বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়েছে এমন দেশের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে বাংলাদেশ। এ তালিকায় এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএন উইমেন প্রকাশিত ‘গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার ৩০ ইয়ার্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

গতকাল শনিবার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে।

ফলে কন্যাশিশু তথা মেয়েরা স্থায়ী দারিদ্র্যের চক্রে আটকে যায়, তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়, সম্ভাবনার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং জনগোষ্ঠীর অর্ধেক ঝুঁকিতে থাকায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে যে সাত দেশে কিশোরী ও তরুণীদের ডিজিটাল দক্ষতার হার ২ শতাংশ বা তার চেয়ে কম, সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বাংলাদেশে কিশোরীরা অপার সম্ভাবনার দেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চায়, যেখানে তারা নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা পাবে এবং উন্নতিতে সহযোগিতা করতে পারবে। তা সত্ত্বেও নানা প্রতিবন্ধকতা ও বৈষম্য তাদের আটকে রাখছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এক প্রজন্মে শুরু, চার প্রজন্ম ধরে ক্রেতা টানছে বাগমারার ‘পাতলা দই’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গ্রামাঞ্চলের কোনো আয়োজন যেন পাতলা দই ছাড়া পূর্ণতা পায় না। একটি পরিবার এই দই বানানো শুরু করেছিল। সেই পরিবারের হাত ধরেই চার প্রজন্ম ধরে ক্রেতার পছন্দের তালিকায় আছে ‘পাতলা দই’।

এখন এই ‘পাতলা দই’ বানান রাজশাহীর বাগমারার আকবর আলী (৫৫)। তিনি বাপ-দাদার এই পেশা আঁকড়ে ধরে আছেন ৪০ বছর ধরে। তাঁর দুই ভাইও একই কাজে যুক্ত আছেন।

বাগমারার দধির খয়রা গ্রামে থাকে আকবর আলীর পরিবার। গ্রামের নামকরণের সঙ্গে পরিবারটির একটি সম্পর্ক আছে, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। আকবরের বাড়ির পাশে দুই ভাই আফসার আলী ও তাসের আলীর বাস। পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য এই দই তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন।

আকবর আলী বলেন, তাঁর দাদা শুকুদ্দিন আর বাবা জহির উদ্দিন পাতলা দই বানাতেন। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনিও এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন। এখন তাঁর ছেলেও পারিবারিক এ কাজে যুক্ত হয়েছেন। আকবরের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলে স্নাতোকত্তর পাস করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সঙ্গে পারিবারিক এ উদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত আছেন।

সম্প্রতি মচমইল হাটে দেখা মেলে আকবর আলী ও তাঁর ছেলে শরিফুল ইসলামের। ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক দই বিক্রি করছেন তাঁরা। শরিফুল বলেন, পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি লেখাপড়ার ফাঁকে দই বানানো ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থাকেন।

দই বানানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাবা-ছেলে বলেন, তাঁরা দই বানানোর মূল উপকরণ দুধ কিনে আনেন উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে। প্রতিদিন প্রায় ৯০ কেজি পরিমাণ পাতলা দই তৈরি করেন। এসব দই তাঁরা উপজেলার মচমইল, হাট গাঙ্গোপাড়াসহ কয়েকটি হাটে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করেন। আবার কখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের জন্য চাহিদা মোতাবেক দই সরবরাহ করেন। ওজনভেদে ২৫ থেকে ৯০ টাকায় দই বিক্রি করেন তাঁরা।

মচমইল উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, আকবর আলীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় আছেন। এলাকায় তাঁদের বানানো পাতলা দইয়ের বেশ কদর। এই দইয়ের স্বাদও অন্য রকম।

মচমইল হাটে দই কিনতে আসা বিলবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধ শুকচাঁন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই পাতলা দইয়ের খদ্দের।

আকবর আলীর বিষয়ে শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, তাঁদের পরিবারটি এলাকার পুরোনো দই বিক্রেতা। তাঁদের পরিবারের বানানো দই এলাকার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ