প্রাণ ফিরেছে গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া খালের
Published: 8th, March 2025 GMT
কচুরিপানা ও আবর্জনায় দীর্ঘদিন ধরে খালটির পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এর পানি দিয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ও ১০টি মসজিদের মুসল্লিদের অজু করা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এ সমস্যার অবসান হয়েছে।
গোপালগঞ্জে চার বছর ধরে একটি খাল ছিল কচুরিপানা ও আবর্জনায় ভর্তি। পাঁচ গ্রামের মানুষ এ খালের পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল। খালের আশপাশে রয়েছে অন্তত ১০টি মসজিদ। মসজিদের মুসল্লিরা খালের পানি দিয়ে অজু করতেন। কচুরিপানা ও আবর্জনায় সেটিও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষায় টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দুই কিলোমিটার দীর্ঘ গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া খালের কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত রোববার এ খালের কচুরিপানা ও আবর্জনা অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। গত ১ মার্চ খাল পরিষ্কারের এ কাজ শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ।
কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারের পর খালটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। খালে এখন স্বচ্ছ পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
গিমাডাঙ্গা গ্রামের বিশ্বাস সিরাজুল আলম (৬৫) বলেন, গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া খালটির সঙ্গে বাঘিয়ার নদীর সংযোগ রয়েছে। নদী থেকে কচুরিপানা ও আবর্জনা খালে ঢুকে জমাট বেঁধে ছিল। এতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে খালের পানি। এতে পাটগাতী, টুঙ্গিপাড়া, পাঁচকাহনিয়া, গিমাডাঙ্গা ও কাজীপাড়া গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানির কষ্টে দুর্ভোগে পড়েন। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার প্রশাসক মঈনুল হক দুর্ভোগের কথা জানতে পারেন। তিনি খাল পরিষ্কারের উদ্যোগ নেন।
গিমাডাঙ্গা গ্রামের ৭০ বছর বয়সী লিটু শেখ ও টুঙ্গিপাড়া গ্রামের ছালু কাজী বলেন, খালের পাশে ১০টি মসজিদ রয়েছে। কচুরিপানা ও আবর্জনায় খালের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। খালপারের মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিরা খালের পানি দিয়ে অজু করতে পারতেন না। বিষয়টি তারা পৌর প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানান। তিনি প্রথম রোজার মধ্যে খাল পরিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি দুই দিন কাজ করিয়ে খাল পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এখন খালে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ শুরু হয়েছে। এখন থেকে অজু করতে সমস্যা হবে না। এ জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে তারা ধন্যবাদ জানান।
কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হিমেল কাজী বলেন, খালের দুই পাশ সুন্দরভাবে বাঁধাই করা। কচুরিপানা ও ময়লা আবর্জনার কারণে খালের পানি কেউই ব্যবহার করতে পারত না। খালটির সৌন্দর্যও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবর্জনা অপসারণ করায় খালটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। খালপারের বাসিন্দারা গোসল ও অজুর পাশাপাশি গৃহস্থালি কাজে খালের পানি ব্যবহার করতে পারছেন।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার প্রশাসক মঈনুল হক বলেন, গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া খালটি চার বছর ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটি নিয়ে দুর্ভোগের কথা স্থানীয় মুসল্লিদের মাধ্যমে জানতে পারি। এরপর দুই দিনব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করা হয়। কচুরিপানা ও আবর্জনা অপসারিত হয়েছে। এখন খালটির পানি জনগণ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করছেন। জনসেবায় পৌর প্রশাসনের কল্যাণকর কাজ চলবে বলে জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আবর জন খ ল পর ষ ক র পর ষ ক র র মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে পুলিশের বাধায় রামায়ণ নাটক প্রদর্শন বন্ধ
বরিশালে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাম নবমী উৎসব উপলক্ষে ‘রামায়ণ’ নাটক প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। হিন্দুদের ভগবান শ্রীরাম চন্দ্রের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার নগরীর কাউনিয়া শ্রীশ্রী মনসা মন্দিরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই প্রদর্শন হতো নাটকটি। আয়োজকরা বলছেন, হামলার হুমকি ও নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, অনুমতি না নেওয়ায় নাটক প্রদর্শন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
মনসা মন্দির পূজা কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য প্রীতম দাস জানান, ভগবান শ্রীরাম চন্দ্রের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিভাগে সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠান হয় এই মন্দিরে। রীতি অনুযায়ী চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান হয়। ৫ এপ্রিল ভগবান রাম চন্দ্রের প্রতিমা আনা হয় মন্দিরে। পরদিন পূজা, যজ্ঞ, পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যা আরতি হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছিল প্রদীপ প্রজ্বালন ও ভগবান শ্রীরাম চন্দ্রের জীবন কাহিনি নিয়ে ‘রামায়ণ’ নাটকের মঞ্চায়ন। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা সকাল থেকে অনুষ্ঠানে বাধার সৃষ্টি করেন। আজ ৯ এপ্রিল সন্ধ্যা আরতি, নগর পরিক্রমা ও বিসর্জনের অনুষ্ঠান রয়েছে।
কমিটির আরেক সদস্য হৃদয় দাস জানান, পুলিশকে অনেক অনুরোধ করার পরও তারা বলেছে, হুমকি আছে, তাই অনুষ্ঠান করা যাবে না। মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তারা শুধু রামায়ণ নাটক নিয়ে সমস্যার কথা বলেছেন।
নাটক মঞ্চস্থের দায়িত্ব পাওয়া তিলকস গ্রুপ অ্যান্ড থিয়েটারের পরিচালক তিলক বসু অনিম বলেন, দীর্ঘ দুই মাস ধরে আমরা রামায়ণ নাটক মঞ্চস্থ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে সাউন্ড সিস্টেম, ডেকোরেটর মালপত্রসহ সব সামগ্রী চাপের মুখে খুলে ফেলা হয়। পুলিশের এ সিদ্ধান্তে আমরা মর্মাহত।
এ বিষয়ে কাউনিয়া মনসা মন্দিরে উপস্থিত কাউনিয়া থানার এসআই মো. জিসান জানান, মন্দিরে অনুষ্ঠান করার জন্য নগর পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশে আয়োজকদের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেছি।
কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার আইচ জানান, সামনে এসএসসি পরীক্ষা থাকায় নাটকটির প্রদর্শন বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে পূজা এবং নগর পরিক্রমাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে চলবে। আর নাটক যেহেতু পূজার অংশ নয়, তাই পরে কখনো এটি মঞ্চস্থ করার কথা বলা হয়েছে। তখন পুলিশ আয়োজকদের সুরক্ষা দেবে।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) রিয়াজ হোসেন, আমি বিষয়টি জানি না। ধারণা করছি, ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সে জন্যই নাটকটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে পুলিশ সেটি বন্ধ করেছে।