তারাবির নামাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন খুলনা নগরীর বাগমারা এলাকার আলী আকবর। কিছুদূর যেতেই তাঁকে ঘিরে ধরে ১৫-২০ যুবক। নিজেদের ছাত্র পরিচয় দিয়ে নানাভাবে তাঁকে নাজেহাল করতে থাকে। যুবকরা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে পরিবারের সদস্যদের গালাগাল, চিৎকার-চেঁচামেচি করে ভয়ার্ত পরিবেশ তৈরি করে।
গত মঙ্গলবারের এ ঘটনা প্রসঙ্গে আলী আকবরের ছেলে মাহফুজুর রহমান ববি বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আমরা বিএনপি মতাদর্শের হলেও ২০১৮ সালের পর সম্পত্তি রক্ষায় বাবা আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এটাকে ইস্যু করে ছাত্র পরিচয়ে যুবকরা বাড়িতে মব তৈরি করে। আমার বাবা পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন।’ কোরিয়াপ্রবাসী ববি মোবাইল ফোনে আরও বলেন, দুই ছাত্র আমাকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা চেয়েছে। আমি বলেছি, বেতন পেয়ে কিছু টাকা পাঠাব। তারা কোনোভাবেই শুনছে না। এ ঘটনায় সাজিদ ও রাব্বী নামে বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্রনেতা জড়িত।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর হাদিস পার্কের সামনে গফফার টাওয়ারে ঢুকে পড়ে একদল যুবক। ভবনটিতে নৌপরিবহন ব্যবসায় যুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আছে। ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢুকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাসিয়ে যায় যুবকরা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরীর সহকারী মুখপাত্র হানযালা হোসেন সানি। গত ২ মার্চ ভবনটিতে আবার গিয়ে প্রতিষ্ঠানের খাতাপত্র নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করে আয়-ব্যয়ের হিসাব দেখতে চান তারা।
এম এম শিপিংয়ের স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বলেন, ছাত্ররা অফিসে এসে শেখ পরিবারকে কারা টাকা দেয় তা জানতে চায়, হিসাবের খাতা, কাগজপত্র দেখতে চায়। আমরা বলেছি, এগুলো দেখাব কেন? পরে নেতাদের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে বলে চলে গেছে তারা।
শুধু এসব ঘটনাই নয়, খুলনায় ছাত্র পরিচয় দিয়ে বাড়ি, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই মব তৈরির ঘটনা ঘটছে। আওয়ামী লীগ নেতা, সমর্থক ও ব্যবসায়ীদের অফিসে যাচ্ছে ছাত্র পরিচয় দেওয়া যুবকরা। চাঁদা দেওয়ার পরই কেবল মুক্তি মিলছে। যারা চাঁদা দিচ্ছে না, তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এতে অন্যরাও ভয় পেয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি নগরীর শিববাড়ী মোড়ে মানববন্ধন করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নগর সদস্য সচিব জহুরুল তানভীরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে বহিষ্কার দাবি করেন কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী। অভিযোগ অস্বীকার করে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নেতাদের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির পাল্টা অভিযোগ তোলেন তানভীর।
এদিকে নগরীতে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ, রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনগুলো নীরব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রতিবাদ না হওয়ায় দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা। খুলনা সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, একটি সফল গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ায় ছাত্রদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু সেই শ্রদ্ধা সম্মানের জায়গা ব্যবহার করে তারা যা করছে, সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মব কালচার বন্ধে সব শ্রেণির নাগরিকদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
একের পর এক ঘটনা
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের একটি দল হানা দেয় মোংলা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এস এম এন্টারপ্রাইজের কার্যালয়ে। প্রতিষ্ঠানের মালিক সুলতান হোসেন খান আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝালকাঠি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। যুবকরা বাড়ি ও অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জরুরিভাবে দেখা করতে বলে চলে যায়। পরে ৩ মার্চ বিকেলে আবার গিয়ে কেয়ারটেকারকে পুলিশে তুলে দেওয়ার জন্য টানাহ্যাঁচড়া করে। কেয়ারটেকার মনির হোসেন বলেন, ওদের হাত-পা ধরে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি। অনেকে এসেছিল এর মধ্যে আশিক, আবদুল্লাহ ও রাব্বী নাম বলে গেছে।
জানা গেছে, আশিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক, সৈয়দ আবদুল্লাহ ও রাকিব হাসান সুজন ওরফে রাব্বী যুগ্ম সদস্য সচিব। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, ওই বাড়ির মালিক আওয়ামী লীগের দোসর। তানভীরই প্রথম আমাদের নিয়ে সেখানে যায়। আমরা বাড়িটি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম। পরে অনেকের অনুরোধে দিইনি। টাকা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি পণ্য পরিবহন ব্যবসায়ী মোহাম্মাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো.
নৌপরিবহন ব্যবসায় যুক্ত অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই গেছে ওই যুবকরা। তারা বিষয়টি মীমাংসার জন্য তানভীর ও আজাদ নামের দুই নেতার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। অনেকেই কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন। তবে ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি।
সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে হল রোডে নিজের বাড়িতে কাজ করছিলেন আবদুল লতিফ। ৫ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায় রাব্বীর নেতৃত্বে একদল যুবক ওই বাড়ি গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। আবদুল লতিফের প্রতিবেশী মোস্তফা কামাল বলেন, যুবকরা মব তৈরি করে অনৈতিক আবদার করছিল। আমরা কথা বলতে গেলে দুর্ব্যবহার শুরু করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ওরা শাসিয়ে চলে যায়।
গত ১৬ অক্টোবর টাকা আদায়ের জন্য অহিদুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। ৯৯৯-এ কল পেয়ে নগরীর কেডিএ অ্যাভিনিউয়ের হোটেল রোজ থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি ইমন হাওলাদারকে। পরে এ ঘটনায় অপহরণ মামলা হয়। দিঘলিয়া উপজেলার বিরোধপূর্ণ ইটভাটা দখল করিয়ে দিতে খুলনা থেকে ছাত্ররা গিয়ে ভাঙচুর চালায়।
গত সপ্তাহে সেনহাটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজীকে শিরোমনির একটি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্ররা। এর আগে তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণের আংটি, দুটি মোবাইল ফোনসেট ও নগদ এক লাখ টাকা কেড়ে নেয় বলে তাঁর পরিবারেরর সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। অবশ্য দিঘলিয়া থানার ওসি বলেন, গ্রেপ্তারের আগে কী হয়েছে, আমরা কিছু জানি না।
দায় চাপায় একে অন্যের ওপর
বিভিন্ন স্থানে অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে রাকিব হাসান সুজন ওরফে রাব্বি বলেন, ‘বাগমারার ঘটনায় আমি জড়িত না। ওরা আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় ৫ আগস্ট আমি বাড়িটি ভাঙচুর করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু না করে চলে এসেছি। ছাত্রদের ঠেকাবে বলে তানভীর ওই বাড়ি থেকে টাকা নিয়েছে। এর কল রেকর্ড আমি দিতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘হল রোডের কাজ আমরা জোর করে বন্ধ করিনি। ওই বাড়ির পেছনে তানভীর থাকে। সে এটা করিয়েছে।’
বাগমারার আলী আকবরের বাড়িতে মব তৈরির বিষয়ে জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাজিদ হোসেন বলেন, ‘বাইরের ছাত্ররা এসে তাকে পুলিশে দেওয়ার জন্য ধরেছিল। আমার এলাকা হওয়ায় আমি এগিয়ে যাই। পরে সেনাবাহিনীও এসেছিল। কারা টাকা চেয়েছে জানি না। এ ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা নেই।’ তবে জহুরুল তানভীর বলেন, ‘জিলা স্কুলে আমাদের বড় ভাই ববি। রাব্বিরা ওই বাড়িতে টাকা চাওয়ায় আমি হস্তক্ষেপ করে বন্ধ করেছি। তাই আমার নামে মিথ্যা রটাচ্ছে।’
‘সভ্য সমাজে এটা চলতে পারে না’
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা কেউ অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচার হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ করলেই তাদের সম্পদ দখল, স্ত্রী-সন্তানদের জিম্মি করে টাকা আদায় বৈধ হয়ে যাবে– এটা সভ্য সমাজে চলতে পারে না।
নগরীর একটি থানার অপারেশন অফিসার বলেন, ছাত্ররা কারও বাড়িতে গেছে খবর পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে যাই। তাদের নিষেধ করি, তখন উল্টো আমাদের আওয়ামী লীগের দোসর বলে গালি দেয়। থানা ঘেরাওয়ের হুমকি দেয়।
চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন, বহিষ্কার
গত ৬ মার্চ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের খুলনা মহানগরের সদস্য সচিব জহুরুল তানভীরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করে সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী। মানববন্ধনে মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব রাকিব হাসান সুজন ওরফে রাব্বি বলেন, ‘সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করে তানভীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা নিয়েছে। এসবের কল রেকর্ড আছে। নৌপরিবহন ব্যবসায়ীদের অফিসে অফিসে লোক পাঠিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা সংগঠনের ব্যানারকে চাঁদাবাজিতে ব্যবহার হতে দিতে পারি না।’
এ ব্যাপারে জহুরুল তানভীর বলেন, রাব্বিসহ ওরা চারজন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে মব তৈরি করে চাঁদাবাজি করছে। নিষেধ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। ওদের কাজে বাধা দিলেই ওরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়।
একই অভিযোগে হানযালা সানি অভিযুক্ত হওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তানভীর বলেন, শেখ বাড়ির জাহাজ কারা চালায়, এটা খোঁজ নিতে হানযালা ওই অফিসে গিয়েছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের তথ্য পাওয়ায় চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্য কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদেরও বহিষ্কার করা হবে।
‘অধিকাংশ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা চেপে যান’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, অধিকাংশ বিষয়েই ভুক্তভোগীরা চেপে যান। পুলিশ না জানলে ব্যবস্থা নেবে কীভাবে? তবে অপরাধ বন্ধ করা পুলিশের একার কাজ নয়। এ জন্য পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক নেতা ও এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। কেউ মব তৈরি করতে চাইলে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ব যবস য় আবদ ল ল ব যবহ র র সদস য ওই ব ড় র জন য মব ত র কম ট র র বল ন এ ঘটন ঘটন য় য বকর আওয় ম স গঠন নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ঐতিহাসিক গোয়ালদী শাহী মসজিদ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
সোনারগাঁওয়ে সুলতানি শাসনামলে নির্মিত ৫০৬ বছরের পুরনো অনন্য মুসলিম নিদর্শন গোয়ালদী শাহী মসজিদ সংস্কার ও যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’।
শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার গোয়ালদী এলাকায় অবস্থিত গোয়ালদী শাহী মসজিদের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী, কবি, লেখক, গণমাধ্যম কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
সংগঠনটির আহ্বায়ক কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সোনারগাঁওয়ে স্বাধীন সুলতানদের শাসনামলে ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেনশাহের আমলে গোয়ালদী শাহী মসজিদটি নিমার্ণ করা হয়।
এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন থাকলেও মসজিদটির বিভিন্ন অংশ বর্তমানে ঝঁকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনের স্তম্ভটি হেলে পড়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে।
এছাড়া মসজিদের চার কোনায় চারটি স্তম্ভের উপরের মাথার গোলাকার গম্বুজ ইতিমধ্যে ধসে গেছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো বিলীন হয়ে যাবে।এ ঐতিহাসিক মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করে যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য দাবি জানান তারা।
মানবন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক, বিশিষ্ট কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েস বলেন, প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁওয়ের প্রবেশ মুখগুলোতে যদি সোনারগাঁ অঞ্চলের প্রতিটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সিটিজেন চার্টার স্থাপন করা হয় তাহলে পর্যটকরা সহজেই এ স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাতে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করেন সেজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা,জোড় দাবী জানাই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব লেখক ও সাংবাদিক রবিউল হুসাইন, উদীচী’র সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোফাখখার সাগর, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক খায়রুল আলম খোকন, কবি ও সাংবাদিক এরশাদ হুসাইন অন্য ও সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের নির্বাহী সদস্য রোকেয়া আক্তার বেবী ও শিক্ষিকা শামীমা নাসরিন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের অর্থ সম্পাদক সেলিম আহমেদ প্রধান, সংগঠক খাদিজা আক্তার, ইস্কান্দার আলী আলভী ও মোমেন মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম সেতু সংরক্ষণের জন্য এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’ মানববন্ধন কর্মসূচু পালন করে। পরে এ সেতু সংরক্ষণের জন্য গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কৃতি উপদেষ্টা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কাসটোডিয়ান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।