শরীর আর মনের সমন্বয়ে বেড়ে ওঠা আপনাকে ঠিক রাখতে আশ্রয় নিতে পারেন যোগ ব্যায়ামের। শুরুতে একটু কষ্টকর এবং পরিশ্রম মনে হলেও কিছুদিনের নিয়মিত অনুশীলনে এ ব্যায়ামে মানিয়ে নিতে পারবেন নিজেকে। এরপর খুব কাছ থেকেই দেখতে পারবেন শরীরের হাত ধরে বেড়ে ওঠা আপনার মনের পরিবর্তন। বয়স বাড়লেও বাড়বে না মন আর শরীরের বয়স। আমৃত্যু থেকে যাবেন টিনএজে। চলুন, জেনে নিই–
ব্যথা ও নমনীয়তা: দেহের নমনীয়তা যোগ ব্যায়ামের সবচেয়ে বড় সুবিধা। যোগ ব্যায়ামের প্রথম ক্লাসে আপনি হয়তো আপনার অঙ্গগুলো স্পর্শ করতে পারবেন না। আপনি যদি হাল না ছেড়ে এর পেছনে লেগে থাকেন, তবে ধাপে ধাপে সহজ অনুভব করবেন এবং একসময় অনেক কঠিন আসনগুলোও আপনার কাছে সহজ হয়ে উঠবে। দূর হয়ে যাবে ব্যথা। বৃদ্ধি পাবে দেহের নমনীয়তা।
সঠিক অঙ্গবিন্যাস: আমাদের মাথা দেখতে সাধারণত গোল, বড় ও ভারী বোলিং বলের মতো। যখন সোজা হয়ে থাকি ও মাথাটি মেরুদণ্ডের ওপর ভর রাখে, তখন আমাদের ঘাড় ও পিঠের জন্য মাথাকে সাপোর্ট দেওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যায়। যখনই মাথাটি কয়েক ইঞ্চি সামনে নিই, ঘাড় ও পিঠে চাপ অনুভব করি। এভাবে দিনে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা মাথাটি নাড়াচাড়া করলে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই। ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের বাজে অঙ্গবিন্যাসই দায়ী। এটি ঘাড়, পিঠ, অন্যান্য পেশি এবং হাড়ের গোড়ায় ব্যথার সৃষ্টি করে। যোগ ব্যায়াম আমাদের অঙ্গবিন্যাসে সহায়তা করে এসব সমস্যা থেকে দূরে রাখে।
অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মেরুদণ্ডের সুরক্ষা: হার্ট, লিভার, কিডনি, অগ্ন্যাশয়ের মতো দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ ও গতিশীল না রাখতে পারলে এক সময় পেশি শক্তিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। যোগ ব্যায়াম আমাদের দেহের এই অপরিহার্য অংশগুলোকে সচল রাখতে বেশ ভালো রকমের সহায়তা করে। মেরুদণ্ড আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চলাফেরার সময় দেহের যে পরিবর্তন ঘটে, সেটিকে পুরোপুরি সামলে নিয়ে আমাদের নার্ভকে ঠিক রাখে এই মেরুদণ্ড। পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাবে এ মেরুদণ্ডের কার্যক্ষমতা শেষ হয়ে যেতে পারে।
মজবুত হাড় এবং রক্ত সঞ্চালন: ভারী ব্যায়ামগুলো আমাদের হাড়ের শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। যোগ ব্যায়ামের কয়েকটি বিন্যাসে দেহকে রে তুলতে হয়। এতে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া অন্য ব্যায়ামগু ওপরে আমাদের হাতের হাড়কে মজবুত করে, মেরুদণ্ডের কার্যকারিতা বজায় রাখে। যোগ ব্যায়াম আমাদের দেহে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বেড়ে যায়। যোগ ব্যায়ামের শিথিলায়ন চর্চা আমাদের হাত ও পায়ের রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে। এতে আমরা সতেজ থাকি। তাছাড়া যোগ ব্যায়াম আমাদের সেলগুলোতে অক্সিজেন সবরাহ করে। এতে আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে।
কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি: শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে দেহের প্রয়োজনীয় হরমন সঠিক সময়ে প্রবাহিত হওয়াটা জরুরি। এতে শরীর হালকা হবে এবং অধিক সময় কাজ করেও মানুষ ক্লান্তিবোধ করবে না। এটি সম্ভব হবে একমাত্র যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে। u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য গ ব য য় ম আম দ র আম দ র দ হ
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় দুই মাসে ২১৩ শ্রমিকের মৃত্যু
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। এ ছাড়াও নির্মাণ খাতে ৭ জন ও পোশাক খাতে ৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এই দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে আহত হয়েছেন ১৭০ জন।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে উল্লিখিত তিনটি খাতের বাইরে অন্যান্য খাতে ২১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া একই সময়ে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে ছিলেন ৭০ জন পরিবহন খাতের, ১৮ জন নির্মাণ খাতের এবং ১২ জন পোশাক খাতের। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্যান্য খাতের ৭০ জন শ্রমিক। জাতীয় দৈনিকগুলোয় প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে বিলস এ জরিপ পরিচালনা করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবছর ২৮ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক স্মৃতি দিবস পালিত হয়। যেখানে কর্মক্ষেত্রে নিহত, পঙ্গু, আহত বা অসুস্থ হওয়া শ্রমিকদের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশেও গতকাল দিবসটি পালিত হয়েছে।