রাজধানীর পুরান ঢাকায় ‘ধারালো’ বস্তুর আঘাতে আহত কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম রাজা (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সেলিম।

পরিবার বলছে, গত শুক্রবার বিকেলে কোতোয়ালি থানার ইসলামপুরে বোন জামাইয়ের কাঁচির আঘাতে আহত হন সেলিম। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেলিমের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো.

ফারুক। তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির বড় ভাই মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সেলিমের কাপড়ের ব্যবসা আছে। টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে ছোট বোন জামাই সুমনের সঙ্গে বেশ কিছু ধরে তাঁর ঝামেলা চলছিল। এই বিষয় সমাধানের জন্য শুক্রবার পারিবারিকভাবে ইসলামপুরে সেলিমের অফিসে বসা হয়। আলোচনা চলাকালে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সুমন অফিসে থাকা কাঁচি দিয়ে সেলিমকে আঘাত করেন। আহত সেলিমকে প্রথমে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দিবাগত রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

অভিযোগের বিষয়ে সুমনের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

সেলিমের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম নুরুল হক মুন্সি। সেলিম পুরান ঢাকার ইসলামপুরে পরিবার নিয়ে থাকতেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ