নরসিংদীতে ছয় বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার নিরাপত্তাপ্রহরীকে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এসে আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন।

শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৮টার দিকে শহরতলীর গাবতলি এলাকার একটি মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরী সাইফুল ইসলাম (৫০) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দুলাল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশুটি মাদ্রাসার শিক্ষক সামসুল ইসলামের কাছে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ করলে স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরীকে গণপিটুনি দেয়।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ উত্তেজিত জনতার হাত থেকে নিরাপত্তাপ্রহরীকে উদ্ধারে এলে ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহতাবস্থায় নিরাপত্তাপ্রহরীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেন।

মাদ্রাসার শিক্ষক সামসুল ইসলাম বলেন, ‘‘শিশুটি আমার কাছে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, স্থানীয়রা জেনে উত্তেজিত হয়ে ওই নিরাপত্তাপ্রহরীকে গণপিটুনি দেয়।’’

নরসিংদী সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘‘যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণচেষ্টা মামলার প্রস্তুতি চলছে।’’

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণপ ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিষ দিয়ে তিনটি গরুকে মেরে ফেলার অভিযোগ

মাটির দেয়ালে জং ধরা টিনের চাল। সেই চালের এক পাশে পোষা তিনটি গাভি, আরেক পাশে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বসবাস। গাভির দুধ বিক্রি করে চলত সংসার। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন গাভি তিনটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন দিনমজুর আজিজুল ইসলাম।

আজিজুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর গরু তিনটিকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবেশী মজনু মিয়ার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি কেন গরু মারতে যাব! আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে।’

আজিজুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর ঘরে থাকা গাভি তিনটি মারা যায়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ মারা যাওয়া গরু তিনটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত করছে।

আজিজুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বসতভিটা ছাড়া কোনো জমি নেই। দরিদ্র হওয়ায় আজিজুল ইসলামের শ্বশুর মহির উদ্দিন ১০ বছর আগে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের বকনা বাছুর দেন। সেই বাছুর লালন–পালন করার পর পূর্ণবয়স্ক হয়ে অনেকগুলো বাছুর জন্ম দেয়। এর মধ্যে তিনটি বকনা বাছুর পালন করে গাভিতে পরিণত করেন আজিজুল। সেই গাভির দুধ বিক্রি করে পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বাড়ির অদূরেই বাঁশঝাড়ে গাভি তিনটি বেঁধে রাখার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর গতকাল শনিবার রাতে তিনটি গাভি মারা যায়। তিনটি গাভির মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একসঙ্গে তিনটি গরু মারা যাওয়া আজিজুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের ভিড়। উঠানের সামনে ময়নাতদন্ত করছে প্রাণিসম্পদের দল।

বাড়ির বারান্দায় বসে কাঁদছিলেন আজিজুলের স্ত্রী স্বপনা বেগম। এ সময় আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হামার গ্রামের মজনুর সাথে মোর ঝগড়া চলছে। মজনু ২০ দিন আগোত হুমকি দিছিল, মোক নিঃস্ব করি দিবে, মোর সংসার ফকির করতে যা করা লাগে করবে। মজনু ওর কথা পালন করছে, মোক ফকির বানাইল। এ্যালা মুই নিঃস্ব। ওয় মোর গরু বিষ দিয়ে মারি ফেলাইছে। গরুগুলার কী দোষ? ওয় মোক মারত। মুই ওর বিচারের জন্যে থানায় অভিযোগ দিছি। মুই সঠিক বিচার চাই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ইফতেখায়ের বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর টিম নিয়ে আজিজুল ইসলামের বাড়িতে যাই। গাভিগুলোর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ