লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন তেওয়ারীগঞ্জ বাজার টু আধারমানিক সড়কে চলাচলকারী ও ফসলী জমি বিনষ্টকারী ১৩ জন ট্রাক্টর চালক ও মালিকের জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

শনিবার (৮ মার্চ) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এরআগে বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম রানা এ অভিযান চালান। অভিযানে তেওয়ারীগঞ্জ বাজারের ৯টি ট্রাক্টর চালক ও মালিকের ১০ হাজার করে ৯০ হাজার, ২ জনের ৫ হাজার করে ১০ হাজার এবং ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় এক ট্রাক্টর চালকের ১০ হাজার ও অন্যজনের ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ট্রাক্টর চালক রিয়াদ, সহিদ, ফয়সাল, বিপ্লব, শামীম, মো.

রাসেল, মো. সুজন, তারেক, রাকিব হোসেন, সুমন, রাকিব, মো. ইউসুফ ও লাহারকান্দির কুতুবপুর গ্রামের মো. সোহেল।

প্রশাসন জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন তেওয়ারীগঞ্জ বাজার টু আধারমানিক সড়ক ও ফসলী জমি বিনষ্টকারী ট্রাক্টর চলাচলে বাধা দিয়ে ১১টি ট্রাক্টর আটক করে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামশেদ আলম রানা।

এসময় ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট ও ফিটনেস সনদ ব্যতীত ট্রাক্টর চালনা এবং গ্রামীন সড়ক বিনষ্ট করার অপরাধে সড়ক পরিবহণ আইনে ১১ জন চালক-মালিকের এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই দিন ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা বাজার টু নতুন তেওয়ারীগঞ্জ বাজার সড়কে অবৈধ ট্রাক্টর চালানোর অপরাধে দুইজনের পৃথক মামলায় ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ইউএনও জামশেদ আলম রানা জানান, ট্রাক্টর মালিক ও চালকদের ট্রাক্টর চালানো হতে বিরত থাকার বিষয়ে অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ