চারদিনেও জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, কৃত্রিম উপায়ে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস
Published: 9th, March 2025 GMT
এখনও জ্ঞান ফেরেনি লাইফ সাপোর্টে থাকা মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটির। তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাকে সেখানে নেওয়া হয়।
শিশুটির মামা জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিকেলে শিশুটিকে দেখতে অসংখ্য মানুষ আইসিইউতে ভিড় করায় শিশুটির সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। এমন অবস্থায় তাকে সিএমএইচ-এ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই হাসপাতালেও শিশুটি আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি বলে চিকিৎসকরা তার আত্মীয়দের জানিয়েছেন।
এর আগে ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। চিকিৎসার জন্য পেডিয়াট্রিক, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, অ্যানেসথেসিয়া ও গাইনি ডিপার্টমেন্ট মিলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.
এদিকে ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে গতকাল মাগুরা সদর থানায় মামলা করেছেন। এতে আসামি করা হয়েছে চারজনকে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলো– শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ, সজিবের ভাই রাতুল শেখ, বাবা হিটু শেখ ও মা জাবেদা বেগম। এজাহারে বলা হয়েছে, আট বছরের শিশুটিকে ধর্ষণ করে তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ।
বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত বুধবার রাতে মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় সে। বৃহস্পতিবার সকালে অচেতন অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন হিটুর স্ত্রী জাবেদা বেগম। পরে তিনি পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর স্বজন হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে আনা হয় ঢামেক হাসপাতালে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, দুপুরে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে আসেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। উপদেষ্টার নির্দেশ ও শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে শিশুটিকে বিকেলে সিএমএইচে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্বজন জানান, খাওয়া-দাওয়া না করায় শিশুটির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপর তাঁকে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেওয়া হয়েছে।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, এজাহারভুক্ত চারজনকে আগেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। রোববার তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এজাহারে যা বলা হয়েছে: শিশুটির মা ঢাকা থেকে স্বামী ও বড় মেয়েকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন রাতে বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা করে। এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বড় মেয়েকে তার শ্বশুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও প্রতিবাদ কেউ করেনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ অবস থ র বড় ম য়
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৮ জনকে গণপিটুনি
রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ছিনতাইকারী সন্দেহে আটজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে দুপুরে মধ্যে এসব ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের ভাষ্য, ছিনতাইকারী সন্দেহে যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকায় চারজনকে, চকবাজারে দুজনকে, মতিঝিল ও ভাটারায় দুজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারজানা আক্তার বলেন, যাত্রাবাড়ীর কোনাবাড়ী এলাকায় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ছিনতাইকারী সন্দেহে চারজনকে স্থানীয় জনগণ পিটুনি দিয়েছে। পরে খবর পেয়ে সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।
যাত্রাবাড়ীতে গণপিটুনিতে আহতরা হলেন নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৩৬), রবিউল ইসলাম (৪০), রিপন মিয়া (৪২) ও সোহাগ মিয়া (৫৪)।
এদিকে মতিঝিলের এজিবি কলোনি এলাকায় এক নারীর ব্যাগ নিয়ে পালাতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়ে তন্ময় (১৭) নামের এক কিশোর। পরে সংবাদ পেয়ে মতিঝিল থানা-পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়। এ ছাড়া চকবাজারের বকশীবাজার এলাকায় কাগজের কার্টন চুরির অভিযোগে মো. অপু (১৮) ও মো. আলী (৩২) নামের দুজনকে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় লোকজন।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম বলেন, দুজনকে উদ্ধার করে বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অন্যদিকে ভাটারা থানার সোলমাইদ এলাকায় আজ সকালে একটি বাসা থেকে মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ চুরি করে পালাতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়েন মানিক মিয়া (২৩) নামের এক যুবক। এরপর তাঁকে মারধর করা হয়। পরে সংবাদ পেয়ে সেখান থেকে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান তাঁকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।