সাহ্‌রিতে ভরপেট পানি খেয়ে ফেলার ভুলটা আমরা অনেকেই করি। সারা দিনের পানির চাহিদা মেটানোর কথা ভেবে, শেষ রাতে অনেকেই পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, একবারে অতিরিক্ত পানি খাওয়া ঠিক নয়। খাবার খাওয়ার পরপরই পানি খাওয়াটাও উচিত নয়। শেষরাতে একেবারে শেষ মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে খাবার খেয়েই ঢকঢক করে গ্লাসের পর গ্লাস পানি খাওয়া যাবে না। এতে কিন্তু পেটে বেশ অস্বস্তি হয়। হজমের সমস্যাও হতে পারে। সুস্থ থাকতে করণীয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ মতামত জেনে নেওয়া যাক। 

সাহ্‌রিতে তিন গ্লাস তরল খাওয়া যেতে পারে। তবে সেটি একবারে নয়। খেতে হবে ধাপে ধাপে। এই তরল হতে পারে পানি কিংবা ফলের রস। অর্থাৎ সবকিছুর মিলিত পরিমাণ হতে পারে তিন গ্লাস। তবে যাঁরা রোদে বা চুলার কাছে কাজ করেন, তাঁদের পানির চাহিদা আরেকটু বেশি। সব ধরনের তরলের এই সম্মিলিত পরিমাণটা তাঁদের ক্ষেত্রে হতে পারে ২ লিটার। আর সাহ্‌রির সময় চা-কফি অবশ্যই বর্জনীয়। তবে খেতে পারেন ফলমূল। বিশেষ করে কলা, আপেল, তরমুজ, বাঙ্গির মতো ফল খাওয়া যেতে পারে, যা আপনার শরীরে পানির জোগান দেবে। এমনটাই বলছিলেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা.

রোজানা রউফ।

আরও পড়ুনদিনে দুটি খেজুর খেলে কত উপকার, জানেন?০১ মার্চ ২০২৫

রাজধানীর আজিমপুরের গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান বলেন, মূল খাবার খাওয়ার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে পানি খাওয়া যাবে। খাবার খাওয়ার সময় খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাওয়া ঠিক নয়। আর খাওয়া শেষ করার অন্তত ১৫-২০ মিনিট পর পানি খেতে হবে। তা ছাড়া খাওয়াদাওয়া, পানি খাওয়া সব সেরে ফজরের নামাজের পর খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা ভালো।

সারা দিনের পানির চাহিদা পূরণ করতে এভাবে ধাপে ধাপে তরল খাবার খাওয়ার অভ্যাস করে নেওয়া উচিত। আর সুস্থতার এই চর্চা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটু আগেভাগে ঘুম থেকে উঠতে হবে। খাবারের আগে ও পরে পর্যাপ্ত সময়ের ব্যবধান রেখে ভাগে ভাগে পানি বা তরল খাবার খেয়ে নিন। তাহলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে উঠলেও সহজে পানিশূন্য হয়ে পড়বেন না, আর পেটের গোলযোগের ঝুঁকিও কমবে।

আরও পড়ুনরমজান মাসে কোন সময় চিয়া সিড খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন০২ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদের বিভিন্ন স্থানে বরফ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা

চাঁদের পৃষ্ঠে পানির অস্তিত্ব অনুসন্ধানে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার চাঁদে অবতরণকরা চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদের মেরু এলাকার বেশ কিছু স্থানে বরফ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাঠানো চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করে। মহাকাশটিতে থাকা বিক্রম ল্যান্ডারের চেসট নামের প্রোবের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠের ১০ সেন্টিমিটার গভীরের তাপমাত্রা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী দুর্গা প্রসাদ করণম জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠে বরফ জমা হয়েছিল। গবেষণার তথ্য সেই বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে। চাঁদে বরফের অস্তিত্ব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, চন্দ্রযান-৩–এর বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের প্রান্তে প্রায় ৬৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে অবতরণ করে। এই অবতরণ স্থানের ছয় ডিগ্রি কোণে সূর্যের দিকে মুখ করা একটি ঢালু জায়গা রয়েছে। সেখানকার তাপমাত্রা দিনে প্রায় ৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে মাইনাস ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বিক্রম ল্যান্ডারের অবতরণ স্থানের মাত্র এক মিটার দূরে থাকা একটি সমতল পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস; অর্থাৎ সামান্য একটি ঢালের কারণে আগের স্থানের তাপমাত্রার কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।

চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে একটি মডেল তৈরির পাশাপাশি চাঁদের ঢালু স্থান কীভাবে তাপমাত্রা প্রভাবিত করতে পারে, তা জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। সেই মডেলের তথ্যমতে, ১৪ ডিগ্রির বেশি কোণে ঝুঁকে থাকা ঢালু স্থানটির পৃষ্ঠের কাছাকাছি বরফ জমা হওয়ার জন্য যথেষ্ট ঠান্ডা তাপমাত্রা রয়েছে। আর তাই এই ঢালু স্থানটিতে বরফ থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত, চাঁদে বরফ পাওয়া গেলে পৃথিবী থেকে চাঁদে পানি পরিবহনের খরচ ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। ফলে চাঁদে মানুষের ঘাঁটি স্থাপনের পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহ বা মহাকাশ গবেষণার কাজও সহজ হবে।
সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ