এক মাদক কারবারির জন্য পুলিশের কত রকম কাণ্ড
Published: 9th, March 2025 GMT
অস্ত্র, মাদক, হত্যাসহ ৪৮ মামলার এক আসামিকে মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে নানামুখী জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। প্রথমে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করা হেরোইনের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন গায়েব করে দেওয়া হয়। তারপর উদ্ধার করা বস্তু হেরোইন নয় উল্লেখ করে জাল প্রতিবেদন বানিয়ে নথিতে সংযুক্ত করা হয়। ভবিষ্যতে যাতে আর পরীক্ষার সুযোগ না থাকে, সে জন্য থানায় রক্ষিত আলামত লুট হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এ দাবির পক্ষে তারিখবিহীন যে জিডির বরাত দেওয়া হয়েছে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
রাজধানীর দারুস সালাম থানার একটি মামলার তদন্ত নিয়ে এত সব কর্মকাণ্ড ঘটে গেলেও তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, ‘তিনি কোনো কিছু না বুঝে’ এবং ‘সরল বিশ্বাসে’ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত নিয়েই তিনি এটা করেছেন।
যদিও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বললেন, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। জালিয়াতির বিষয়টি তাঁদের ‘নলেজে’ আসেনি।
পটেটো রুবেল নামে পরিচিত এই আসামি মিরপুর এলাকার একজন চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী। কল্যাণপুর–দারুস সালাম এলাকায় তাঁর একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে, যারা এলাকায় কিশোর গ্যাং নামে পরিচিত।পুলিশের মিরপুর বিভাগের একজন কর্মকর্তাআলোচিত এই মামলা [মামলা নং ৮ (৭)২৪] রাজধানীর মিরপুর অঞ্চলের দারুস সালাম থানায় করা হয় গত বছরের ৭ জুলাই। ওই দিন মিরপুরের টোলারবাগ এলাকা থেকে ৩০০ গ্রাম হেরোইনসহ এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শান্তনুর হোসেন ওরফে পটেটো রুবেলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার দাস মামলা করেন। সেই থেকে এই আসামি কারাগারে আছেন।
মামলার পর নিয়মানুযায়ী উদ্ধার করা হেরোইনের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর সিআইডি প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, আলামতে হেরোইনের অস্তিত্ব মিলেছে। মামলার নথিতে (কেস ডকেট) এসব বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে।
পরবর্তী সময়ে সিআইডির এই প্রতিবেদন গায়েব করে দিয়ে একটি জাল প্রতিবেদন নথিতে সংযুক্ত করা হয়। যাতে বলা হয়, আলামতে হেরোইনের অস্তিত্ব মেলেনি। এরপর আসামি শান্তনুর হোসেন ওরফে পটেটো রুবেলকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠায় দারুস সালাম থানা পুলিশ।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পটেটো রুবেল নামে পরিচিত এই আসামি মিরপুর এলাকার একজন চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী। কল্যাণপুর–দারুস সালাম এলাকায় তাঁর একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে, যারা এলাকায় কিশোর গ্যাং নামে পরিচিত। রুবেলের বিরুদ্ধে দুটি খুনের মামলাও রয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে দারুস সালাম এলাকায় সিয়াম খান নামের এক কিশোরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার নেতৃত্বে ছিলেন এই রুবেল।
এমন কনক্লুসিভ (চূড়ান্ত) কিছু যদি হয়, সেটা আমরা দেখতে পারি। আমাদের নলেজে এলে আমরা দেখব। এমন কিছু আমাদের নলেজে নেই। আর যদি অস্তিত্বই (মাদকের) না থাকে, আমরা চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিতে পারি না।ডিসি মাকছুদের রহমানওই কর্মকর্তার মতে, এমন একজন পেশাদার অপরাধীকে অব্যাহতি দিতে যেভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে, তাতে এটা প্রতীয়মান হয় যে এর নেপথ্যে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। কেবল এসআই পদমর্যাদার একজন তদন্ত কর্মকর্তার একার পক্ষে এত কিছু করা সম্ভব নয়। আরও কারও না কারও যোগসাজশ থাকার সম্ভাবনা বেশি।
জানা গেছে, পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাকছুদের রহমান এই মামলার তদারকি করেন। তিনি দাবি করেন, সিআইডির রাসায়নিক প্রতিবেদন দেখে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, রাসায়নিক পরীক্ষায় অস্তিত্ব না পেলে হেরোইন হোক আর যা–ই হোক, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া যায় না।
কিন্তু যে রাসায়নিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, সেটি জালিয়াতি করে তৈরি করা হয়েছে, সিআইডিও সেটি নিশ্চিত করেছে। এই জালিয়াতির জন্য আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি মাকছুদের রহমান গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, এমন কিছু তাঁর নলেজে নেই। তিনি বলেন, ‘এমন কনক্লুসিভ (চূড়ান্ত) কিছু যদি হয়, সেটা আমরা দেখতে পারি। আমাদের নলেজে এলে আমরা দেখব। এমন কিছু আমাদের নলেজে নেই। আর যদি অস্তিত্বই (মাদকের) না থাকে, আমরা চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিতে পারি না।’
জাল প্রতিবেদন ও ‘সরল’ বিশ্বাসমামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামি পটেটো রুবেলের বিরুদ্ধে করা এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দারুস সালাম থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল আহাম্মদ। তিনি গত বছরের ১৭ জুলাই ২ গ্রাম আলামত (হেরোইন) পরীক্ষার জন্য সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠান। ৩১ জুলাই সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দারুস সালাম থানায় পাঠায়। থানার সেরেস্তারের মাধ্যমে ১৩ আগস্ট সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষার এই প্রতিবেদন তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা জুয়েল আহাম্মদের কাছে আসে। সেই প্রতিবেদনে (সিআইডির প্রতিবেদন নম্বর ১৩৭৬০) উল্লেখ করা হয়, আলামতে হেরোইনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
গত বছরের ১৫ অক্টোবর জুয়েল আহাম্মদ খাগড়াছড়িতে বদলি হন। ১৬ অক্টোবর মামলাটির তদন্তভার পান এসআই মিরাজুল ইসলাম। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডির রাসায়নিক প্রতিবেদন মামলার নথিপত্র (কেস ডকেট) থেকে গায়েব হয়ে যায়।
নথিতে ২৩ নভেম্বর এসআই মিরাজুল ইসলাম নোট লেখেন যে সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন তিনি পাননি। তাই প্রতিবেদন পেতে তিনি সিআইডিতে নতুন করে আবেদন করেছেন। পরে ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পেয়েছেন মর্মে ১৩ ডিসেম্বর কেস ডকেটে আবার নোট লেখেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। তাঁর সংযুক্ত করা এই প্রতিবেদনে বলা হয়, আলামত রাসায়নিক পরীক্ষা করে হেরোইন পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী সময়ে এই জাল প্রতিবেদন ব্যবহার করে শান্তনুর হোসেন ওরফে পটেটো রুবেলকে অব্যাহতি দিতে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতে পাঠানো নথিতে সংযুক্ত প্রতিবেদনটির অনুলিপি নিয়ে গত বুধবার সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে যাচাই করতে যায় এই প্রতিবেদক। সেখানকার কর্মকর্তারা প্রতিবেদনটি দেখেই নিশ্চিত করেন যে এটা জাল প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনটিতে কর্মকর্তাদের সিল ও স্বাক্ষর এমনভাবে জাল করা হয়েছে, সেটি দেখে তাঁরা বিস্মিত হন। একজন কর্মকর্তা বলেন, এই প্রতিবেদন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি জাল করা হয়েছে। তবে খুব ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে, জাল প্রতিবেদনটিতে কোনো নম্বর নেই। যদিও তাঁদের প্রতিটি প্রতিবেদনের একটি রিপোর্ট নম্বর থাকে।
এ ছাড়া আলামতে মাদকের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলে রাসায়নিক প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘পাওয়া যায় নাই’; কিন্তু উল্লিখিত জাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পাওয়া যায়নি’। পরে একজন কর্মকর্তা উল্লিখিত মামলার নম্বর ধরে সিআইডির মূল প্রতিবেদন বের করেন। সেটি দেখিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যে প্রতিবেদন দিয়েছি, সেটিতে হেরোইন পাওয়া গিয়াছে’ উল্লেখ আছে। এই প্রতিবেদন পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, এটি ডেটাবেজে ইনপুট (সংযুক্ত) করা হয়েছে।
সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান পরীক্ষক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দেওয়া প্রতিটি প্রতিবেদনেই একটি স্বতন্ত্র নম্বর থাকে।
এ ছাড়া বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে নতুন করে প্রতিবেদনের জন্য আবেদন করেছেন মর্মে নথিতে নোট লিখেছিলেন; কিন্তু বাস্তবে এমন কোনো আবেদন সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে আসেনি বলেও নিশ্চিত করে পরীক্ষাগার কর্তৃপক্ষ।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে সংযুক্ত প্রতিবেদনটিতে রাসায়নিক পরীক্ষাগার থেকে প্রদানের তারিখ লেখা রয়েছে ৩১ জুলাই, ২০২৪। অথচ সিআইডির কাছে প্রতিবেদন চেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছিলেন ২৩ নভেম্বর, ২০২৪। চিঠি দেওয়ার প্রায় চার মাস আগে কী করে প্রতিবেদনে সই হয়, সেটা যেমন একটা বড় প্রশ্ন। ইংরেজিতে লেখা ওই (জাল) প্রতিবেদনে চারটি বানান ভুল। সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষাগার থেকে পাঠানো প্রতিটি প্রতিবেদনেই একটি ‘রিপোর্ট নম্বর’ থাকে; কিন্তু আদালতে সংযুক্ত করা রাসায়নিক প্রতিবেদনটিতে কোনো নম্বরই নেই।
এসব অসংগতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি প্রতিবেদনটি যাচাই করেননি। এতে যে বানান ভুল, রিপোর্ট নম্বর ছিল না; সেসব তিনি খেয়াল করেননি। মামলা তদারকির দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও তাঁকে কিছু বলেননি।
মিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, নম্বরবিহীন প্রতিবেদনটি তিনি সিআইডি থেকে ডাকযোগে পেয়েছেন। এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি ‘পাজলড’ হন। কারণ, ‘হেরোইন পাওয়া যায়নি’ এমন প্রতিবেদন সাধারণত আসে না। ফলে তিনি দারুস সালাম থানার ওসি (রকিব-উল-হোসেন) ও মিরপুরের ডিসির (মাকছুদের রহমান) কাছে মতামত চান। তাঁদের মতামত নিয়েই আসামি পটেটো রুবেলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কোনো কিছু না বুঝে এবং ‘সরল বিশ্বাসে’ তিনি মামলার তদন্ত শেষ করেছেন।
হেরোইনসহ ‘ভুল বুঝে’ গ্রেপ্তারআসামি রুবেলকে হেরোইনের মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদনসহ দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআইডির রাসায়নিক পরীক্ষায় হেরোইন পাওয়া যায়নি বলে মতামত এসেছে। এ কারণে রুবেলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আলামত হেরোইন মনে করে ‘ভুল বুঝে’ এবং থানায় ‘ভুল তথ্য’ দিয়ে মামলা করেছেন এসআই সুব্রত কুমার দাস। প্রকৃতপক্ষে রুবেলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তু হেরোইন নয়। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। এ কারণে মিরপুরের ডিসির (মাকছুদের রহমান) অনুমতি নিয়ে ‘তথ্যগত ভুল’ উল্লেখ করে আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে গত শুক্রবার রাতে কথা হয় এসআই সুব্রত কুমার দাসের সঙ্গে। তিনি এখন খুলনায় কর্মরত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ‘ভুল বুঝে’ বা ‘ভুল তথ্য’ দিয়ে মামলা করেননি। তিনি মাদকহসহ রুবেলকে গ্রেপ্তার করে মামলা করেছেন। রসায়নিক পরীক্ষায় কী এসেছে সেটি তিনি জানেন না। তবে তাঁর সঙ্গে তদন্ত কমকর্তা কোনো যোগাযোগ করেননি।
জিডি নিয়েও ভুল তথ্যআসামি রুবেলকে অব্যাহতি দিতে ৫ আগস্ট থানায় আলামত লুটের ঘটনার কথাও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে পুলিশ। আদালতে পাঠানো চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিরাজুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় দারুস সালাম থানায় দুষ্কৃতকারীরা হামলা করেছে। এ সময় এই মামলার আলামত লুট হয়েছে। এ বিষয়ে আগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জুয়েল আহাম্মদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
যদিও জুয়েল আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার আলামত লুট হয়েছে, এমন কোনো জিডি তিনি করেননি।
দারুস সালাম থানার একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, পটেটো রুবেল একজন পেশাদার অপরাধী হওয়ার কারণে তাঁকে অব্যাহতি দিলে প্রশ্ন উঠতে পারে। এমনকি আদালত নতুন করে আলামত পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দিতে পারে। এ জন্য কৌশলে একটি পুরোনো তারিখে করা জিডির কথা বলা হয়েছে। আদালতে দেওয়া ওই জিডির কপিতে কোনো তারিখও উল্লেখ নেই।
এমন ঘটনা ঘটে থাকলে মামলার তদন্ত তদারকির দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদাঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারেন না৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশকে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে একটি মাদক মামলার আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার নিয়ে পুলিশের মিরপুর অঞ্চলের কর্মকর্তাদের মধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে বলে একাধিক কর্মকর্তা জানান।
একজন মাদক কারবারিকে মামলা থেকে রেহাই দিতে এতসব কাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে মামলার তদন্ত তদারকির দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। তিনি বলেন, প্রতিবেদন জালিয়াতির ঘটনাটি ফৌজদারি অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। মামলার তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা ভুয়া প্রতিবেদন পরীক্ষা না করে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুমতি দিয়ে থাকলে, তাঁদেরও গাফিলতি আছে। তাঁরাও দায় এড়াতে পারেন না। এক্ষেত্রে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আর জালিয়াতির ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসআই ম র জ ল ইসল ম কর মকর ত দ র কর মকর ত র প রথম আল ক স য ক ত কর হ র ইন র র একজন হ ম মদ কর ত র র জন য এল ক য় কর ছ ন ক রব র পর চ ত এমন ক অপর ধ র একট আগস ট মত মত
এছাড়াও পড়ুন:
৯ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু
সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে গতকাল রোববার ও আজ সোমবার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে ৩ জন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে ২ জন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একজন, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একজন, চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একজন মারা গেছেন।
কুমিল্লা
কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
অপর ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বজ্রপাতে দুই কৃষক মারা গেছেন।
স্থানীয়রা বলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত বীর চরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি শিশু আহত হয়েছে।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে দুই জন কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে ধান কাটার সময় সকাল পৌনে ১০টার দিকে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। ইন্দ্রজিৎ উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ্র দাসের ছেলে। স্বাধীনের বাবার নাম ইদ্রিস মিয়া; বাড়ি খয়েরপুর গ্রামে। এতে আহত হয়েছেন একজন।
এছাড়াও একই গ্রামের শ্রমিক সহোদর দাস (৫০) বজ্রপাতে আহত হয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রায় একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে বজ্রপাতে ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। তিনি ওই এলাকার মৃত আশ্রাব আলীর স্ত্রী।
মিঠামইন থানার এসআই অর্পণ বিশ্বাস বলেন, আজ সকালে বাড়ির পাশে ধানের খড় শুকাতে দিচ্ছিলেন ফুলেছা বেগম। এ সময় বজ্রপাত হলে নিহত হন তিনি।
নেত্রকোণা
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে নিজ বাড়িতে গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে বজ্রপাতে আহত হন দিদারুল ইসলাম (২৮)। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি পাশের খারনৈ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায় একটি ইফতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের দাফনের জন্য পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
আজ সকাল সাতটার দিকে মদন উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মো. আরাফাত (১০) বাড়ি থেকে বের হয়ে মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ করে একটি বজ্রপাতে তার শরীর ঝলসে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আরাফাত ওই গ্রামের সালাম মিয়ার ছেলে। সে তিয়োশ্রী মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত।
সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে আজ সকালে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রিমন আটগাঁও গ্রামের বাসিন্দা এবং শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে গ্রামের পাশের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান রিমন তালুকদার। একপর্যায়ে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। রিমন তালুকদার নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আগে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে দুর্বাসা দাস (৩৫) নামে এক ধান কাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৩ জন।
সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তি উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালাবাসী দাসের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
জানা যায়, সকাল থেকেই উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের পূবের হাওরে ধান কাটছিলেন দুর্বাসা দাসসহ তার স্বজনরা। এসময় ঝড়ো বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হলে দুর্বাসা দাস বজ্রাঘাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এছাড়াও আহন হন তার ভাই ভূষণ দাস (৩৪) ও বোন সুধন্য দাস (২৮)।
এদিকে একই উপজেলার বাগহাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বায়েজিদ মিয়া (১৩) নামে এক শিশু বজ্রাঘাতে আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হবিগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান বলেন, বজ্রাঘাতে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।
চাঁদপুর
চাঁদপুরের কচুয়ায় বজ্রপাতের বিকট শব্দে বিশাখা রানী (৩৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের নাহারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিশাখা ওই এলাকার কৃষক হরিপদ সরকারের স্ত্রী।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম জানান, বাড়ির পাশে স্বামী–স্ত্রী মিলে নিজ জমি থেকে ধান তুলছিলেন। এ সময় কাছাকাছি কোথাও বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। এ সময় বিশাখা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক সোহেল জানান, তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। বজ্রপাতের শব্দের কারণে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে ঘটনাস্থলে মারা যান।
মৌলভীবাজার
বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা বাগানের মৃত শংকুরা রবি দাসের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার মাখন রবি দাস শ্রীধরপুর গ্রামের আলমাছ মিয়ার জমির ধান চুক্তিতে কেটে দিচ্ছিলেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাখন মারা যান।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বজ্রপাতে চা শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। পুলিশও এসেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের জন্য নিহতের স্বজনরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করবেন।
শরীয়তপুর
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে সেফালী বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের বেপারীকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সেফালী বেগম ওই এলাকার সোহরাব হোসেন বেপারীর স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরের দিকে আকাশ মেঘলা হয়ে আসে। গৃহপালিত গরুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করতে সেফালী বেগম মাঠে যান। ঘাস কাটার সময় আকস্মিকভাবে শুরু হয় বজ্রসহ বৃষ্টি। হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা দ্রুত ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। মরদেহ হাসপাতালেই রয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাঞ্ছারামপুর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা হানিফ মিয়া (৬০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহত হানিফ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চর-মরিচাকান্দি বিলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মানিক মিয়া চর-মরিচাকান্দি বিলপাড়ার বাসিন্দা মৃত কালাগাজীর ছেলে ও আহত হানিফ মিয়া আহসান উল্লার ছেলে। তারা দুজনই একই পাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সোনারামপুর ইউনিয়নের চর মরিচাকান্দি গ্রামের বিলপাড়ে দুপুরে সাড়ে বারোটার দিকে জমিতে কৃষিকাজ করে বাড়ি ফেরার সময় আকস্মিক বজ্রপাত হলে তারা গুরুতরভাবে আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মানিক মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি জেনে পুলিশ পাঠিয়েছি এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিরা]