বয়স ৩৮ ছুঁই ছুঁই। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় ৪০ পেরিয়ে যাবে। সেই বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) পরিকল্পনায় রোহিত শর্মা থাকবেন কি না, নিশ্চিত নয়।

রোহিত নিজেও হয়তো দল গুছিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দিতে অনুজদের সুযোগ করে দেবেন। এ কারণেই জোর গুঞ্জন, দুবাইয়ে আজ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল শেষেই ওয়ানডেকে বিদায় বলে দেবেন রোহিত।

বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ম্যাচ শেষে রোহিতের সঙ্গে কথা বলবেন বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সহ–অধিনায়ক শুবমান গিলও ইঙ্গিত দেন, ফাইনাল শেষে হয়তো সিদ্ধান্ত জানাবেন রোহিত। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই এই বক্তব্য ‘এক্সপাঞ্জ’ করে নেন গিল।

তবে যে যা–ই বলুন, ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী মনে করেন, রোহিতকে এখনই ওয়ানডে থেকে বিদায় দেওয়া ভালো ব্যাপার হবে না। সমর্থকদের তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত বছরই রোহিতের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত এবং এ জন্য রোহিতের সম্মান প্রাপ্য।

গতকাল সংবাদমাধ্যমকে সৌরভ বলেছেন, ‘রোহিত শর্মার অবসর নিয়ে এত কথা হচ্ছে কেন? এ ধরনের প্রশ্নই–বা করা হচ্ছে কেন? কয়েক মাস আগেই সে (টি–টোয়েন্টি) বিশ্বকাপ জিতেছে। জানি না, ওকে নিয়ে নির্বাচকেরা কী ভাবছে। কিন্তু সে এখনো দারুণ খেলে যাচ্ছে।’

সৌরভের চোখে ফাইনালে ভারতই নিরঙ্কুশ ফেবারিট, ‘ভারত নিউজিল্যান্ডের চেয়ে অনেক ভালো দল। ভারত ২০২৩ (ওয়ানডে) বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে, ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে এবং এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও তারা এখন পর্যন্ত অপরাজিত। দলে বিরাট কোহলি, গুবমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার, রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল আছে। তারা সবাই দারুণ ফর্মে। ভারতের বোলিং লাইনআপও ভালো। ফাইনালেও ভারত একই একাদশ নিয়ে খেলবে। আমার মনে হয় ভারতই ফেবারিট। তবে যে কেউ জিততে পারে, যে কেউ হারতে পারে। আশা করি দারুণ একটা ম্যাচ হবে।’

আজ নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে সৌরভ গাঙ্গুলী ও মহেন্দ্র সিং ধোনির পর ভারতের তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি উঁচিয়ে ধরবেন রোহিত।

সৌরভ গাঙ্গুলী (বাঁয়ে) ও রোহিত শর্মা। আইপিএলের সময়ে তোলা ছবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা

মুরাদনগরে বৈশাখী মেলা ঘিরে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। সারা বছর এই কাজের কদর না থাকলেও বৈশাখ রাঙাতে এই সময়টাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় আগের মতো চাহিদা নেই মৃৎশিল্পের। এই পেশায় নেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। তাই প্রায় সারাবছরই অধিকাংশ নারী মৃৎশিল্পীকে অবসর সময় কাটাতে হয়। পুরুষ মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশ চলে গেছেন অন্য পেশায়। তবে নববর্ষের আগে সব কাজ ফেলে তারা ছুটে আসেন পুরোনো এই পেশায়। মৃৎশিল্প থেকে সারা বছর কারিগররা আয়ের মুখ না দেখলেও বৈশাখী মেলা ঘিরে থাকে বাড়তি উপার্জনের সম্ভাবনা। এবারও মাসজুড়ে প্রতিটি কুমারপাড়ায় ছিল ব্যস্ততা।

কামাল্লা ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের পালপাড়ায় দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। জরাজীর্ণ আবাসগুলোতে কেউ মাটি ঘুটছেন, কেউ সেই মাটি ছাঁচে দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করছেন। কেউবা খেলনা শুকানোর পর রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুদের চাহিদা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িপাতিল, মাটির চুলা, শিলপাটা, কড়াই, কলস, কুলা, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, নৌকা, টিয়া, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁসসহ নানা রকম ফল, ফুল আর বাহারি মাটির ব্যাংক, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ। এ ছাড়া রয়েছে মাটির তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র।

কামাল্লা গ্রামের সন্ধ্যা রানী পাল ও শিখা রানী পাল জানান, এখন মাটির জিনিসের তেমন কদর না থাকায় সারাবছর টানাপোড়েনের মধ্যে চলে তাদের সংসার। পূর্বপুরুষের পেশা হওয়ায় ইচ্ছা হলেও ছাড়তে পারছেন না। সারাবছর অবসর সময় পার করলেও বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও জিনিসপত্রের চাহিদা থাকায় এই সময়ে ব্যস্ততা থাকে তাদের।
কথা হয় মৃৎশিল্পী হরি ভূষণ পালের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বছরের এই একটি উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির খেলনা সামগ্রীর চাহিদা বাড়ে। তাই এ সময় কিছু আয় হয়। তিনি হতাশার সুরে বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করত, তাহলে ব্যবসাটা ভালোভাবে করতে পারতাম।’
মৃৎশিল্পী কানন বালা জানান, পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। এই মেলা থেকে শখের বসে অনেকে মাটির সামগ্রী, বিশেষ করে মাটির খেলনা কেনেন। তাই এই সময়ে কর্মব্যস্ততা বাড়ে তাদের।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের খুশি পাল বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই। বিয়ের পর থেকেই এই পেশার সঙ্গে জড়িত। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন নেই। এই শিল্পের সঙ্গে আমাদের জীবনজীবিকা নির্ভরশীল।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমানের ভাষ্য, আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প যে হারিয়ে গেছে, বিষয়টি তা নয়। বরং আধুনিকতার ছোঁয়ায় শিল্পকারখানার মাধ্যমে তৈরি হওয়া মাটির তৈজসপত্রর চাহিদা এখন প্রচুর। মুরাদনগরে যদি বেসরকারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব মৃৎশিল্পীকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে অবশ্যই এই শিল্প থেকে ভালো সুফল পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি মৃৎশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে বিআরডিবি ও সমবায় কার্যালয় থেকে যেন সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু মুরাদনগরে কোনো মৃৎশিল্পের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নেই, তাই মৃৎশিল্পীদের এই পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সহজে সরকারি সহায়তা দিতে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রনেতাকে ৪৭ দিন গুম করে রাখার মামলায় চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান সোহায়েলকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
  • মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা