ভাগ্য ফেরাতে কিনছেন ‘ব্যাংকের মাটি’
Published: 9th, March 2025 GMT
ভাগ্য ফেরাতে মানুষ কত কিছুই না করে। যদিও সফলতা পেতে কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তবু কেউ কেউ খোঁজেন সহজ কোনো পথ। দ্বিতীয় শ্রেণির এই মানুষদের কথা ভেবে চীনে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন কিছু সুযোগসন্ধানী। দেশটির বড় ব্যাংকগুলোর বাইরে থেকে মাটি সংগ্রহ করে অনলাইনে বিক্রি করছেন তাঁরা। এই মাটি নাকি ফেরাতে পারে ভাগ্য, এনে দিতে পারে সম্পদ—এমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে।
‘সৌভাগ্যের’ এই মাটিরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দাম। যেমন একজন অনলাইন বিক্রেতা চীনের পাঁচটি বড় ব্যাংক—ব্যাংক অব চায়না, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না, অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংক অব চায়না, চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক ও ব্যাংক অব কমিউনিকেশনসের আশপাশের মাটি বিক্রি করেন। সবচেয়ে কমে ৩ ডলারে পাওয়া যায় এই মাটি, সর্বোচ্চ বিক্রি হয় ১২০ ডলারে।
একজন বিক্রেতা বলেন, বড় পাঁচটি ব্যাংকের বাইরে থেকে তাঁরা নিজেরা মাটি সংগ্রহ করেন। সাধারণত এ কাজ করা হয় রাতে। ওই বিক্রেতা বলেন, বিশ্বাস করা হয়, এই মাটি সম্পদ বাড়িয়ে দেয় এবং অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে। তবে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয় বলেও স্বীকার করেন তিনি।
মাটি যে ‘খাঁটি’, তা প্রমাণের জন্য অনেক অনলাইন বিক্রেতা মাটি খোঁড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। এমনই এক ভিডিওতে একটি ব্যাংকের প্রবেশমুখে মাটির কনটেইনার হাতে একজনকে দেখা যায়। আরেক ভিডিওতে একজন বিক্রেতাকে গ্রাহকদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনার জন্য মাটি খুঁড়ছি।’
এই মাটির একজন ক্রেতার সঙ্গেও কথা হয়েছে দেশটির একটি গণমাধ্যমের। পরিচয় প্রকাশ না করে ওই ব্যক্তি বলেন, তাঁর ব্যবসা রয়েছে। আশা করছেন এই মাটির মাধ্যমে ব্যবসার আরও আয়–উন্নতি হবে। তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধবও ব্যাংকের মাটি কিনেছেন।
মাটি কিনে ভাগ্য বদলের বিষয়টি নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেও ছাড়ছেন না অনেকে। যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘আমার বাড়ি তো ব্যাংকের পাশেই। তাহলে আমার ভাগ্যটা বদলাচ্ছে না কেন?’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ম ট
এছাড়াও পড়ুন:
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও করে প্রায় চার ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটকের দাবি জানান তাঁরা। পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় বেঁধে দিয়ে কর্মসূচি তুলে নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদল কর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার সন্ধ্যায় দুজনকে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতাউল গণি। অপরজন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন। রাত নয়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা দুজনকে কোতোয়ালি থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
সোমবার আকরাম হোসেনকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, আকরাম জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি কখনো ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের মৌখিক সম্মতি নিয়ে গণস্বাক্ষর দিয়ে থানায় আবেদন করলে পুলিশ মুচলেকা নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয়।
এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আকরামকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার বিকেল থেকে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আকরাম ভাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। তাকে ছাত্রলীগকর্মী আখ্যায়িত করে হামলা ও হেনস্তা করা হয়েছে। সে কখনো ছাত্রলীগের পদে ছিল বা মিছিল মিটিংয়ে যেতে দেখিনি আমরা। একজন জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাকে এভাবে ছাত্রলীগ বলে চালিয়ে দেবে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা মামলাও নেই, এ জন্য তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে ছাত্রলীগ কর্মী ছাড়া পেয়ে গেল। আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরও কেন তাকে ছেড়ে দিয়েছে, এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আকরামকে আটক করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
আকরাম হোসেনকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুজন ছাত্রলীগ কর্মীকে আহত অবস্থায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছ থেকে পেয়েছি। তারপর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে থানায় নিয়ে এসেছি। দুজনের মধ্যে আতাউল গণি ছাত্রলীগের পদে থাকায় এবং অভিযোগের ভিত্তিতে চালান করে দিয়েছি। আকরামের বিরুদ্ধে আমরা ছাত্রলীগের সাথে কোনো প্রকার সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাইনি।’