যায়নে অর্থনীতি, আইন, পরামর্শক সেবাসহ ৪৪টি পেশাগত খাতের কাজ যুক্ত ছিল। সেখানে জিপিটি ৫.২ প্রায় তিন–চতুর্থাংশ ক্ষেত্রে মানববিশেষজ্ঞদের সমান বা বেশি দক্ষতা দেখিয়েছে। জিপিটি ৫.২ কোনো জটিল প্রশ্নকে ধাপে ধাপে বিশ্লেষণ করতে পারে। সমাধানের জন্য একটি সুস্পষ্ট কাঠামো তৈরি করে সেই অনুযায়ী উত্তর দেয়। এর ফলে দীর্ঘ আলোচনায় বিষয় থেকে বিচ্যুত না হয়ে যুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে।

জিপিটি ৫.২ সংস্করণে মেমোরির বড় উন্নতির কথাও জানিয়েছে ওপেনএআই। তাদের দাবি, এই মডেল একই সঙ্গে কয়েক লাখ শব্দের তথ্য নির্ভুলভাবে ধরে রাখতে পারে। দীর্ঘ প্রতিবেদন, আইনি নথি বা একাধিক ফাইল নিয়ে গঠিত প্রকল্প একসঙ্গে দিলে আগের মতো প্রসঙ্গ হারানোর সমস্যা কমেছে। এই সুবিধার ফলে শিক্ষার্থীরা একাধিক পাঠ্য উপকরণ দিয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে পারবেন। একইভাবে উদ্যোক্তারা আর্থিক প্রতিবেদন আপলোড করে ব্যবসায়িক প্রবণতা বা কৌশলগত পরামর্শ নিতে পারবেন। বড় প্রেক্ষাপট ধরে রাখার ক্ষেত্রে আগের সীমাবদ্ধতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে নতুন মডেল। এই উন্নতি শুধু লিখিত তথ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। চার্ট, ডায়াগ্রাম, সফটওয়্যার ইন্টারফেস কিংবা জটিল স্ক্রিনশট বোঝার ক্ষেত্রেও জিপিটি ৫.২ সংস্করণ আগের চেয়ে বেশি দক্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ওপেনএআই।

জিপিটি ৫.২ সংস্করণে নির্ভরযোগ্যতার উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ওপেনএআই। আগের সংস্করণের তুলনায় এতে ভুল তথ্য তৈরি বা হ্যালুসিনেশনের হার প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। যদিও ভুল পুরোপুরি নির্মূল হয়নি, তবে আগের তুলনায় তা কম ও সহজে শনাক্তযোগ্য। টুল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এই উন্নতির প্রমাণ মিলেছে। নতুন সংস্করণে মানসিক স্বাস্থ্য বা আবেগগত সংকটের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে কথোপকথনের ক্ষেত্রেও আরও দায়িত্বশীল প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কথা জানিয়েছে ওপেনএআই।

চ্যাটজিপিটি ৫.২ ধাপে ধাপে প্লাস, প্রো, গো, বিজনেস ও এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তিন মাসের মধ্যে চ্যাটজিপিটি ৫.১ সংস্করণের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে।

সূত্র: টেকরাডার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চালু হলো চ্যাটজিপিটির নতুন সংস্করণ
  • হেডফোনে সরাসরি অনুবাদ শোনাবে গুগল ট্রান্সলেট