মাগুরার সেই শিশুকে দেখতে সিএমএইচে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ
Published: 9th, March 2025 GMT
মাগুরার শিশুটিকে দেখতে আজ রোববার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুনবোনের স্বামীর সহায়তায় শিশুটিকে ধর্ষণ করেন শ্বশুর, মামলার এজাহারে অভিযোগ১৬ ঘণ্টা আগেসংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগে ঘটনার দিন (৬ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি জানতে পেরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিশুটির মাকে ফোন দিয়েছিলেন। তখন তিনি শিশুটির খোঁজখবর নেন। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা, বোনের স্বামী-শ্বশুরসহ গ্রেপ্তার ৪১৯ ঘণ্টা আগেগতকাল শনিবার শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় মাগুরা সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। দোষী ব্যক্তিরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পান, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোচ্চার রয়েছে।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ যাবৎ নারীর প্রতি যত সহিংসতা হয়েছে, সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্নপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছি।’
আরও পড়ুনবোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে শিশু ‘ধর্ষণের’ শিকার, ২৪ ঘণ্টা পরও জ্ঞান ফেরেনি ০৭ মার্চ ২০২৫জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। নারীরা নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঘরে-বাইরে দায়িত্ব পালন করবে। এতে যাঁরা বাধা দিতে আসবেন, সহিংসতা করতে আসবেন, তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার থাকতে হবে। পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ লালন করতে হবে।
আরও পড়ুনমাগুরার সেই শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক, শরীরে পাশবিক নির্যাতনের ক্ষত: চিকিৎসক০৮ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন বিনিয়োগকারীরা
নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিএসইজেড) ঘুরে দেখলেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সাতটি দেশের ৩৬ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সেখানে যান। সেখানকার বিনিয়োগ পরিবেশ, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো বিষয়ে খোঁজখবর নেন তারা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) উদ্যোগে আড়াইহাজারে বিএসইজেড বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। এর আগে সোমবার তারা চট্টগ্রামে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে অংশ নিতে আসা বিনিয়োগকারীদের এই দলটিতে ছিলেন চীনের ১০ জন, জাপানের তিনজন, সৌদি আরবের তিনজন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনজন, যুক্তরাষ্ট্রের আটজন, ভারতের একজন প্রতিনিধি। এ ছাড়া এনআরবি বা অনিবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ছিলেন আটজন। তারা সেখানে অবস্থিত সিঙ্গারের কারখানায় যান। এরপর তারা বিএসইজেডের বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরে বিএসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি বলেন, বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের উন্নত সব পরিষেবা রয়েছে। পণ্য ও কাঁচামাল আমদানির সুবিধার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরেই দেওয়া হয়েছে বন্ডেড ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা। ফলে বন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হয় না।
বিএসইজেডে উৎপাদনে থাকা সিঙ্গারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মাত্র ২০ মাসে প্রতিষ্ঠানটি নির্বিঘ্নে তাদের কারখানা নির্মাণকাজ শেষ করেছে। বিনিয়োগ করেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। কারখানাটিতে সিঙ্গার মাসে ৫০ হাজার ফ্রিজ ও ১০ হাজার পিস টেলিভিশন তৈরি করছে।
পরিদর্শনকালে চীনা মালিকানার তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জিনিউ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী (সিইও) নিকোলাস কি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। মূল সমস্যা হচ্ছে সরকারের নীতির ধারাবাহিকতা না থাকা। বিনিয়োগ করার পর নীতি পরিবর্তনে সমস্যায় পড়ে বিনিয়োগ। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।
চীনের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান গ্রিন অ্যান্ড স্মার্ট এনার্জি অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল উইও জিয়ানবো বলেন, বিএসইজেডের ভেতরের অবকাঠামো বিনিয়োগ উপযোগী। সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচএম ফাইরোজ বলেন, বিশ্বের সব জায়াগাতেই নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ইতিবাচক উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে।
এদিন নিলর্ন বাংলাদেশ নামে সুইডেনের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে বিএসইজেড কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে তাদের একটি পোশাক কারখানা আছে। বিএসইজেডে গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনের জন্য আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ করতে চান তারা। ধাপে ধাপে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, গত দু’দিন বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো দেখে সন্তুষ্ট। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে যেসব চ্যালেঞ্জ ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার তা দূর করার চেষ্টা করছে।