রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদকে অব্যাহতি
Published: 9th, March 2025 GMT
রংপুরে চাঁদা দাবির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ও সদস্যসচিব রহমত আলী স্বাক্ষরিত
অব্যাহতি আদেশে বলা হয়েছে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের মুখপাত্র পদ থেকে নাহিদ হাসান খন্দকারকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে ইমতিয়াজ আহম্মদ বলেন, প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ে যাঁরা আছেন, তাঁদের মতামতে ও কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাহিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইমতিয়াজ বলেন, ‘এটা কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা অনেক রকম বিষয় পাচ্ছি। কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দিলে আপনারা সবাই জানতে পারবেন।’
অব্যাহতির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নাহিদ হাসান কোনো মন্তব্য করেননি।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে শোনা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের সঙ্গে এক ব্যক্তির টাকা নিয়ে দর–কষাকষি হচ্ছে। নাহিদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে সংগঠন থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তবে এসব অভিযোগ শুরু করে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন নাহিদ হাসান।
আরও পড়ুনচাঁদা দাবি করে বৈষম্যবিরোধীদের নেতা বললেন, ‘ইউএনও-ডিসিকে সামলাতে হচ্ছে’০২ মার্চ ২০২৫বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের কয়েকজন নেতা ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওর ওই কথোপকথনের ঘটনা ২৪ ফেব্রুয়ারির। রংপুর নগরের হাজিরহাট এলাকায় একটি ইকোপার্কের নামে অবৈধভাবে বালু তোলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওর কথোপকথনে নাহিদ আরেক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ব্যবসা আপনি বন্ধ করবেন কেন, ব্যবসা আপনি চালান। ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। প্রয়োজনে সময় নেন। আপনি তো দেখছেন বিষয়টি কোথায় গেছে, ইউএনও-ডিসিকে সামলাতে হচ্ছে। যদি মনে হয় কিছু কমাবেন, তাহলে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। আমি চাই না আপনাদের কোনো সমস্যা হোক। জানেন তো সংগঠন চালাতে হলে কী কী করতে হয়।’
আরও পড়ুনরংপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠা বৈষম্যবিরোধীদের সেই নেতার পক্ষে ‘জমির মালিকের’ সংবাদ সম্মেলন০২ মার্চ ২০২৫২ মার্চ রংপুরে সংবাদ সম্মেলনে আজহারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দাবি করেন, ইকোপার্ক নির্মাণ ও অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে যে জমিটির বিষয়ে আলোচনা উঠেছে, সে জমির মূল মালিক তিনি। তাঁর ভাই কানাডাপ্রবাসী আতিকুল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলাম জাল রিটের মাধ্যমে জায়গাটি দখল করেছেন। আদালতে মামলা চললেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাইয়েরা ওই জমি থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন। তাঁর জমি দখল হওয়ায় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা অপ্রচার; বরং ওই নেতারা অর্থের প্রলোভন অগ্রাহ্য করে সেখান থেকে চলে আসেন।
এর পরের দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের চাঁদা দাবি ও সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন সেই ইকোপার্কের মালিক আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর শাখার মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের নেতৃত্বে ইকোপার্ক থেকে ১ লাখ টাকা এবং প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‘মিড ডে মিল’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতে এবং ঝরে পড়ার হার কমানোর লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ১১৩টি স্কুলে ‘মিড ডে মিল’ চালু করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) প্রথম পর্যায়ে ৩০টি স্কুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমানের উদ্যোগে মিড ডে মিলের আয়োজন করা হয়।
মিড ডে মিল চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরাও এমন উদ্যোগ নেওয়ায় ইউএনওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার হ্রাস পাবে এবং তারা পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে পারবে।”
আরো পড়ুন:
এবার সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
স্কুলের মাঠে বসানো হচ্ছে মরিচের হাট
ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, “উপজেলার ১১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ৩০টি বিদ্যালয়ে এ আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের সহায়তায় এ কার্যক্রমকে স্থায়ী রূপ দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এই উদ্যোগ।”
তিনি আরো বলেন, “মিড ডে মিল চালুর পাশাপাশি প্রতিটি বিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য স্কুলের আঙিনায় ফুলের বাগান করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম দৃশ্যমান। এসব কার্যক্রম আমি নিজে থেকেই উদ্বোধন করেছি। আমি চাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুরা যেনো আনন্দ মুখর পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে।”
ঢাকা/অনিক/মাসুদ