ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে পিএমআই সূচকের মান কমেছে। দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে অর্থনীতির প্রধান চারটি খাতের সম্প্রসারণের গতি কমেছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে পিএমআই সূচকের মান ছিল ৬৪ দশমিক ৬। জানুয়ারি মাসে যা ছিল ৬৫ দশমিক ৭। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে সূচকের মান কমেছে ১ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট। এর অর্থ হলো, জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি কমেছে।

দেশের অর্থনীতির প্রধান চারটি খাত নিয়ে এই সূচক প্রণয়ন করা হয়। সেই চারটি খাত হলো উৎপাদন, কৃষি, নির্মাণ ও সেবা। দেখা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষি ও উৎপাদন খাতের সম্প্রসারণের গতি বাড়লেও নির্মাণ ও সেবা খাতের সম্প্রসারণের গতি কমেছে।

কৃষি খাতের সূচকের মান জানুয়ারি মাসে ছিল ৫৮ দশমিক ৬, ফেব্রুয়ারি মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ দশমিক ৪। উৎপাদন খাতে জানুয়ারি মাসে সূচকের মান ছিল ৬৮ দশমিক ৫, জানুয়ারি মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ দশমিক ৬।

নির্মাণ খাতে জানুয়ারি মাসের পিএমআই সূচকের মান ছিল ৬৩, ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৯ দশমিক ৬। জানুয়ারি মাসে সেবা খাতের সূচকের মান ছিল ৬৬ দশমিক ৩, ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৩।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি সংকোচনের ধারায় চলে গিয়েছিল। অক্টোবর মাসে তা আবার সম্প্রসারণের ধারায় ফিরে আসে। নভেম্বরে এই গতি বাড়লেও ডিসেম্বরে সম্প্রসারণের গতি শ্লথ হয়ে যায়। জানুয়ারি মাসে গতি কিছুটা বাড়ে। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে তা আবার কিছুটা কমেছে।

পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হয়। সূচকের মান ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং ৫০-এর নিচে হলে সংকোচন বোঝায়। আর মান ৫০ থাকলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট খাতে ওই মাসে কোনো পরিবর্তন হয়নি। গত বছরের জুলাইয়ে একধাক্কায় পিএমআই মান ৩৬ দশমিক ৯ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। আগস্টে তা কিছুটা বেড়ে ৪৯ দশমিক ৭ পয়েন্ট হয়। আর অক্টোবরে এসে ৫৫ দশমিক ৭ পয়েন্টে উঠে আসে। এর পর থেকে অর্থনীতি সম্প্রসারণের ধারায় আছে।

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের শতবর্ষের পুরোনো সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ এক বছর ধরে যৌথভাবে পিএমআই প্রণয়ন করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দশম ক ৬

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করবে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল (এসএসি) গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ফলে, আগের নয় সদস্যের শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বাতিল হতে যাচ্ছে।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৮ মে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেন। দেশের পুঁজিবাজারে ইসলামী শরিয়াভিত্তিক বিভিন্ন প্রকার সিকিউরিটিজ ইস্যু আনা, ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট গঠন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করেছিল বিএসইসি। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সিকিউরিটিজ মার্কেট শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল) বিধিমালা, ২০২২ নামে গেজেটটি প্রকাশ করা হয়।

শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের কাজ হলো— বিএসইসির চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন ইস্যুতে পরামর্শ দেওয়া, শরিয়াহ-সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন, ইসলামী শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের মান প্রণয়ন, কোনো সিকিউরিটিজ শরিয়াহসম্মত কি না, সে বিষয়ে মতামত দেওয়া।

গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বিএসইসি পুঁজিবাজারের জন্য গঠিত শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত

বিএসইসির পক্ষ থেকে শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আলোচনা ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশনের ২০২৩ সালের ২৮ মে জারি করা আদেশের মধ্যেমে গঠিত শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বিলুপ্ত করা হবে। একইসঙ্গে নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করা হবে।

কমিশন আরো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের জন্য ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জারি করা আদেশের মাধ্যমে গঠিত কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ইস্যু করতে এবং ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট গঠন করতে কমিশন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের প্রয়োজন মনে করছে। এজন্য নয় সদস্যের শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলের জন্য নির্বাচিত পাঁচ জন শরিয়াহ স্কলার হলেন—অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ (ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মুফতি শহীদ রাহমানী (চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, সেন্টার ফর ইসলামিক ইকোনমিকস বাংলাদেশ), মুফতি ইউসুফ সুলতান (ফাউন্ডার অ্যান্ড চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, এডিএল অ্যাডভাইজরি, মালয়েশিয়া), মুফতি ড. ওয়ালিউর রহমান খান (ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিনিধি) এবং মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ (খতিব, সোবহানবাগ মসজিদ অ্যান্ড মাদ্রাসা কমপ্লেক্স)।

ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট চার সদস্য হলেন—অধ্যাপক আবু তালেব (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং এক্সপার্ট), এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল (লিগ্যাল এক্সপার্ট), অধ্যাপক মো. নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া (অ্যাকাউন্টিং এক্সপার্ট) এবং মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপার্ট)।

শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ নিয়ে আসার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজে আগ্রহী দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরো উৎসাহী হবেন।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করবে বিএসইসি
  • ব্যাংক-সম্পর্কিত তিন অধ্যাদেশের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে আইএমএফ
  • ‘পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপ’ পুনর্গঠন
  • বাংলাদেশের নদীতে চীনের সহায়তা: ভালো হবে না মন্দ হবে?