রমজান উপলক্ষে হোটেল পেনিনসুলায় শুরু হয়েছে ‘রমজান ইফতার ফিস্ট’। পেনিনসুলার এক্সিকিউটিভ শেফ মিলরয় নানায়াক্কারা ও তার শেফ টিমের তত্ত্বাবধানে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি শতাধিক সুস্বাদু খাবারের মেনুতে সাজানো থাকছে ইফতার ও ডিনার আয়োজন। হোটেলটি নিয়ে এসেছে ‘ইফতার বোনানজা’ স্প্রেডও। এর মধ্যে ইফতার টেকওয়ে বক্সের দাম মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা। থাকছে পটেটো মোজারেলা স্টিকস, কর্ন ফ্লেক্স ক্রাস্টেড চিকেন, মেক্সিকান চিকেন অ্যাঞ্জেল পিৎজা, হানি বি বিবিকিউ চিকেন স্কেভারস, টেংরি কাবাব, স্কচবেল কাবাব, বেগেফেবল, বেগফেল, মেক্সিকান চিকেন পিৎজাসহ বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু আইটেম। এ ছাড়া ইফতার মেনুতে রয়েছে কোফতা কাবাব, হালিম, আস্ত তান্দুরি চিকেন, বিফ তেহারি, জিলাপি, বাসবুসা, খেজুর পুডিং। টাটকা ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হোম ডেলিভারির জন্য ফুডপান্ডা ও পাঠাওয়ের মাধ্যমে অনলাইনে অর্ডারের সুবিধা রাখা হয়েছে।
পেনিনসুলা চিটাগংয়ের জেনারেল ম্যানেজার সুমেধা গুণবর্ধন বলেন, ‘আমাদের এক্সিকিউটিভ শেফ মিলরয় নানায়াক্কারা ও তার পেশাদার শেফ টিমের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা মজাদার ও আকর্ষণীয় ইফতার গ্রাহকদের অন্যতম পছন্দ। আমরা সবসময় ইফতারে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। এবার আমরা শতাধিক মেন্যু রেখেছি, যা অতিথিরা উপভোগ করতে পারবেন।’
পেনিনসুলার হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও নগরবাসীকে ভিন্ন স্বাদের আমেজ দিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খাবারের নিত্যনতুন আইটেম আর আকর্ষণীয় শতাধিক পদের রাজকীয় ইফতারের আয়োজন করেছে হোটেল দি পেনিনসুলা। রাখা হয়েছে ইফতারের নানা প্যাকেজও। যেখানে মিলছে একটি কিনলে একটি ফ্রি অফার। ফলে ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার দিয়েও এসব খাবার উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহকরা। এ ছাড়া রাজকীয় ইফতার আয়োজন নিয়ে চলছে ‘রমজান ইফতার ফিস্ট’।’
হোটেলটির সিনিয়র ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পেনিনসুলার বিশেষ ইফতার আয়োজনে রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৫০ টাকায় ট্র্যাডিশনাল প্ল্যাটার, ১ হাজার ৪০০ টাকায় কন্টিনেন্টাল প্ল্যাটার ও ১ হাজার ৭৫০ টাকায় পেনিনসুলা প্ল্যাটার, যা পেনিনসুলার অভ্যন্তরীণ আউটলেটে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে উপভোগ করা যাবে। ২৩০০ টাকায় ওজন প্ল্যাটার উপভোগ করা যাবে পেনিনসুলার ওজন লাউঞ্জে। ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে কর্পোরেট ইফতার বক্স এবং ৯৫০ টাকা থেকে ব্যাঙ্কুয়েট ইফতার প্যাকেজের সুবিধাও দিচ্ছে পেনিনসুলা।’
পেনিনসুলার লেগুনা ও সিরাস স্কাই ডাইনিংয়ে জনপ্রতি ৪২০০ টাকায় ইফতার ও ডিনার বুফে উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা। নির্দিষ্ট কার্ডে ৪২০০ টাকায় বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি এবং ৬০০০ টাকায় বাই ওয়ান গেট থ্রি ফ্রি অফার রয়েছে। এছাড়া সেহরির জন্য, লেগুনা রেস্টুরেন্টে মাত্র ২০০০ টাকায় স্পেশাল বুফে উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা। নির্দিষ্ট কার্ডে ৪০০০ টাকায় বাই ওয়ান গেট থ্রি ফ্রি অফার রয়েছে সেহেরিতে। যে কেউ এসব মোবাইল নাম্বারে (০১৭৫৫৫৫৪৫৭৯, ০১৭৫৫৫৫৪৬২৪) যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিস্তারিত জানতে পারবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র উপভ গ করত য় ইফত র প রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
ছড়া লিখে কড়া শাস্তির মুখে ওয়াসা কর্মকর্তা
ছড়া লিখে কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন ঢাকা ওয়াসার কমন সার্ভিস বিভাগের উপসচিব শহিদুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে এবং উপব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার (প্রশাসন) দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম নিজের লেখা একটি ছড়া তাঁর ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। ছড়ার বিষয় ছিল রাজধানীর আলোচিত সেই ঈদ শোভাযাত্রার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, যিনি গাধার পিঠে উল্টো দিকে ফিরে বসেছিলেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই শোভাযাত্রা আয়োজন করে। হোজ্জারূপী ওই চরিত্রটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা হয়।
শহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘লেখালেখি পুরোনো অভ্যাস। এর দু-একটি ফেসবুকে শেয়ারও করি। ঈদের পর একটি ছড়া লিখে ফেসবুকে দিয়েছিলাম। হঠাৎ মঙ্গলবার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমাকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। সেখানে গেলে জিজ্ঞেস করেন, ছড়াটি আমার লেখা কিনা? হ্যাঁ-সূচক জবাব দিলে, কেন লিখেছি জানতে চান তিনি। আমি স্যারকে বলি, অভ্যাস থেকে মাঝেমধ্যে একটু-আধটু লেখালেখি করি। ছড়াটি বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে লিখিনি।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এর পর এমডি স্যার বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে কী লেখা যাবে, আর যাবে না– তা উল্লেখ রয়েছে। আমি বলি, স্যার, আমি তো কাউকে উদ্দেশ করে লিখিনি। ছড়াতে অপরাধ কী হয়েছে, তাও বুঝতে পারছি না।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে অফিস ছাড়ার সময় একটি অফিস আদেশ আমাকে দেওয়া হয়। সেখানে দেখি, আমাকে ওএসডি করা হয়েছে।’
ছড়া লেখায় কর্মকর্তাকে ওএসডি করার খবরে ঢাকা ওয়াসায় নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে তা গণমাধ্যমের নজরে আসে। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি চাকরি করে অনেকেই সাহিত্যচর্চা করছেন। অতীতে অনেক কবি-সাহিত্যিক সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে কবিতা, গল্প ও গান লিখেছেন। কিন্তু শহিদুল ইসলামের নিছক রসাত্মক ছড়াকে পুঁজি করে এমন শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি।
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবী কী লিখতে পারবেন, কী পারবেন না, সে নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। তাঁর লেখা ছড়ায় সে নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। ওয়াসা সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। দেখা যাক, কমিটি কী প্রতিবেদন দেয়।
ছড়ায় যা আছে
নাসিরুদ্দিন হোজ্জা
পেয়ো নাকো লজ্জা
ঘোড়ায় চড়িয়া তুমি হাঁটিয়া চলো
রসিকতায় শত কথা সত্যি বলো
গাঁধা নাকি ঘোড়া সে
কি করে কে বলে যে
গাঁধা হাঁটে চার পায়ে টগবগ
তোমার মত নয় সে অযথাই বকবক
কেউ বলে তুর্কি কেউ বলে ইরানী
কখনও কি স্বাদ পেলে সুলতানী বিরানী
ঈদ এলে হেঁটেছ কি মুঘলের ঢাকাতে
কাণ্ড কি ঘটিয়েছ অযথাই হাসাতে
বহুকাল বাদে আজ তুমি দেখা দিলে
ঢাক ঢোলের তালে তালে
গাঁধার পশ্চাতে মুখ করে চলিলে উল্টো
আজব এক ঈদ গেলো ঘটনাটি ভুল তো?
যাই হোক জানি কম নাসিরুদ্দিন হোজ্জা
এতে তুমি পেয়ো না গো এতটুকু লজ্জা।
শহিদুলের ছড়াটি পড়ার পর কবি মোহন রায়হান সমকালকে বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে লেখালেখি করার জন্য। বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, সমালোচনা সহ্য করতে পারেনি। ছড়াটিতে সরকারের সমালোচনা আছে বলে মনে হয়নি। বরং গাধার পিঠে নাসিরুদ্দিন হোজ্জাকে যে অবয়বে তুলে ধরা হয়েছে, তা জামায়াতের এক নেতার প্রতিকৃতি মনে হতে পারে।’
একসময় আবু করিম নামে এক কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখেছিলেন। পরে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের পিএস হয়েছিলেন। যদিও শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হলে আবু করিমকে চাকরিচ্যুত করেন।
মোহন রায়হান বলেন, ‘আমি মনে করি না শহিদুলের এ ছড়ার মধ্যে এমন কিছু আছে, যার জন্য তাঁর পেশাগত জীবনে কোনো শাস্তি আরোপ হতে পারে। বরং শাস্তি দিলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে।’