সারা বছর সব ধরনের ফলের চাহিদা থাকলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে দেশি-বিদেশি রসালো ফলের। সম্প্রতি বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ। তাই আপেল, নাশপাতি, আঙুর, কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি ও আনারের মতো বিদেশি ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এই বাস্তবতায় পরিবারের জন্য যাঁরা ফল কিনতেন, তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন খাদ্যতালিকা থেকে ফলের মতো পুষ্টিকর পণ্যটি বাদ দিতে। এই সুযোগে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে দেশি ফলের কেন্দ্রগুলোতে। দামও কিছুটা হাতের নাগালে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি ফলের চড়া দামের সুযোগে বেড়েছে কিছু দেশি ফলের দামও। আকারভেদে আনারস ১০০ টাকা জোড়া বিক্রি হলেও রোজার আগে তা ছিল ৮০ টাকা জোড়া। বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, তরমুজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও পেঁপে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সফেদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৬০, বাঙ্গি আকারভেদে প্রতি পিস ১০০ থেকে ৩০০, বেল ৮০ থেকে ১২০ প্রতি পিস, কলা ৮০ থেকে ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।

অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২২০ টাকার আপেল এখন ৪০০ টাকা কেজি। তাই এখন যদি বিদেশি ফল কিনতে যাই, তাহলে সারা মাসের ফলের ব্যয় চলে যাবে সাত দিনে। আর যাঁদের পরিবারের সদস্য আমার মতন ১১ জনের, তাঁদের বিদেশি ফলের দিকে তাকানো যেন মুশকিল।’ এই পরিস্থিতিতে তিনি দুই কেজি বড়ই কিনলেন ১২০ টাকা দিয়ে, ঘুরে ঘুরে বিদেশি ফল দেখলেও কিনলেন না কোনোটাই। তারপর ৯০ টাকা দরে ২ কেজি পেয়ারা আর ৪০ টাকা দরে ৪টি আনারস কিনে বাড়ি ফিরলেন নুরুল হক।

আরেক ক্রেতা সরকারি চাকরিজীবী রিপন আহমেদ বলেন, ‘দামের কারণে বিদেশি ফল কেনা যাচ্ছে না, তাই পরিবারের সদস্যরা আগে দেশি ফল না খেলেও এখন খাচ্ছে।’

কারওয়ান বাজারের দেশি ফলের বিক্রেতা ফাহিম আহমেদ কেশর আলু বিক্রি করছেন ৮০ টাকা কেজি দরে। ১ দিনে বিক্রি করেন ৪০ কেজির মতন। লাভ সীমিত হলেও ব্যবসা ভালো যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বিদেশি ফলের বিক্রেতা মোহাম্মদ সাগর বলেন, বিদেশি ফলের দাম বাড়াতে বিক্রি প্রথম রোজা থেকে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে দিনে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি ফল বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ কেজি। এর জন্য বিক্রেতারা দুষছেন ডলার–সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও অতিরিক্ত শুল্ক আদায়ের মতো সরকারি সিদ্ধান্তকে।

তবে বিদেশি ফলের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে কেবল আঙুরের দাম। গতকালও ফলটি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগেও যা ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় কেনা যেত।

কালো আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। গতকাল বাজারে এখন ১ কেজি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, আপেল ২৮০ থেকে ৩৪০, নাশপাতি ৩০০ থেকে ৩২০, স্ট্রবেরি ৪০০ থেকে ৫০০, আনার প্রকারভেদে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।

তবে রমজানে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে সব ধরনের ফলের। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের ফলের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব ধরনের ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের দাবি, প্রতিবছর রোজা এলেই প্রায় সব ধরনের ফলের দাম বাড়ে। তাই সরকারের সঠিক হস্তক্ষেপের দাবি তাঁদের।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফল র দ ম ৮০ ট ক ৮০ থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের উচ্চকক্ষ কেন প্রয়োজন

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বিদ্যমান। এই আইনসভার সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট অর্থাৎ ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট (এফপিটিপি) নির্বাচনী পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। সাংবিধানিক কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার কারণে এই আইনসভা আইন প্রণয়ন ও নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি আদায়ে কখনও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি, যা দেশে সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র কায়েমে ভূমিকা রেখেছে।

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবনা অনুসারে, নিম্নকক্ষের নাম হবে জাতীয় সংসদ এবং উচ্চকক্ষের নাম সিনেট। এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব বা বিল উত্থাপন করবে নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষের এই ক্ষমতা থাকবে না। কমিশন উচ্চকক্ষকে মূলত একটি পর্যালোচনাকারী সংস্থা হিসেবে প্রস্তাব করেছে, যার কাজ হবে নিম্নকক্ষ কর্তৃক প্রস্তাবিত বিলগুলো পর্যালোচনা, সংশোধন এবং অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করা। 

নিম্নকক্ষে পাসকৃত অর্থবিল ব্যতীত সব বিল উচ্চকক্ষে তুলতে হবে। উচ্চকক্ষ সেই বিল পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করবে। যদি উচ্চকক্ষ কোনো বিল অনুমোদন করে, সে ক্ষেত্রে উভয় কক্ষে পাস হওয়া বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। যদি উচ্চকক্ষ কোনো বিল প্রত্যাখ্যান করে সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষ সংশোধনের সুপারিশসহ বিল পুনর্বিবেচনার জন্য নিম্নকক্ষে পাঠাবে। নিম্নকক্ষ উচ্চকক্ষের প্রস্তাবিত সংশোধনগুলো সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। নিম্নকক্ষে পরপর দুটি অধিবেশনে পাসকৃত বিল যদি উচ্চকক্ষ প্রত্যাখ্যান করে এবং নিম্নকক্ষ যদি এটি আবারও পরবর্তী অধিবেশনে পাস করে, তবে উচ্চকক্ষের অনুমোদন ছাড়াই বিলটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো যাবে। অর্থাৎ উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকাতে পারবে না। এ ছাড়া উচ্চকক্ষ কোনো বিল দুই মাসের বেশি আটকে রাখলে তা উচ্চকক্ষ দ্বারা অনুমোদিত বলে বিবেচিত হবে।

প্রশ্ন উঠতে পারে, যে উচ্চকক্ষের আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা থাকবে না এবং কোনো আইন স্থায়ীভাবে আটকানোরও ক্ষমতা থাকবে না, সেই উচ্চকক্ষ করে কী লাভ? নিম্নকক্ষ প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত বিধায় কমিশনের প্রস্তাবে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা শুধু নিম্নকক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হলেও উচ্চকক্ষকে বেশ কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা সংসদে এককক্ষের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ও একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রথমত, জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে এমন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরের আগে নিম্নকক্ষের পাশাপাশি উচ্চকক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন নিতে হবে। কমিশন এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেমন জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশের উদাহরণ দিয়েছে। এসব দেশে চুক্তি অনুমোদনের জন্য আইনসভার উভয় কক্ষের সম্মতি প্রয়োজন। এ পদ্ধতি জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় আইনসভার নজরদারি নিশ্চিত করে। দ্বিতীয়ত, নিম্নকক্ষে কোনো বিতর্কিত বিল প্রস্তাব করা হলে উচ্চকক্ষ তা বিলম্বিত করতে পারবে। ফলে সেই বিল নিয়ে আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের পরিবেশ তৈরি হবে। এতে নিম্নকক্ষের পক্ষে জনস্বার্থবিরোধী বিল বিনা বিতর্কে পাস করা কঠিন হবে। 

তৃতীয়ত, সংবিধান সংশোধনের পূর্বশর্ত হিসেবে কমিশন উভয় কক্ষে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের সুপারিশ করেছে। উচ্চকক্ষের এ ধরনের ক্ষমতা সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতার ভিত্তিতে সাংবিধানিক সংশোধনী রোধ করবে।

চতুর্থত, কমিশন রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন প্রক্রিয়ায় দোষী সাব্যস্ত অথবা অপসারণ করার ক্ষেত্রেও উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের সুপারিশ করেছে। এর ফলে অভিশংসন প্রক্রিয়া ন্যায়সংগত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত হওয়ার ব্যাপারে উচ্চকক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বলেছে। বিএনপির ৩১ দফা এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনকে দেওয়া ৬২ দফা প্রস্তাবেও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের কথা আছে। ফলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা নিয়ে বিএনপির আপত্তি না থাকলেও আপত্তি হলো উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুসারে, উচ্চকক্ষের ১০০ সদস্য নির্বাচিত হবেন আনুপাতিক পদ্ধতিতে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আর পাঁচজন মনোনীত হবেন রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে। কিন্তু বিএনপি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ‘ভোটের অনুপাতে’ নয়, প্রাপ্ত ‘আসনের অনুপাতে’ বর্তমানে যেভাবে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টন হয়, সেভাবে উচ্চকক্ষে আসন বণ্টন চায়।

বিএনপির এই অবস্থান নানা কারণেই সমস্যাজনক। কারণ উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি ব্যবহার না করা হলে উচ্চকক্ষের মূল উদ্দেশ্যই মাঠে মারা যাবে। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট যুক্তি এবং ব্যখ্যাও দিয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। কমিশন স্থিতিশীল রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থার জন্য বর্তমানে প্রচলিত এফপিটিপি পদ্ধতিতেই নিম্নকক্ষ নির্বাচনের সুপারিশ করেছে। কমিশন সেই সঙ্গে এটাও বলেছে, পদ্ধতিটি সাধারণত বড় দলগুলোর পক্ষে কাজ করে এবং ছোট দলগুলোকে প্রান্তিক করে তোলে। এখন নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষও যদি এফপিটিপি পদ্ধতিতে হয়, তাহলে নিম্নকক্ষের মতো উচ্চকক্ষেও একই দলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যটি সফল হবে না। কমিশন তাই মনে করে, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি নিম্নকক্ষের এফপিটিপি পদ্ধতির কঠোরতা হ্রাস করতে সহায়ক হবে। পিআর পদ্ধতি ছোট দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে; ভোটারদের বৈচিত্র্য প্রতিফলিত করবে এবং বিভিন্ন আকারের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য ও সহযোগিতার পথ সুগম করবে। 

কমিশন পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ নির্বাচনের উদাহরণ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের দৃষ্টান্ত দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সিনেট (উচ্চকক্ষ) পিআর পদ্ধতি ব্যবহার করে, আর প্রতিনিধি পরিষদ (নিম্নকক্ষ) এফপিটিপি পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়। ভারতের দ্বিকক্ষ ব্যবস্থাও মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির সুবিধা কাজে লাগায়। রাজ্যসভা (উচ্চকক্ষ) পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়, যা বিভিন্ন আঞ্চলিক ও সংখ্যালঘু স্বার্থকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়। অন্যদিকে লোকসভা (নিম্নকক্ষ) এফপিটিপি পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনে সহায়ক হয়। 

কাজেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিদ্যমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পদ্ধতিতে নিম্নকক্ষ এবং জনগণের বিভিন্ন অংশের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ নির্বাচন করা হলে আইনসভা ভারসাম্যপূর্ণ ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবে। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে মুক্ত তালিকা পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া উচিত। বদ্ধ তালিকা পদ্ধতিতে নির্বাচনের আগে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় না। মুক্ত তালিকা পদ্ধতিতে নির্বাচনের আগে প্রতিটি দল তাদের প্রার্থীর ক্রমতালিকা ভোটারদের সামনে উপস্থাপন করবে এবং নির্বাচনে ভোটাররা বিভিন্ন দলের প্রতীকে ভোট দেবেন। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সেই দলের জন্য উচ্চকক্ষে তত শতাংশ আসন বরাদ্দ হবে এবং দলগুলোর পূর্বঘোষিত তালিকা থেকে সেই কয়জন প্রার্থী উচ্চকক্ষের সদস্য হবেন। অবশ্য কোনো দলের প্রার্থীদের উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্বের যোগ্য হতে হলে ওই দলকে মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ১ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে। 

এ ছাড়া উচ্চকক্ষকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করার জন্য ভারতের রাজ্যসভার মতো অর্থবিল ছাড়া অন্য যে কোনো বিল স্থায়ীভাবে প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা দেওয়ার কথাও ভাবা যেতে পারে।

কল্লোল মোস্তফা: লেখক ও গবেষক

সম্পর্কিত নিবন্ধ