শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তনের কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। তবে সেসব প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় আবার সংকট সৃষ্টি হয়। ১/১১ এর পরিবর্তনের পর উল্টো পথে যাত্রা ঠেকাতে প্রয়োজন ছিল কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্কার। কিন্তু সংস্কারে জোর না দিয়ে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমায় গুরুত্ব দেওয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভুল। এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপরাষ্ট্রদূত জন এফ ড্যানিলোভিচ।

গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ‘নতুন ভোরের পথে ঢাকা: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে। এতে জন এফ ড্যানিলোভিচ ছাড়াও অংশ নেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম। সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্থার চেয়ারম্যান মুনিরা খান। এর পর সঞ্চালকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক দুই মার্কিন কূটনীতিক। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অতিথিদের প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।

সাবেক দুই মার্কিন কূটনীতিক বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতি তাদের দেশের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি নিয়ে মত ব্যক্ত করেছেন। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সমর্থন করায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের গুরুত্ব এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সমাজের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এক প্রশ্নে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, অবশ্যই ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষে ছিল। তবে এর পর থেকে একটি ধারাবাহিক নীতি নিয়ে চলেছে।                  

২০০৭-৮ এ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা কীভাবে ভূমিকা রেখেছেন– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭-৮ সালে বড় ভুল করেছিল। আমি সে সময়ে বাংলাদেশে দায়িত্বে ছিলাম না। তবে আমি এটি বলতে পারি, তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বা অন্য কোনো মার্কিন কূটনীতিক ১/১১ এর পেছনে দায়ী নন। কোনো গোপন কফি গ্রুপে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ বাংলাদেশিদের নির্দেশনা দেননি কী করতে হবে। তবে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গতিপথ নিয়ে অনেক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল, যে প্রত্যাশা তৎকালীন সরকার, সামরিক বাহিনী এবং সুশীল সমাজের ছিল।’ তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি ছিল, তা লাইন বিচ্যুত হয়েছিল। বাংলাদেশকে সঠিক পথে আনতে কিছু মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। আমরা সংস্কারের বিষয়ে সহযোগিতা করেছিলাম। আমরা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সমর্থন করেছিলাম। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম।

১/১১-এর বিশ্লেষণে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, পরিস্থিতির কারণে আমাদের বোঝাপড়ার ঘাটতি ছিল। আমাদের অনেকের কথা শোনার দরকার ছিল। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনিনি, বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকে আর্মির জেনারেল ও ব্রিগেডিয়ারদের কথায় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ কী চেয়েছিল, তাতে গুরুত্ব দিইনি। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বললেও আমরা আর্মিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এ কারণেই হয়তো যুক্তরাষ্ট্র যে রকম প্রত্যাশা করেছিল, বাংলাদেশ সে ধারায় যেতে পারেনি। তিনি বলেন, আরও একটি ভুল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমাতে বেশি জোর দিয়েছিল। নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যে সরকার নির্বাচিত ছিল না, এমন সরকার দীর্ঘ সময় শাসন করতে পারে না। কিন্তু সে সময়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অগ্রাধিকার হিসেবে সংস্কারের চেষ্টা করেছিল।

তবে যখন এটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সে সরকারের এজেন্ডা হচ্ছে নির্বাচন এবং ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে প্রভাব হারিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সে সরকারের চুক্তি হয়েছিল গোপনে। ফলে আমরা জানি না সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কী দরকষাকষি হয়েছিল। তখন আমরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমাদের ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা এ থেকে শিক্ষা পেয়েছেন এবং সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজগুলো তারা এগিয়ে নেবে। তবে আমাদের ধারণা ভুল ছিল এবং যা বলেছিল তা বিশ্বাস করেছিলাম। এতে বাংলাদেশের পরিস্থিতির অবনতি হতে দেখেছি। এ কারণে ২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট (গণঅভ্যুত্থান) হয়েছে। এখন অতীতের ভুল থেকে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

মার্কিন এই কূটনীতিক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখন সংস্কারের বিষয়ে যা করছে, তা হলো ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণের প্রতিফলন। এখনকার জটিল পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে যুক্ত করে বেসামরিক সরকারের গুরুত্ব তুলে ধরে বর্তমান সরকার সংস্কারের বিষয়ে যেভাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ বর্তমানে একটি তথ্য যুদ্ধের সম্মুখীন এবং মার্কিন সরকার মিডিয়াভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য মোকাবিলার জন্য কাজ করছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য মার্কিন তহবিল সম্পর্কে দেওয়া বিবৃতিও বিভ্রান্তিকর। এটি মূলত কিছু ব্যক্তি দ্বারা প্রচারিত, যারা দুই দেশের সম্পর্ক অস্থিতিশীল করতে চায়। তিনি আরও বলেন, সেন্ট মার্টিনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য নিছক মিথ্যা প্রচারণা, যা কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়াচ্ছে। সাবেক সরকার বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যাতে তারা নিজেদের দুর্নীতি ও অনিয়ম আড়াল করতে পারে।

উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, আমি ৩৫ বছর আগে বাংলাদেশে কাজ করেছি। যখন স্বৈরাচারী এইচ এম এরশাদকে উৎখাত করা হয়েছিল এবং ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাত থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এসেছিল। এ থেকে আমি বুঝেছিলাম সমাজ ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তিনি বলেন, আমরা একটি ছোট সংগঠন গঠন করি এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে সচেতন করার জন্য কাজ করি। গত পাঁচ বছরে আমরা অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছি এবং এই উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। বিশেষ করে গত ১০ বছরে ভিসা না পাওয়ায় আমি বাংলাদেশ সফর করতে পারিনি।

সেনাশাসন থেকে গণতন্ত্রের পথে যাত্রার সময়ে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, ‘সবচেয়ে কঠিন ছিল তথ্য সংগ্রহ করা। আমাকে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন সরকারকে নির্ভুল তথ্য দিতে হতো। সে সময়ে স্বৈরাচার আমাকে তাদের পক্ষ নিতে চেষ্টা করেছিল। তখন শিখেছিলাম কূটনীতি কীভাবে করতে হয়।’ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন কোন পথে এগোবে জানতে চাইলে মাইলাম বলেন, ভবিষ্যৎ কী হবে, তা আমি জানি না। নতুন সরকার একদম ভিন্ন পথে যাত্রা শুরু করেছে। তবে নির্বাচনের সময়ে তারা মার্কিন জনগণের সামনে এসে আবার দাঁড়াবে। তখন হয়তো প্রশাসন আবারও আগের পথে আসবে অথবা একটি সহনশীল অবস্থান নেবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণতন ত র র প পর স থ ত ক টন ত ক ন সরক র ক সরক র সরক র র আম দ র র জন ত কর ছ ল হয় ছ ল র জন য র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের আগে নির্বাচনে জোর দেওয়া ছিল ১/১১ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল

১৯৯০ সালে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। আর গণতন্ত্রের উল্টোপথে যাত্রা ঠেকাতে প্রয়োজন ছিল কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্কার। সে সময় সংস্কারে জোর না দিয়ে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমায় গুরুত্ব দেওয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ভুল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ–রাষ্ট্রদূত জন এফ ড্যানিলোভিচ।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) বিআইআইএসএস’এ ‘নতুন ভোরের পথে ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন গতিপথ’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করে। সিজিএস আয়োজিত সংলাপে অংশ নেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ রাষ্ট্রদূত জন এফ ড্যানিলোভিচ। সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থার চেয়ারম্যান মুনিরা খান। এরপর সঞ্চালকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কূটনীতিক। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অতিথিদের প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।

সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কূটনীতিক বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতি তাদের দেশের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভূমিকা এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক, উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সমাজের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।  

কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, অবশ্যই ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষে ছিল। তবে এরপর থেকে একটি ধারাবাহিক নীতি নিয়ে চলেছে। 

২০০৭–০৮ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা জটিল ভূমিকা পালন করেছিল, সে সময়ে কূটনীতিকরা কিভাবে কাজ করে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭–০৮ সালে বড় ভুল করেছিল। আমি সে সময়ে বাংলাদেশে দায়িত্বে ছিলাম না। তবে আমি এটি বলতে পারি তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বা অন্য কোনো মার্কিন কূটনীতিক ১/১১ এর পেছনে দায়ী নয়। আর কোনো গোপন কফি গ্রুপে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ বাংলাদেশিদের নির্দেশনা দেয়নি কি করতে হবে।

জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, তবে সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গতিপথ নিয়ে অনেক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল, যে প্রত্যাশা তৎকালীন সরকার, সামরিক বাহিনী এবং সুশীল সমাজের ছিল। 

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি ছিল, তা লাইন বিচ্যুত হয়েছিল। আর বাংলাদেশকে সঠিক পথে আনতে কিছু মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। আমরা সংস্কারকে সহযোগিতা করেছিলাম। আমরা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সমর্থন করেছিলাম। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলাম।

১/১১-এর বিশ্লেষণে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, পরিস্থিতির কারণে আমাদের বোঝাপড়ার ঘাটতি ছিল। আমাদের অনেকের কথা শোনার দরকার ছিল। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনিনি। বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকে আর্মির জেনারেল ও ব্রিগেডিয়ারদের কথায় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ কি চেয়েছিল, তাতে গুরুত্ব দেয়নি। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বললেও আর্মিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এ কারণেই হয়তো যুক্তরাষ্ট্র যে রকম প্রত্যাশা করেছিল বাংলাদেশ সে ধারায় যেতে পারেনি।

তিনি বলেন, আরও একটি ভুল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়সীমাতে বেশি জোর দিয়েছিল। নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যে সরকার নির্বাচিত নয়, এমন সরকার দীর্ঘ সময় শাসন করতে পারে না। তবে সে সময়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অগ্রাধিকার সংস্কারের চেষ্টা করেছিল। তবে যখন এটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সে সরকারের এডেন্ডা হচ্ছে নির্বাচন এবং ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে প্রভাব হাড়িয়েছে।

জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সে সরকারের চুক্তি হয়েছিল গোপনে। ফলে আমরা জানি না সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কি দরকষাকষি হয়েছিল। তখন আমরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমাদের ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা তাদের শিক্ষা পেয়েছেন এবং সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজগুলোকে এগিয়ে নেবে। তবে আমাদের ধারণা ভুল ছিল এবং যা বলেছিল তা বিশ্বাস করেছিলাম। আর বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অবনতি হতে দেখেছি, যার ফলে ২০২৪ এর জুলাই–আগস্ট হয়েছে। এ সময়ে অতীতের ভুল থেকে ভবিষ্যতের শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্কিন নীতিতে হতভম্ব ইউরোপে নতুন যুগ
  • মার্কিন নীতিতে হতভম্ব ইউরোপে নতুন যুগ, উদার গণতন্ত্র অবদমনের শঙ্কা
  • দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি, কূটনীতিকদের বললেন জামায়াতের আমির
  • সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি বললেন, তৃণমূলের মানুষ দ্রুত জাতীয় নির্বাচন চায়
  • সংস্কারের আগে নির্বাচনে জোর দেওয়া ছিল ১/১১ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল
  • এক-এগারোর ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র ভুল করেছে: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক
  • ওয়ান-ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ভূমিকায় বিরাট ভুল ছিল: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিযবুত তাহ্‌রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
  • কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সম্মানে বিএনপির ইফতার