ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়ে মশাল মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রীরা। এ ছাড়া রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রীদের আরেকটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রোকেয়া হলের সামনে আসে। মিছিলে তারা ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যদণ্ড কার্যকর এবং বিগত বছরগুলোতে যারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান ছাত্রীরা। 

মিছিলে তারা ‘ধর্ষকদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাঙ্গ দ্যা রেপিস্ট’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’সহ নানান স্লোগান দেন। 

মিছিল শেষে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে জড়ো হন। মাগুরায় একটি শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় তারা এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এরপর একজন নারী শিক্ষার্থী স্লোগান দেন, ‘আমরা কি ধর্ষকদের বাইরে দেখতে চাই?’ তখন বাকি ছাত্রীরা সমস্বরে ‘না’ বলে ওঠেন।  

রোকেয়া হলের ছাত্রী ফারজানা আক্তার আরজু বলেন, ‘সম্প্রতি আছিয়া নামে একটি শিশুর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে দুজন পুরুষ ও একজন মহিলা জড়িত। এই ধর্ষকদের আমরা প্রকাশ্য ফাঁসি চাই। যে মহিলা সহযোগী ছিল, তারও ফাঁসি চাই। ধর্ষণ প্রমাণিত হলে, তার একমাত্র শাস্তি হবে প্রকাশ্য ফাঁসি। আমরা আর গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার নাটক আর দেখতে চাই না। শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্ত হব না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে সতর্ক করতে চাচ্ছি। বিগত বছরগুলোতে যতগুলো ধর্ষণ হয়েছে, সবগুলোর বিচার করতে হবে। সরকার যদি একটা ফাঁসি দেয়, তাই দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে।’

হলের আরেক শিক্ষার্থী আদিবা সায়মা খান বলেন, ‘আমরা ধর্ষকদের স্থায়ী শাস্তি চাচ্ছি। আমরা যদি বাইরে বের হই এবং আমাদের যদি নিরাপত্তাই না থাকে, তাহলে এই রাষ্ট্র আমাদের কী দিচ্ছে। সরকারের দায়িত্ব আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া। আইন-শৃঙ্খলা উন্নত করা। ধর্ষকদের এমন শাস্তি দেওয়া যেন অন্যকেউ পুনরায় সেরকম চেষ্টাও না করতে পারে।’

এ দিকে দেশব্যাপী সংগঠিত ধর্ষণ, নারী বিদ্বেষী মবের আগ্রাসন এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রা করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে ক্যাম্পাসে পদযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়। 

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতারা বলেন, ফ্যাসিবাদী প্রশাসনিক কাঠামো ভাঙতে না পেরে আমাদের রাষ্ট্র নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বয়স, পেশা, ধর্ম নির্বিশেষে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, নারীরা নিজের ঘরে নিরাপদ না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ না, কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ না। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী নারীর প্রতি ঘটা সহিংসতাকারীদেরকে শনাক্ত করতে প্রায়ই ব্যর্থ হয়, আটক করলেও জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। আইন মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড লিখিত থাকলেও তা কার্যকর করা হয় না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করছি, কাঠামোগতভাবে এই রাষ্ট্র ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম না, আমরা মনে করি আইনগত দূর্বলতা বাংলাদেশে ধর্ষক তৈরি করে। আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি ধর্ষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে, নারীবিদ্বেষী আগ্রাসী মব, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে। এমতাবস্তায়, আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে ধর্ষকদের শ্রেণি, বয়স, পেশা, ক্ষমতা নির্বিশেষে দ্রুততম সময়ে শনাক্তকরণ করতে হবে, আটক করতে হবে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাইগ্রেন’ কি ভয়াবহ কোনো রোগ?

চিকিৎসকেরা বলছেন, বিশ্বের অনেক মানুষ মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন মাইগ্রেন সারিয়ে তোলা যায় না। তাহলে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগলে করণীয় কী?

ভারতীয় নিউরোলজিস্ট ডা. অমিতাভ ঘোষ একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ মাইগ্রেনের ব্যথা টিপিক্যালি মাথার একদিকে হয়। হয়তো ডানে, নয়তো বামে। পরে ছড়াতে পারে। ব্যথা বেড়ে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু শুরু হয় একদিক থেকে। দপ-দপ করে। কারও কাছে মনে হতে পারে, কেউ মাথা পেটাচ্ছে। কেউ বলে মাথার ভেতর থেকে ফেটে বেরোচ্ছে। উজ্জ্বল আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হয়। আওয়াজে কষ্ট হয়। রোগী ঘরের আলো নিভিয়ে শুয়ে থাকতে চায়। অনেকের বমি আসে। দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হয়। অনেক সময় মনে হয় টেবিলে মাথা হেলিয়ে শুয়ে থাকি। বা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়তে ইচ্ছা হয়। এগুলো টিপিক্যাল মাইগ্রেনের লক্ষণ।

এই নিউরোলজিস্ট আরও বলেন, ‘‘মাইগ্রেন ভয়াবহ কোনো রোগ নয়। এটি সারিয়ে তোলা যায় না কিন্তু কমিয়ে রাখা যায়। অনেক সময় মাইগ্রেনের ব্যথা ঘন ঘন হতে পারে। আবার এক মাসে একবার নাও হতে পারে। বিশ্বের প্রতি পাঁচ জন নারী ও শিশুর মধ্যে একজন মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রত্যেক দশ জনে একজন মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্বের প্রায় এক শতাংশ মানুষ প্রত্যেক মাসে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগে থাকেন। ’’

আরো পড়ুন:

কীভাবে বুঝবেন গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নাকি হার্টের ব্যথা

ঘুম কম হয় কেন?

ডা. অমিতাভ জানান, যাদের ঘন ঘন ব্যথা হয় তাদের ওষুধ দেই যাতে ব্যথা কমিয়ে রাখা যায়। যাদের মাসে একবার মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয় তাদের নরমাল পেইন কিলার বা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। যদি ব্যথার মাত্রা বেশি থাকে তাহলে স্ক্যান করা লাগতে পারে। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মহানবীর (সা.) সময়ে স্বাবলম্বী নারীদের পেশা
  • নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
  • রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ইয়াংওয়ানের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে
  • দিনাজপুরের বনতাড়া গ্রামে ৭ দিন আতঙ্কের পর এল সম্প্রীতির বার্তা
  • নেত্রকোনায় কৃষক আনোয়ারুল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
  • ‘ও খোদা, এই ট্রাক দি আঁই কিরমু’
  • চলন্ত ট্রাকের চাকা বিস্ফোরণের পর রিংয়ের আঘাতে বিচ্ছিন্ন হলো পথচারীর পা
  • মধ্যপ্রাচ্যে নিষিদ্ধ ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’, মুখ খুললেন জন আব্রাহাম
  • ‘গায়ে আগুন লাগার পর তা নেভাতে আমি পশুর মতো এদিক-ওদিক ছুটছিলাম’
  • ‘মাইগ্রেন’ কি ভয়াবহ কোনো রোগ?